নবান্নে যখন প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠক করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন হেস্টিংসে বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠক চলছিল। সেখানেই বিরোধী দলনেতা হিসেবে চূড়ান্ত হয় শুভেন্দু অধিকারীর নাম। তারপর শুভেন্দু জানিয়ে দিলেন, দু’কোটি ২৭ লক্ষ মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে শিষ্টাচার মেনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই করবেন তিনি।
এদিন নন্দীগ্রামের বিধায়ক বলেন, “আমি ৭৭ জনের প্রতিনিধি নই। যে দু’কোটি ২৭ লক্ষ মানুষ বিজেপির পদ্মফুল চিহ্নে ভোট দিয়েছেন তাঁদের প্রতিনিধি হিসেবেই আমি বিধানসভায় লড়াই করব। শিষ্টাচার মেনেই বাংলায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই চলবে।”
তাঁর কথায়, “গোটা রাজ্যজুড়ে রণসংঘর্ষ চলছে। প্রান্তিক আদিবাসী, দলিত, পিছিয়ে পড়া মানুষের সর্বস্ব লুঠ হচ্ছে। এখন প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে এই সংঘর্ষ থামানো।” বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তিনি অভিযোগ করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার একটা দলের জন্য। ফর দ্য পার্টি, বাই দ্য পার্টি, অফ দ্য পার্টি। তাকে ফর দ্য পিপল, বাই দ্য পিপ, অফ দ্য পিপল করতে বিজেপি পরিষদীয় দল লড়াই করবে বলে জানান তিনি।
এদিন বিজেপি পরিষদীয় দলের বৈঠকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে শুভেন্দু অধিকারীর নাম প্রস্তাব করেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়। সর্বসম্মতিক্রমেই শুভেন্দুর নাম নির্বাচিত হয় বৈঠকে। ৭৭ জন বিধায়ক হলেও ৫২ জন এদিন উপস্থিত ছিলেন। ২৫ জনের অনুপস্থিতির বিষয়ে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, বেশ কিছু জায়গায় সংঘর্ষ চলছে। বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত। তাই সেই এলাকার বিধায়করা তাঁদের পাশে থাকার কারনে বৈঠকে যোগ দেননি। আর কয়েক জন বিধায়কের কোভিড হয়েছে।
গত শনিবার অধ্যক্ষ নির্বাচনের অধিবেশনে যোগ দেননি বিজেপি বিধায়করা। তবে সামনের অধিবেশনে বিধানসভার কক্ষে দাঁড়িয়েই সরকারের গঠনমূলক বিরোধিতা তাঁরা করবেন বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “যে বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমণ হচ্ছে তাতে করে শনিবার ওখানে গিয়ে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলার মানসিক অবস্থা আমাদের ছিল না।”
তবে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতা স্পষ্টই ইঙ্গিত দিয়েছেন, গণতান্ত্রিক পথে, শিষ্টাচার মেনে লড়াই জারি থাকবে। ২০০৬-এর উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “যখন ২৯ জন বিরোধী বিধায়ক ছিলেন, তখন আমি বিধানসভার সদস্য ছিলাম। ২৩৫- এর দম্ভ আমি দেখেছি। সেই পরিস্থিতি এখন নেই। আমার অঙ্গীকার হল, হিংসা মুক্ত বাংলা। শান্তির বাংলা প্রতিষ্ঠা করা। আমি একা নই। সবাই মিলেই তা করব।”