পুলিশের বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজেপি, শুভেন্দু-প্রিয়ঙ্কা বৈঠক সিদ্ধান্ত

ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ মামলায় সোমবারই হাই কোর্টে ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। এ বার একই অভিযোগে রাজ্যের অনেক পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। ভোটের পর থেকেই কর্মীদের উপরে অত্যাচার হচ্ছে এই অভিযোগে রাজ্যপাল থেকে প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এর পাশাপাশি বিজেপি যে আইনি পথেও বড় মাপের লড়াইয়ে নামতে চাইছে তা স্পষ্ট হয়ে যায় রবিবার দলের আইনজীবীদের সঙ্গে শুভেন্দুর বৈঠকেই। সেই বৈঠকে ছিলেন দলের অন্যতম আইনজীবী নেত্রী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। প্রসঙ্গত, সোমবার হাইকোর্ট যে জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে রাজ্যকে ভর্ৎসনা করেছে সেটিও বিধানসভা নির্বাচনে এন্টালির প্রার্থী প্রিয়ঙ্কারই করা।

রবিবার রাতে শুভেন্দু কলকাতায় প্রিয়ঙ্কা-সহ বিজেপি-র আইনজীবী শাখার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিজেপিসূত্রে জানা গিয়েছে, ভোট পরবর্তী সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে যে সব মামলা করা হয়েছে সেগুলির লড়াই দলই চালাবে। একই সঙ্গে বিজেপি-র দাবি, অনেক জায়গাতেই মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। যে সব পুলিশ অফিসার এই মামলা দিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধেই এ বার আইনি লড়াইয়ের পরিকল্পনা। তা নিয়েই রবিবার আইনজীবীদের পরামর্শ নেন শুভেন্দু। ঠিক হয়েছে, প্রিয়ঙ্কার নেতৃত্বেই বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার থেকে থানার আইসি-দের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা করা হবে। ইতিমধ্যেই যে সব পুলিশ কর্তা দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন বলে অভিযোগ তাঁদের তালিকা তৈরি করেছে বিজেপি।


ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন শুভেন্দু। নিজেএকা এবং বিধায়ক দল নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছেও গিয়েছেন তিনি। রবিবার সন্ধ্যাতেও তিনি ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করেন। এর পরেই হয় আইনজীবীদের নিয়ে বৈঠক। প্রিয়ঙ্কা জানিয়েছেন, ‘‘অনেক পুলিশ কর্তাই যে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন তার অনেক প্রমাণ রয়েছে আমাদের হাতে। কর্মীদের সঙ্গে অনেক অন্যায় হয়েছে। প্রত্যেকের নাম ধরে ধরে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। খুব তাড়াতাড়িই আদালতে যাব।’’ সোমবার হাইকোর্ট যে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে তার উল্লেখ করে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দল গঠনের বিরোধিতা করেছিল রাজ্য সরকার। আজ বিচারপতিরা তার নিন্দা করে বলেছেন, প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও গোড়া থেকে হিংসার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল রাজ্য। লিগ্যাল সার্ভিস রিপোর্টও রাজ্যের যুক্তির সঙ্গে মেলেনি। আমি জানি, এ বার রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে যাবে। একই সঙ্গে এ ব্যাপারেও আমি নিশ্চিত যে, সেখানে মুখ পুড়বে সরকারের। সত্যকে চাপা দেওয়া যাবে না।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.