২১ এ বিজেপির পাখির চোখ বাংলা! আর সেই লক্ষ্যেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপি নেতারা। বাংলা দখলে একেবারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে অমিত শাহের কোর টিম! তবে বিজেপি নেতাদের নিশানায় মুখ্যমন্ত্রী ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন্দ্র হোক কিংবা রাজ্যে বিজেপি নেতাদের আক্রমণের নিশানায় এখন ‘ভাইপো’! ইতিমধ্যে বাংলায় এসে অভিষেকের গড় ডায়মন্ডহারবার ঘুরে গিয়েছেন বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা।
সভা করেছেন। এবার সেখানেই ঝড় তুলতে চলেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, ১৮ জানুয়ারি, সোমবার ডায়মন্ড হারবারের বিষ্ণুপুরে হবে এই রোড–শো। আর তা শেষে হতে পারে একটি পথসভা। খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড় হিসাবে পরিচিত ডায়মন্ডহারবারে শোভন বৈশাখীর সভা রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
কারণ গত কয়েকদিন আগেই গোলপার্কে শোভনের ফ্ল্যাটে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার। ছিলেন ডায়মন্ডহারবারের আরও এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা! দীপক হালদারের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বেড়েছে।
গত কয়েকদিন আগে অভিষেকের সভাতেও বিধায়ককে দেখা যায়নি। শুধু তাই নয়, বারবার দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। কখনও প্রকাশ্যে তো কখনও সোশ্যাল মিডিয়াতে। আর এর মধ্যেই শোভনের সঙ্গে বৈঠক! আর এরপরেই ডায়মন্ডহারবারের বুকে শোভনের রোড শো!
রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিকমহল। এমনকি, রাজনৈতিকমহলের একাংশের মতে, রোড শো শেষে শোভনের হাত ধরেই হয়তো বিজেপিতে নাম লেখাতে পারেন দীপক হালদার। নাম লেখাতে পারেন একাধিক তৃণমূল নেতাও।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ টালবাহানা শেষে সোমবার গোলপার্ক থেকে সেলিমপুর থেকে রোড শো করেন কলকাতার পর্যবেক্ষক শোভন চট্টোপাধ্যায়। আর তখনই তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে আমার যন্ত্রণা হয়। কেন এত বছর পর এই সব প্রকল্প করে ভোট চাইতে হচ্ছে। কেন সিবিআই হানা দিচ্ছে? কে এনামুল? জবাব দিতেই হবে।’
অপরদিকে, দীর্ঘ টালবাহানার পর বৈশাখী বলেন, ‘আমরা বিজেপির ওপনিং ব্যাটসম্যান। আমরা সুন্দর জুটি। মানুষের কাছে যাওয়ার উদগ্রীব বাসনা ছিল আমাদের। মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কুৎসা না করে যদি কাজ করেন, তাহলে বাকি মেয়াদটুকু টিকবেন। নাহলে তার আগেই নবান্ন থেকে টেনে নামিয়ে দেবেন।’
বৈশাখীর সঙ্গে জুটি নিয়ে নিয়ে বিজেপি নেতা শোভন বলেন, ‘আমরা পরস্পরের পরিপূরক। আমরা বন্ধু। বিশ্বাস নিয়ে চলি।’ পালটা বৈশাখী বলেন, ‘বন্ধুত্ব আমাদের বাড়িতে রয়েছে। শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে আমার বস। আর বস ইস অলওয়েজ রাইট।’
বলা প্রয়োজন, শোভন-বৈশাখীর জন্য রোড শো’র আয়োজন করা হয়েছিল এর আগেও। যদিও সেটা ছিল শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ‘গ্র্যান্ড লঞ্চিং’। তিন বছর পর শেষমেশ বিজেপির হয়ে পথে নামার ‘প্রতিশ্রুতি’ দিয়েও সেই মিছিলে যাননি শোভন। চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল বিজেপিকে। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় যাবেন না বলে সেই মিছিল এড়িয়ে যান শোভনও। প্রকাশ্যে না বললেও শোভনের উপর বেজায় ক্ষেপে গিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এমনকী দলের রাজ্য দফতরে শোভন-বৈশাখীর ঘরে তালাও পড়ে যায়। রাজনৈতিক মহল প্রায় ধরেই নিয়েছিল, এবার শোভনের সঙ্গে বিজেপির বিচ্ছেদ পাকা। কিন্তু তখনই আবার খেলা ঘুরে যায়। রাজপথে নামার ঘোষণা করেন।