নন্দীগ্রামে জয়ের বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী ১০০% প্রতয়ী । হলদিয়ায় শুক্রবার মনোনয়নপত্র জমা দেন শুভেন্দু অধিকারী। তার আগে হলদিয়ায় সভা করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “দল নন্দীগ্রামে আমায় মনোনীত করেছে। আমি আপনাদের পরিচিত। নতুন করে আমার পরিচয় দেওয়ার কিছু নেই। মাঠটা আমার চেনা।” শুভেন্দু এই কথার মধ্যদিয়ে বুঝিয়ে দেন তিনি নন্দীগ্রামের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে কতটা নিশ্চিত। অথচ ২০১৬ সালে এই নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়েই শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে নিজেকে জেতানোর জন্য স্লোগান দিয়েছিলেন। কারণ তখন শুভেন্দু অধিকারীই ছিলেন তৃণমূলে। আজ তিনি তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী।
শুভেন্দু অধিকারী এদিন বলেন, “আজ এখানে স্মৃতি ইরানি এসেছেন। তিনি শুধু একজন নেত্রী নন। তিনি আমেথিতে রাহুল গান্ধীকে পরাজিত করেছেন। তিনি আমাদের ঘরের বোন, দিদি।” অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবারও এদিন আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী।
এর পর শুভেন্দু অধিকারী ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গে ফিরে গিয়ে বলেন, “এই নন্দীগ্রামের আন্দোলনই বাংলায় বাম সরকারের পতন আনে। সরকার বদল করার সময় মানুষ অনেক আশা করেছিলেন। কিন্তু সেটা বাস্তব হয়নি। আজ ২০২১ সল্ । আমরা তৃণমূল ছেড়ে দিয়েছি। কারণ তৃণমূল এখন আর রাজনৈতিক দল নয়। তৃণমূল এখন একটা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। সম্মান নিয়ে কেউ তৃণমূলে থাকতে পারে না।ওটা এখন পিসি-ভাইপোর প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে।”
রাজ্যের কর্মসংস্থান, উন্নয়নের প্রশ্ন তুলে এদিন শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে তীব্র সমালোচনা করেন। বিজেপির নন্দীগ্রামের প্রার্থী বলেন, “রাজ্যে সরকারি শূন্য পদ ৫ লক্ষ । সেটা তুলে দিয়ে ১২ হাজার টাকার চুক্তিতে কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে। এই সরকারের তাই বদল দরকার। কেননা মানুষের চাকরি দরকার। বিজেপি সরকার এলেই সেটা সম্ভব হবে।”
কেন্দ্রের কৃষি প্রকল্পের টাকা রাজ্যের ৭৩ লক্ষ কৃষককে পেতে দেয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে তিন বছরের ১৮হাজার টাকা এক সঙ্গে দেওয়া হবে। আয়ুষ্মান প্রকল্পের সঙ্গে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের তুলনা করে রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পকে ভাওতা বলে সমালোচনা করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, কেউ স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা পেয়েছেন?”
এরপর রাজ্যে কেন বিজেপিকে সরকারে আসা জরুরি তার ব্যাখ্যা দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এই রাজ্যে উন্নয়ন করতে হলে ডাবল ইঞ্জিন সরকার লাগবে। তাহলেই রাজ্যে শিল্প আসবে। প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, রাজ্যের উন্নতি করতে হলে রাজ্যে ও কেন্দ্রে একই সরকার দরকার। কেন বেকাররা চাকরি পাবেন না? কেন চাকরির পরীক্ষা হবে না? কেন চিটফান্ডের টাকা ফেরত দেওয়া হবে না? মোদী সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় এলে সব সমস্যার সমাধান হবে। নন্দীগ্রেমে আমরাই জিতবো।”
শুভেন্দু অধিকারী এদিন বলেন, “নরেন্দ্র মোদী কাজ করেছেন সবই গর্ব করার মতো। বিজেপিকে বাইরের পার্টি বলছেন? বিজেপি-র প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী।”
এদিন শুভেন্দুর মনোনয়ন জমা দেওয়ার অনুষ্ঠানে কেন্দ্রিয়মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি , বাবুল সুপ্রিয়, ধর্মেন্দ্র প্রধান ছিলেন। স্মৃতি ইরানি বলেন, “দিদি তুমি ভবানীপুর নিয়ে অনেক খেলেছেন। মেয়েদের সম্মান নিয়ে অনেক খেলেছেন। এবার নন্দীগ্রামে টের পাবেন। আপনি পরাজিত হবেন।” ধর্মেন্দ্র প্রধান রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন।