আজ শুভেন্দু অধিকারীর মনোনয়ন পেশ। মমতার স্টাইলেই তাঁর মনোনয়ন পেশ করতে চলেছেন শুভেন্দু। মন্দিরে পুজো দিয়ে আগের রাজনৈতিক শিক্ষগুরুকে পরাজিত করার শপথ আজ অফিসিয়ালি নেবেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই বলা চলে আজই শুভেন্দু সরকারিভাবে মমতার বিরুদ্ধে ভোটযুদ্ধে নামতে চলেছেন।
তবে প্রশ্ন একটাই, শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি কাঁথিতে। তিনি নিজেকে নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র বলে দাবি করছেন। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বর্তমান বাড়ি কালীঘাট হলেও তাঁর আদিবাড়ি বীরভূমে। তিনিও বলছেন নন্দীগ্রাম আমার জায়গা। ভুলতে পারি নিজের নাম ভুলবোনাকো নন্দীগ্রাম। এই আবহে বিজেপি ও তৃণমূল পরস্পর পরস্পরকে বহিরাগত বলে দাবি করছে।
শুভেন্দুর মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রাম শিব মন্দিরে পুজো দেন শুভেন্দু অধিকারী। আজ হলদিয়া মহকুমা শাসকের দফতরে শুভেন্দু মনোনয়ন জমা দেবেন। তার আগে আবার নন্দীগ্রামে পুজো দিতে আসার কথা রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর।
নন্দীগ্রামে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে জেপি পি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী নিজেই নিজের জয়ের ঝুঁকি বাড়িয়ে নিয়েছেন। রাজনৈতিক মহল বলছেন, শুভেন্দু প্রথমত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আধ লাখ ভোটে পরাজিত করতে না পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবো বলে প্রথম চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। দ্বিতীয়ত তিনি শুধু হিন্দু ভোটের ভরসায় জয়ের স্বপ্ন দেখছেন। অর্থাৎ নন্দীগ্রামে জয় পেতে হলে মমতাকে যেখানে ১০০ তে ৫১% ভোট পেলেই হবে সেখানে শুভেন্দুকে ৭০ এর মধ্যে ৫১% ভোট পেতে হবে। তারপর শুভেন্দু যার বিরুদ্ধে লড়ছেন তিনি অন্য কেউ নয়, স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই শুভেন্দুর এবারের নন্দীগ্রামের লড়াই ২০১৬-র নন্দীগ্রামের লড়াইয়ের চাইতে আলাদা।
এদিকে এটা ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই বিনা যুদ্ধে তৃণমূল বিজেপিকে নন্দীগ্রমের জমি ছেড়ে দেবে। নন্দীগ্রামের তৃণমূল সংগঠনে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছাড়ার পর তেমন ভাবে ভাঙন হয়নি। সেখ সুফিয়ান, অখিল গিরি একাধিকবার সে কথা বলেছেন। কাজেই তাঁরা প্রত্যয়ী, বলছেন মমতার নন্দীগ্রামে জয় হবেই।
নন্দীগ্রাম আন্দোলনের পীঠভূমি। নন্দীগ্রাম মনতাকে সরকারে আনার সহায়ক ছিল। নন্দীগ্রাম শুভেন্দু অধিকারীকে নেতা বানিয়েছে। নন্দীগ্রাম ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে সরিয়ে দিয়েছে এক লহমায়। এই ইতিহাসের সঙ্গে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচন নন্দীগ্রামের ইতিহাসে নতুন কী তথ্য যোগ করে সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২ মে পর্যন্ত।