নিশীথকাণ্ডে অভিযোগ জানিয়ে এ বার অমিত শাহকে চিঠি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে দিনহাটায়, এমনটাই অভিযোগ বিজেপির। সেই অভিযোগকে কেন্দ্র করে এ বার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি পাঠালেন বিরোধী দলনেতা। রবিবার সকালে ইমেল মারফত শাহের দফতরে চিঠিটি পাঠিয়েছেন তিনি। সেখানে শুভেন্দু রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারির পক্ষে সওয়াল করেছেন। ওই দিনই একই সুরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘‘এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে ৩৫৬ ধারা জারির দাবি করতে বাধ্য হব।’’
নন্দীগ্রামের বিধায়ক বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত, ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে পুলিশের ক্ষমতা অবিলম্বে নিয়ে নেওয়া উচিত।’’ এর পরেই তিনি আরও বলেন, ‘‘আজ (রবিবার) সকালেই আমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মেল করে জানিয়েছি, আপনি অন্তত দিনহাটা পুলিশ স্টেশনের ক্ষমতা নিয়ে নিন ৩৫৫ ধারা প্রয়োগ করে। কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠান। কারণ শনিবার সন্ধ্যা থেকে ওখানে অনেক বাড়ি পুড়িয়েছে, লুট করেছে।’’
শনিবার দিনহাটার বুড়িরহাট এলাকায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথের কনভয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর সংঘর্ষে জড়ায় তৃণমূল এবং বিজেপি। দুই দলই একে অপরের বিরুদ্ধে বোমাবাজি, গুলি চালানো, তির ছোড়ার অভিযোগ করেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ দাবি করেছেন, তাঁর গাড়ির কাচ ভেঙে দিয়েছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। পাল্টা নিশীথের উপরই এই ঘটনার দায় চাপিয়েছে তৃণমূল। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহের অভিযোগ, ‘‘এই হামলা পূর্ব পরিকল্পিত।’’ ঘটনায় মোট ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিশীথের পক্ষ নিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘জঙ্গলের রাজত্ব চলছে বাংলায়। অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে পুলিশের ক্ষমতা নিয়ে নেওয়া। মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে বসে থাকুন। ২০২৬ সালেই ওঁকে হারাব। আমি একজন নাগরিক ও বিধায়ক হিসেবে বলছি, যে রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান, এমন একজন ব্যক্তির যখন কোনও নিরাপত্তা থাকে না তখন সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?’’
নিশীথ অবশ্য বিষয়টি রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
শুভেন্দু বলেন, ‘‘একজন বিধায়ককে মিথ্যা মামলায় আটকে রাখা হয়েছে। আমি তত্ত্বগত ভাবে নওশাদ সিদ্দিকিদের পার্টির সমর্থক নই। তাঁদের বক্তব্যের সমর্থকও আমি নই। কিন্তু একজন সন্মাননীয় বিধায়ককে গত দেড় মাস ধরে বিনা কারণে জেলে রাখা হয়েছে।’’ বিরোধী দলনেতা জানিয়েছেন, সোমবার সকালেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নিরাপত্তা ও তাঁর ওপর হামলার বিষয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন।