স্বপ্ন ছিল রাজ্য দখলের। কিন্তু থেমে যেতে হয়েছে ৭৭ আসনে। যদিও সব মিলিয়ে রাজ্যে এখন বিজেপির বিধায়ক ৭৪। মুকুল রায় চলে গিয়েছেন তৃণমূলে। নাহলে সংখ্যাটা হত ৭৫। এহেন পরিস্থিতিতে বিধানসভার অন্দরে দলবল নিয়ে সরকারকে একেবারে ঘিরে ধরার পরিকল্পনা নিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রীতিমতো ‘গেরিলা’ আক্রমণের মতো করেই সরকারকে চাপে রাখার কৌশল নিতে চলেছে গেরুয়া শিবির। আর সেই কৌশলের কিছুটা দেখা গিয়েছে বিধানসভা অধিবেশনের শুরুর দিনই। রাজ্যপালের ভাষণের সময় তুমুল বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা। সাড়ে তিন মিনিটের মধ্যেই ভাষণ থামিয়ে দেন রাজ্যপাল। এরপর শনিবারই বিধায়কদের নিয়ে ক্লাসে বসেন দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে নানান নির্দেশের পাশাপাশি নতুন বিধায়কদের জন্য ড্রেসকোড নির্ধারন করে দেন বিরোধী দলনেতা।
বিধানসভার জন্য নির্দিষ্ট পোশাক! বিজেপি সূত্রের খবর, শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশ তেমনই। সূত্রের খবর, সাদা পাজামা, পাঞ্জাবির সঙ্গে গলায় গেরুয়া উত্তরীয় পরেই বিজেপির নবনির্বাচিত বিধায়করা বিধানসভায় যোগ দেবেন। পাশাপাশি তাঁদের সবার কপালে থাকতে হবে গেরুয়া তিলক। বিজেপির মহিলা বিধায়কদেরও কপালে গেরুয়া তিলক লাগিয়ে আসার কথা জানানো হয়েছে। বিধানসভার প্রথম দিন তেমনই অবশ্য ইঙ্গিত মিলেছিল। তবে, তিলক লাগানোর বিষয়টি নির্দেশ হিসেবে দেওয়া হয়নি। এবিষয়ে শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য, ‘গেরুয়া রঙ সনাতন ভারত এবং স্বামী বিবেকানন্দের প্রতীক।’
বিজেপির সূত্রে খবর, শুধু প্রথম দিনের জন্যই নয়, আগামী দিনগুলোতেও একই পোশাক পরে বিধানসভায় যাবেন বিজেপি বিধায়করা। বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে এই প্রথমবার বিজেপি এত বিধায়ক নিয়ে বিধানসভায় হাজির হয়েছে। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের তকমাও পেয়েছে তাঁরা। সেই কারণে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিধানসভায় সোচ্চার হতে কোনও কিছুই বাকি রাখছে না বিজেপি। বিধানসভার অধিবেশনের প্রথম দিনই ওয়েলে নেমে তুমুল বিক্ষোভ বিজেপির বিধায়করা। সেই বিক্ষোভ যে ক্রমেই বাড়বে, তাও প্রায় স্পষ্ট। এরই মধ্যে বিধায়কদের জন্য নতুন ড্রেসকোড নিয়ে চর্চা সর্বস্তরে।
এরই মধ্যে শনিবার বিধায়কদের ক্লাস নিলেন দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীরা৷ কিন্তু সেই ক্লাসেই অনুপস্থিত থাকলেন মোট ৬জন বিধায়ক৷ এর মধ্যে একমাত্র বিষ্ণুপুরের বিজেপি বিধায়ক তন্ময় ঘোষের অনুপস্থিতির কারণ জানা গেলেও বাকি পাঁচ জন কেন প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশ নিলেন না, তার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়৷ দার্জিলিংয়ের বিধায়ক ধীরজ তামাং জিম্বা, পুরুলিয়ার সন্দীপ কুমার মুখোপাধ্যায়, বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, কুলটির বিধায়ক অজয় কুমার পোদ্দার এবং ভাটপাড়ার বিধায়ক পবন সিং শনিবারের বৈঠকে উপস্থিত হননি৷ যা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরেও।