গুজরাট দাঙ্গা : টানা ৯ ঘন্টার জেরা সামলে ছিলেন নরেন্দ্র মোদি

গুজরাট দাঙ্গা (Gujrat Riot) নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi)। সেই সময় তিনি ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী। ৯ ঘন্টা ধরে একটানা তাকে প্রশ্ন করা হয়। সুদীর্ঘ এই সময়ে এক কাপ চা খাননি তিনি ঠান্ডা মাথায় সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন, একটি প্রশ্ন এড়িয়ে যাননি। নিজের আত্মজীবনী ‘আ রোড ওয়েল ট্রাভেলড’-এমন টাই লিখেছেন সিবিআইয়ের প্রাক্তন প্রধান আর কে রাঘবন। ১৯৯৯এর ৪ জানুয়ারি থেকে ২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সিবিআইয়ের ডিরেক্টর থাকাকালীন একাধিক হাইপ্রোফাইল কেসের তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন ইনি। বফোর্স কান্ড থেকে গুজরাট দাঙ্গা, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ম্যাচ ফিক্সিং থেকে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি সহ বিভিন্ন মামলার তদন্তভার সামলেছেন সিবিআই-এর এই প্রাক্তন আধিকারিক। এই সমস্ত মামলার তদন্ত চলাকালীন যা যা হয়েছিল সে সমস্ত কিছুই লিখেছেন তিনি তাঁর আত্মজীবনীতে।

প্রসঙ্গত এইসময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে তিনি উপযুক্ত ব্যবস্থা নেননি এই অভিযোগই উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। এমনকি এই দাঙ্গায় নাকি প্রচ্ছন্ন মদতও ছিল তার। আর এই বিষয়েই তদন্তের জন্য স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করে সুপ্রিম কোর্ট। এই তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন রাঘবন। এই বইতে তিনি লিখেছেন ‘ শুরু থেকেই তদন্তের গুরুত্ব খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিলেন নরেন্দ্র মোদি, আর তাই শুরু থেকেই সহযোগিতা করেছিলেন তিনি। ৯ ঘন্টা ধরে প্রায় ১০০ রকমের প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে যার মধ্যে নানা অপ্রীতিকর প্রশ্নও ছিল। একটি প্রশ্নও এড়িয়ে যাননি তিনি এমনকি একই রকম উত্তর দিয়ে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টাও করেননি তিনি”। আর এতেই রাঘবন দাবি করেন এইভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে জেরার মুখোমুখি কাউকে এর আগে হতে দেখেননি তিনি।

এই দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন নরেন্দ্র মোদিকে লাঞ্চও সেরে নিতে বলা হয়। কিন্তু তাতেও তিনি কোনোভাবেই রাজি হননি এমনকি এক কাপ চা ও পর্যন্ত মুখে তোলেননি তিনি। তদন্তকারী অফিসারেরা পর্যন্ত প্রশ্ন করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু ক্লান্তির ছাপ দেখা যায়নি নরেন্দ্র মোদির মুখে। এরপর ২০১২ সালে ক্লিনচিট দেওয়া হয় তাকে। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও খারিজ করে দেন তদন্তকারী সংগঠন। দাঙ্গার সমস্ত অভিযোগ থেকেই রেহাই পান নরেন্দ্র মোদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.