লোকসভা ভোটের আগে গরিব ও পিছিয়ে পড়া মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও সাংসদদের এগিয়ে আসার পরামর্শ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত কাল রাতে নিজের বাসভবনে অমিত শাহ, দলীয় সভাপতি জেপি নড্ডা, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকে মন্ত্রিসভা ও সাংগঠনিক স্তরে রদবদলের বিষয় নিয়ে আলোচনা ছাড়াও আগামী লোকসভা ভোট পর্যন্ত দল কোন পথে এগোবে, সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিজেপি সূত্রের মতে, দলের মূল ভোটব্যাঙ্ক হল পিছিয়ে পড়া শ্রেণি, গরিব ও মধ্যবিত্ত সমাজ। এক দিকে তাঁদের জন্য গত নয় বছরে সরকার কী ধরনের উন্নয়নমুখী প্রকল্প হাতে নিয়েছে, তা বিশদ প্রচারে জোর দিয়েছেন মোদী। তেমনই যাঁরা আর্থিক ও সামাজিক মাপকাঠিতে এখনও পিছিয়ে, কী ভাবে তাঁদের জীবন উন্নত হতে পারে, তা নিয়ে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির প্রতিনিধিদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক, আলোচনাসভা করার জন্য মন্ত্রী ও সাংসদদের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘যত বেশি সম্ভব পিছিয়ে থাকা শ্রেণির কাছে পৌঁছনোর উপরে জোর দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। কেবল সাংসদই নয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদেরও পিছিয়ে থাকা শ্রেণির কাছে পৌঁছতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কী ধরনের প্রকল্পে কোনও একটি এলাকার মানুষের সার্বিক ভাবে উত্থান সম্ভব, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’’ তবে এ প্রসঙ্গে কংগ্রেসের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘সরকারের নয় বছর কেটে যাওয়ার পরে এখন গরিবদের কথা ভাবছে সরকার। এর চেয়ে হাস্যকর কী হতে পারে! সরকারের উচিত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা।’’
দেশের ৫৪৩টি লোকসভা কেন্দ্রকে আলাদা করে চিহ্নিত করে প্রত্যেকটির জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে এগোনোর ব্যাপারেও গত কালের বৈঠকে আলোচনা হয়। প্রাথমিক ভাবে দেশের ৫৪৩টি আসনকে তিনটি জ়োনে ভাগ করা হয়েছে। উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ। সূত্রের মতে, ওই তিনটি জ়োনের দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আগামী ৬-৮ জুলাই আলাদা করে বৈঠকে বসতে চলেছেন দলীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বিজেপিশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, রাজ্য সভাপতি, রাজ্য সংগঠনের শীর্ষ পদাধিকারী ও জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যরা। প্রথম বৈঠকটি হবে ৬ জুলাই গুয়াহাটিতে। ওই জ়োনে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ওড়িশা-সহ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি রয়েছে। পরের দিন দ্বিতীয় বৈঠক দিল্লিতে। ওই জ়োনে রয়েছে মোট উত্তর ও পশ্চিম ভারত মিলিয়ে মোট ১০টি রাজ্য ও চারটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। ৮ জুলাই দক্ষিণ জ়োনের বৈঠক হবে ভোটমুখী তেলঙ্গনার হায়দরাবাদে। ওই জ়োনে রয়েছে ৭টি রাজ্য ও দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। সূত্রের মতে, প্রতিটি জ়োনের সার্বিক ভোট সংক্রান্ত কাজ দেখার দায়িত্ব এক বা একাধিক নেতার হাতে তুলে দেওয়া হবে। তাঁদের দায়িত্ব হবে, জ়োনের অন্তর্গত রাজ্যগুলিতে লোকসভা কেন্দ্র ধরে ধরে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রচনা করে আগামী ১০-১১ মাস সেই পরিকল্পনা রূপায়ণ করে যাওয়া।