‘মেরামতি’ বৈঠক ডাকল বিজেপি, দলের সব রাজ্য নেতাকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ

দলের বিপর্যস্ত চেহারা মেরামত করতে জরুরি বৈঠক ডাকল রাজ্য বিজেপি। আগামী মঙ্গলবার কলকাতার হেস্টিংসে দলের রাজ্য দফতরে রাজ্য স্তরের সব নেতাকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। গেরুয়া শিবির সূত্রের দাবি, ভার্চুয়াল নয়, সবাইকে সশরীরে হাজির থাকতে হবে বলে নির্দেশ গিয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরে এমন বৈঠক আগেও ডাকা হয়েছিল। তবে তাতে উপস্থিতি ছিল খুবই কম। এ বার যাতে তেমনটা না হয় দলের নেতাদের সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ইদানীং, রাজ্য বিজেপি নেতারা নিয়মিত যে বৈঠক করেন তার বেশিটাই হচ্ছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। এ বারও তেমন হতে পারে বলে প্রথমে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পরে ঠিকহয়, সকলে মুখোমুখি বসে কথা বলা হবে। রাজ্য বিজেপি-র এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, কারা আসছেন আর কারা নয় সেটাও দেখার জন্যই সামনাসামনি বসা হবে বলে ঠিক হয়েছে। ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্তদের পাশে দাঁড়াতে দলের সব নেতাকে ত্রাণে অংশ নেওয়ার নির্দেশ আগেই দেওয়া হয়। মঙ্গলবারের বৈঠকে সেই কাজ কেমন হয়েছে সেই রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে।

ভোটের ফল প্রকাশ্যে আসার পর থেকে বিভিন্ন জেলায় বিজেপি-তে ক্ষোভ বেড়েছে। ভোটের আগে প্রার্থী বাছাই নিয়ে যে ক্ষোভ শুরু হয়েছিল সেটাই যেন ফিরে এসেছে। অন্য দল থেকে বিজেপি-তে এসে যাঁরা প্রার্থী হয়েছিলেন তাঁদের অনেকেই দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন না। কে বিজেপি-তে থাকবেন আর কে থাকবেন না তা নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় বিজেপি নেতৃত্ব। এ সব নিয়ে ক্ষোভ তো আছেই সেই সঙ্গে দলের পুরনো কর্মীদের মধ্যে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বও মাথাচাড়া দিয়েছে। গত শুক্রবারই দলের সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে এমন বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলা সফর শুরু করেছেন। লকডাউন পরিস্থিতির কারণে লোকসভা এলাকা ধরে ধরে বৈঠক করছেন দিলীপ। দক্ষিণবঙ্গে বৈঠক হয়ে যাওয়ার পরেই মঙ্গলবার রাজ্য নেতাদের নিয়ে বসতে চলেছেন দিলীপ।

এর আগে গত ১৪ মে এমন একটি বৈঠক ডেকেছিল বিজেপি। সেই বৈঠকে গরহাজিরা ছিল উল্লেখযোগ্য ভাবে বেশি। বিজেপি-তে সাধারণ সম্পাদক পদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্যে মোট ৫ জন এই পদে রয়েছেন। এঁদের মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সঞ্জয় সিংহ এবং সায়ন্তন বসু। আসেননি জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো, লকেট চট্টোপাধ্যায়, রথীন বসু। রাজ্য বিজেপি-তে সহ সভাপতি রয়েছেন ১২ জন। তাঁদের মধ্যে জনা চারেক হাজির ছিলেন শুক্রবারের বৈঠকে। ছিলেন না পরিচিত মুখ ভারতী ঘোষ। ১০ জন রাজ্য সম্পাদকের অনেকেই ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। এ বার যাতে সেটা না হয়, তা নিশ্চিত করতে রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্ব কড়া মনোভাব দেখাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন এক বিজেপি নেতা।


রাজ্য বিজেপি-র এই ধরনের বৈঠকে সাধারণত কোনও কেন্দ্রীয় স্তরের নেতা উপস্থিত থাকেন। ১৪ মে হওয়া বৈঠকেও ছিলেন অন্যতম সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তরুণ চুঘ। তবে এখনও পর্যন্ত যা খবর তাতে, মঙ্গলবার কোনও কেন্দ্রীয় নেতা বৈঠকে থাকছেন না। দিলীপ ছাড়াও থাকবেন রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও থাকার কথা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.