প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর ভারত। চিনের আগ্রাসন কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না, তা সাফ করে, শুক্রবার সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নারাভানে ও চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রওয়াতের সঙ্গে লেহ পৌঁছলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajnath Singh)।

সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, দু’দিনের সফরে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখে ভারতীয় সেনার ফরওয়ার্ড পোস্টগুলিতে যান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। এদিন, লেহর স্তাকনা ফরওয়ার্ড বেসে জওয়ানদের বিমান থেকে প্যারাশুট বেঁধে নামার মহড়া দেখেন রাজনাথ। পাশাপাশি, সীমান্তে সৈনিকদের অস্ত্রশস্ত্রগুলিও হাতে নিয়ে পরখ করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। সেনার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখে শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি। চলতি মাসের শুরুর দিকেই লাদাখ সফরে যাওয়ার কথা ছিল রাজনাথ সিংয়ের। তবে সেই সফর পিছিয়ে দেওয়া হয়। তার জায়গায় জুলাই মাসের ৩ তারিখ লাদাখ যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। রাজনাথের লাদাখ সফর পরোক্ষে চিনকে বার্তা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (LAC) চিনের সঙ্গে চলা টানাপোড়েনের মধ্যেই গতকাল, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব সাফ জানিয়ে দেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে ভারতের অবস্থান বিন্দুমাত্র বদলায়নি। একতরফা ভাবে সেখানে স্থিতাবস্থা বদলের কোনও চেষ্টাই মানা হবে না।

এদিকে, কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে কয়েক দফা আলোচনার পর লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণেরখা বরাবর কিভাবে ধাপে ধাপে সেনা অপসারণ হবে তা নিয়ে আগামী দিনের রোডম্যাপ তৈরি করেছে দুই দেশ। সীমান্তে শান্তি ফেরাতে সেনা অপসারণ প্রক্রিয়া এবং সেনা পর্যায়ের বৈঠক চালু রাখতে রাজি হয়েছে চিনও। ফলে এদিনের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলা যেতে পারে। এক সেনা অফিসার জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার সকাল এগারটা থেকে বৈঠক শুরু হয় ভারতের চুশুল এলাকায়। যোগ দেন দুই তরফের উচ্চপদস্থ জেনারেলরা। রাত ন’টা পর্যন্ত বৈঠক চলে। এখন দেখার বৈঠকের ফলাফল কিভাবে জমিতে কার্যকর করে চিনা সেনা। সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

সেনা সূত্রের খবর চিনা সেনা বাহিনী পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ১৫৯৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রীতিমত আগ্রাসী ভূমিকা নিচ্ছিল। তবে এখন সেখানে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। পূর্ব লাদাখ সীমান্তের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে চিনা সেনা সরে গেলেও এখনও পর্যন্ত সীমান্ত উত্তাপ পুরোপুরি প্রশমিত হয়নি। কারণ প্যাংগং লেক এলাকার উত্তর পাড়ে চার থেকে আট নম্বর ফিঙ্গার পয়েন্ট পর্যন্ত ভারতীয় সেনার নো-এন্ট্রি করে রেখেছে পিএলএ। টহলদারি চালাতে পারছে না ভারতীয় সেনা। দেপসাং উপত্যকায় দুই দেশের সৈন্যরা এখনও পর্যন্ত খুব কাছাকাছি রয়েছে। ওই এলাকাগুলিতে থেকে সেনা অপসারণের জন্যই এদিন বৈঠক করা হয়। দেপসাং এলাকা ও প্যাংগং লেকের ফিঙ্গার পাঁচ থেকে আট পর্যন্ত চিনের সেনা প্রত্যাহার নিয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.