সোমবার সকালে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক সঙ্গে শপথ বাক্য পাঠ করে মন্ত্রী হয়েছেন ৪৩ জন বিধায়ক। তার পর দুপুরের মধ্যেই মন্ত্রিসভার দফতর বণ্টন করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
তাতে সব থেকে বড় চমক হল শিক্ষা দফতর থেকে সরিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হল। সেই সঙ্গে তথ্য ও প্রযুক্তি দফতর ও সংসদ বিষয়ক দফতরের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। অনেকের মতে এটা নিঃসন্দেহে দলের মহাসচিবের পদোন্নতি বটে। আর শিক্ষা মন্ত্রী করা হল ব্রাত্য বসুকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম মন্ত্রিসভায় শুরুতে এই ব্যবস্থাই ছিল। তখনও শিল্প মন্ত্রী ছিলেন পার্থবাবু। আর ব্রাত্য ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রী। এবার সেই ব্যবস্থায় ফেরালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রইল স্বরাষ্ট্র ও পাহাড় বিষয়ক দফতর, কর্মিবর্গ দফতর, স্বাস্থ্য দফতর, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর, তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর।
রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের পত্তন হওয়ার পর থেকে পঞ্চায়েত মন্ত্রী ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এবারও তাঁর দফতর বদল হয়নি। তবে তাঁকে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ও শিল্প পুনর্গঠন দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী যে অমিত মিত্রকেই অর্থমন্ত্রী পদে চান তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কারণ, অমিতবাবু এবার ভোটে না লড়লেও তিনি শপথ নিয়েছেন। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায় যে প্রাক্তন এই ফিকি কর্তাই ফের অর্থমন্ত্রী হতে চলেছেন। হয়েছেও তাই।
তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যেমন পদোন্নতি হয়েছে তেমনই মন্ত্রিসভায় আপাত দর্শনে গুরুত্ব কমেছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। আগে খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রী ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু। এবার তাঁকে বন ও অচিরাচরিত শক্তি উৎস্য দফতরের মন্ত্রী করা হয়েছে। ক্রেতা সুরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন সাধন পাণ্ডে। তাঁর দফতর বদল হয়নি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম মন্ত্রিসভায় শরিক দল কংগ্রেস থেকে সেচ মন্ত্রী ছিলেন মানস ভুইঞাঁ। তিনি এখন তৃণমূলের মন্ত্রী। মানসবাবুকে এ বার জল অনুসন্ধান দফতরের মন্ত্রী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আবার কিছুটা হলেও মন্ত্রিসভায় ওজন কমেছে অরূপ বিশ্বাসের। আগের মন্ত্রিসভায় পূর্ত ও ক্রীড়়া এবং যুবকল্যাণ মন্ত্রী ছিলেন অরূপ বিশ্বাস। এবার তাঁকে বিদ্যুৎ এবং ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ মন্ত্রী করা হয়েছে।
পূর্ণ মন্ত্রী কে কোন দফতর পেলেন তা এই রকম—
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় – মুখ্যমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্র ও পাহাড় বিষয়ক দফতর, কর্মিবর্গ দফতর, স্বাস্থ্য দফতর, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর, তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়—শিল্প ও বাণিজ্য। তথ্য ও প্রযুক্তি। সংসদ বিষয়ক।
অমিত মিত্র- অর্থ, যোজনা ও পরিসংখ্যান।
সাধন পাণ্ডে- ক্রেতা বিষয়ক। স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক—বন, অচিরাচরিত শক্তি উৎস্য।
বঙ্কিম চন্দ্র হাজরা- সুন্দরবন বিষয়ক।
মানস ভুইঞাঁ—জল অনুসন্ধান।
সৌমেন মহাপাত্র—সেচ ও জল পরিবহণ।
মলয় ঘটক—আইন ও বিচার ব্যবস্থা, পূর্ত দফতর।
উজ্জ্বল বিশ্বাস—কারা দফতর।
অরূপ বিশ্বাস—বিদ্যুৎ, ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ।
অরূপ রায়—সমবায়
রথীন ঘোষ—খাদ্য ও গণবন্টন।
ফিরহাদ হাকিম—পরিবহণ ও আবাসন।
চন্দ্রনাথ সিনহা—ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং বস্ত্র।
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়—কৃষি
ব্রাত্য বসু—স্কুল শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষাপুলক রায়—জনস্বাস্থ্য কারগরী।
পুলক রায়—জনস্বাস্থ্য কারগরী।
শশী পাঁজা—মহিলা ও শিশু কল্যাণ।
গুলাম রব্বানি—সংখ্যালঘু উন্নয়ন।
বিপ্লব মিত্র—কৃষি বিপণন।
জাভেদ আহমেদ খান—বিপর্যয় মোকাবিলা।
স্বপন দেবনাথ—প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন।
সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী—মাস এডুকেশন ও লাইব্রেরি।
স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী
বেচারাম মান্না—শ্রম
সুব্রত সাহা—খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হর্টিকালচার।
হুমায়ুন কবীর—টেকিনিক্যাল এডুকেশন, প্রশিক্ষণ ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট।
অখিল গিরি—মৎস্য চাষ।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য—নগরোন্নয়ন এবং পুর বিষয়ক। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য প্রতি মন্ত্রী।
রত্না নাগ—পরিবেশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং বায়ো টেকনোলজি।
সন্ধ্যারানী টুডু- পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন এবং সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।
বুলু চিক বরাইক—অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ, আদিবাসী উন্নয়ন।
সুজিত বসু—দমকল ও জরুরি পরিষেবা।
ইন্দ্রনীল সেন—পর্যটন।
প্রতি মন্ত্রী
দিলীপ মণ্ডল—পরিবহণ
আখরুজ্জামানা—বিদ্যুৎ
শিউলি সাহা—পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন
শ্রীকান্ত মাহাতো—ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং বস্ত্র
সাবিনা ইয়াসমিন—সেচ, জল পরিবহণ ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন
বীরবাহা হাঁসদা—বন
জ্যোৎস্না মান্ডি—খাদ্য ও গণ বন্টন
পরেশ চন্দ্র অধিকারী—স্কুল শিক্ষা
মনোজ তিওয়ারি— যুব ও ক্রীড়া