“জঙ্গলমহল আর ভিক্ষে চাইছে না, এখনকার যুবসমাজ চাইছে চাকরি।” এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) প্রশাসনকে বিঁধলেন বিজেপির (BJP) সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় (Mukul Roy)। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামের এক জনসভায় তিনি বলেন, “জঙ্গলমহলের মানুষ এখন আর ভিক্ষে চাইছে না। এখানকার যুবসমাজ চাকরি চাইছে। ২০১৩ সালে এখানে এসেছিলাম আমরা ভিক্ষা চাই না কাজ চাই। আজ এখানে এসে শুনলাম সেই একই দাবি।” তিনি আরও বলেন, “সাত বছর হয়ে গেছে মানুষের কিন্তু দাবি রয়ে গেছে। দুটি টার্ম আপনারা এই সরকারকে সুযোগ দিয়েছেন। তখনও বলেছিল ২ টাকা কেজি চাল দিয়েছিলাম। কিন্তু তৃতীয় টার্মের ক্ষেত্রে আর সে কথা বলা যাবে না। সরকারের কিছু রিটার্ন দেওয়ার সময় এসেছে।”
তৃণমূলের থাকার সময় পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঝাড়গ্রামে নিজের প্রচার প্রসঙ্গে মুকুল বলেন, “আমি এখানে ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময় এসেছিলাম তৃণমূলের হয়ে ভোট চাইতে। কিন্তু, এতদিন পর বলতে পারি এখানকার মানুষ কিছু পায়নি। আপনারা কোনদিনও বিধানসভায় ভারতীয় জনতা পার্টিকে ভোট দেননি। আপনাদের বলব একবার অন্তত বিধানসভায় ভারতীয় জনতা পার্টিকে ক্ষমতায় আনুন।” তাঁর আরও বক্তব্য, “আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নাম নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। তিনি যা বলেন সেটা করেন এটাই তাঁর আদর্শ। আপনারা শুধু একবার আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। আমাদের সঙ্গে ছিলেন, আছেন ও থাকবেন। শুধু শুধু কাউকে ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না। ঝাড়গ্রামকে নতুন করে তৈরি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।”
প্রাক্তন রেলমন্ত্রী বলেন, “তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছিল আমরা বলতাম এক লক্ষ ৫ হাজার কোটি টাকা দেনা রেখে গেছে আমাদের উপর। তারপর দশটা বছর কেটে গেছে। তা বেড়ে পাঁচ লক্ষ ত্রিশ, পঁয়ত্রিশ, আটচল্লিশ না ৫০ হাজার বেড়ে গিয়েছে। তা আমাদের ভাবনার বাইরে। দান খয়রাতি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু প্রকৃত উন্নয়ন হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “যদি সত্যিই উন্নয়ন চান তাহলে একবার আমাদের উপর আস্থা রাখুন। এবার আগে বাংলার মানুষকে ফিরিয়ে দিতে হবে তাদের বাক স্বাধীনতা। আমার আপনাদের দেখে মনে হয়েছে ঝাড়গ্রাম এর মানুষ তৈরি হয়ে গিয়েছে, আর ভয় পাবেন না তারা। তাঁরাও জোট বাঁধছে।”
ঝাড়গ্রামের মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুকুল বলেছেন, ঝাড়গ্রাম জেলার চারটি আসনেই আপনারা সৎ বিচক্ষণ ও পরিশ্রমের লোকেদের জয়ী করবেন বলেই আমরা আশা রাখি। আপনাদের কথা মাথায় রেখেই এখানে প্রার্থী চয়ণ হবে।” জনসভায় দ্রুত বক্তৃতা শেষ করে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে (Kailash Vijayvargiya) নিয়ে মুকুল রওনা দেন কেশিয়াড়ির উদ্দেশ্যে। সেখানে বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের একটি জনসভার কর্মসূচি থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি সেখানে যেতে পারেননি। সেই সভাতে গিয়ে বক্তৃতা করেন মুকুল-কৈলাস।