জল্পনা শেষ পর্যন্ত সত্যি হলো। রাজ্যসভায় বিজেপি প্রার্থী হচ্ছেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অনন্ত মহারাজ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক জানিয়েছেন, তাদের দেওয়া প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন অনন্ত মহারাজ।
একজন ইস্তফা দিয়েছেন বাকি ছয়জনের মেয়াদ শেষের মুখে। ২৪ জুলাই রাজ্যসভায় বাংলার ছয় আসনে ভোট হবে। মনোনয়ন পেশের কাজ চলছে। রাজ্যসভায় ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত। বস্তুত ওই ৫ আসনের প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করেছে শাসক দল। আর একটি আসন থাকবে বিজেপির দখলে। আর সেখানেই বাজিমাত করল পদ্ম শিবির বলে মনে করছেন অনেকে।
একদিকে যখন পঞ্চায়েত ভোটের গণনা ও ফল প্রকাশ চলছে সেই সময় কোচবিহারে চকচকা এলাকায় অনন্ত মহারাজের বাড়িতে যান নিশীথ প্রামানিক। প্রায় ৪০মিনিট বৈঠক হয় দুজনের। এদিকে পাহাড়ে এখনো বিজেপির সঙ্গেই রয়েছে জিএনএলএফ। তাদের সমর্থনে দার্জিলিংয়ে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট জিতেছে পদ্ম। এবার অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভার প্রার্থী করে তৃণমূলের বারা ভাতে ছাই ফেলার সুযোগ করে নিল বিজেপি, বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
গত বছর অনন্ত মহারাজকে ভাইফোঁটার উপহার পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই উপহার নিয়ে কোচবিহারের বাড়িতে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও পরমানন্দ দাস। মুখ্যমন্ত্রী পাঠানোর উপহার গ্রহণ করে তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন গ্রেটার কোচবিহারের নেতা। তবে শুধু উপহার গ্রহণ করাই নয়, পাল্টা উপহারও পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর জন্য তিনি। যদিও সেই উপহার বিনিময়েকে শুধুমাত্র সৌজন্য সাক্ষাৎ বলেই দাবি করেছিলেন তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কিন্তু রাজনৈতিক মহলে গুনগুন শোনা গিয়েছিল আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে অনন্ত মহারাজের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতেই এই পদক্ষেপ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
কিন্তু এত কিছুর মাঝেই অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভার প্রার্থী করে মোক্ষম চাল দিয়ে দিল বিজেপি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বড় অংশ। পরিসংখ্যান বলছে, কোচবিহার গ্রাম পঞ্চায়েত ২০১৮ সালের নির্বাচনের চেয়ে অনেকটা ভালো ফল করেছে বিজেপি। তারপর আবার অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভার প্রার্থী করে লোকসভা নির্বাচনে সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলো পদ্ম শিবির বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।