প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ইস্তফা চাওয়া কোনও পোস্ট বা হ্যাশট্যাগ সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়নি বলে তড়িঘড়ি জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। এ নিয়ে সরাসরি আমেরিকার সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে কাঠগড়ায় তুলেছে কেন্দ্র। বলা হয়েছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ‘দুষ্টুমি’ করা হচ্ছে। ভুল তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে।
করোনা সঙ্কট সামাল দেওয়ার ব্যর্থতার দায় ঘাড়ে নিয়ে মোদীকে পদত্যাগ করতে হবে বলে গত দু’দিন ধরে নেটমাধ্যমে দাবি উঠছে। বুধবার সকাল থেকে ফেসবুক এবং টুইটারে জনপ্রিয় হ্যাশট্যাগের তালিকায় একেবারে শীর্ষে রয়েছে #রিজাইনমোদী। কিন্তু বুধবার ঘণ্টা তিনেকের জন্য ওই হ্যাশট্যাগ এবং সেই সংক্রান্ত যাবতীয় পোস্ট আটকে দেয় ফেসবুক। তাতেই জল্পনা শুরু হয়, আমেরিকার সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-সহ দেশ-বিদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমও তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ফেসবুকের তরফে যদিও জানানো হয়, ভুলবশত ওই সংক্রান্ত পোস্ট এবং হ্যাশট্যাগ আটকানো হয়। ভুল বুঝতে পেরে পরে তা তুলে নেন তাঁরা।
তার পরেও এ নিয়ে আলোচনা বন্ধ হয়নি। তাতেই বৃহস্পতিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, ‘ফেসবুকে একটি হ্যাশট্যাগ সরানোর পিছনে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধস্বর দমনের অভিযোগ এনে যে প্রতিবেদন ছেপেছে ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল, সেই প্রতিবেদন বিভ্রান্তিকর এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে দুষ্টুমি করেই করা হয়েছে। ফেসবুক আগেই জানিয়েছে যে, ভুলবশত সেটি সরানো হয়েছিল। সরকার এ নিয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি’।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল আগেও এই ধরনের ভুয়ো খবর ছেপেছে বলেও অভিযোগ করে কেন্দ্র। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভারত ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং টুইটারের কর্মীদের জেলের ভয় দেখাচ্ছে শিরোনামে গত ৫ মার্চ একটি ভুয়ো খবর প্রকাশ করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। ভুল তথ্য দিয়ে সম্পূর্ণ মনগড়া কাহিনি ছাপা হয়েছিল তাতে। লিখিত জবাবে খণ্ডনও করেছিলাম আমরা’।
এ নিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের তরফে বৃহস্পতিবার দুপুরে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে এর আগেও মোদীর সরকার এবং ফেসবুক কর্তৃপক্ষের মধ্যে ‘গোপন আঁতাঁত’ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে তারা। তাদের অভিযোগ ছিল, ঘৃণা ভাষণ ছড়ানো হোক বা বিদ্বেষমূলক পোস্ট, বিজেপি নেতাদের প্রতি ফেসবুক বিশেষ ‘সদয়’। সেই নিয়ে সংসদীয় কমিটির সামনে হাজিরা দিতে হয় তৎকালীন ভারতে ফেসবুকে নীতি নির্ধারণ বিভাগের প্রধান আঁখি দাসকে। বিতর্কের জেরে শেষমেশ অক্টোবরে ফেসবুক থেকে পদত্যাগ করেন আঁখি।