শুক্রবার দুপুরবেলা কামারহাটি পুরসভায় (Kamarhati Municipality) তখন সবাই কাজে ব্যস্ত। পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে কাজ করছেন শ্বেতা চক্রবর্তীও (Shweta Chakraborty)। আচমকাই সেই বিভাগে ঢুকে পড়েন মদন মিত্র (Madan Mitra)। গলায় লাল গোলাপের মালা, মাথায় ফেজ টুপি।
সোজা শ্বেতার টেবিলের সামনে এসে মদন জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমার নাম শ্বেতা?’ উত্তরে শ্বেতা হাল্কা ঘাড় নেড়ে ‘হ্যাঁ’ বলেন। তারপরই মদনের প্রশ্ন, ‘তোমার বাড়ি কোথায়?’ উত্তরে শ্বেতা বলেন, ‘নৈহাটি’। রাজনীতিতে এই সামান্য কথোপথনই উত্তেজনার পারদ বাড়াতে যথেষ্ট।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছিল অয়ন শীল ঘনিষ্ঠ শ্বেতা চক্রবর্তীর। নৈহাটির বাসিন্দা শ্বেতা কামারহাটি পুরসভার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে কাজ করেন। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর নাম সামনে আসতেই কাজে আসা বন্ধ করে দিয়েছিলেন শ্বেতা। পুরসভার কেউই জানতেন না কেন তিনি অনুপস্থিত। তবে বৃহস্পতিবার পুরসভায় কাজে যোগ দেন শ্বেতা। শুক্রবারই শ্বেতার সঙ্গে মদনের দেখা করার পিছনে কোনও ‘রাজনৈতিক অভিসন্ধি নেই তো’ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিতে অয়নের অফিসে তল্লাশি চালায় ইডি। সেখান থেকেই এমনকিছু তথ্য মিলেছে যেখানে শ্বেতার নাম পাওয়া গেছে বলে ইডির দাবি। তাদের বক্তব্য, শ্বেতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আর্থিক লেনদেন হয়েছে। তাঁর অ্যাকাউন্টে মোট ২৫ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে শ্বেতার যোগ রয়েছে কিনা তা এখনও তদন্ত সাপেক্ষ।
ইডির দাবি, পুরসভার চাকরিতেও দুর্নীতি হয়েছে। পরীক্ষার ওএমআর শিট জালিয়াতি হয়েছে। তারপরই অনেকে আশঙ্কা করে এবার কি পুরকর্মীদেরও চাকরি যাবে? এদিন মদন ফের একবার কামারহাটির পুরকর্মীদের পাশে দাঁড়ালেন। তাঁদের উদ্দেশে বললেন, ‘বাম জমানায় চিরকুটে চাকরি হয়েছে। অনেকেই চাকরি পেয়েছিলেন। যাঁরা ধর্না দিচ্ছেন তাঁদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। আমরা চাই, যাঁরা যোগ্য প্রার্থী তাঁরা চাকরি পাক। তা বলে তৃণমূলের যোগ্য প্রার্থীরা চাকরি পাবে না?’