“বেগমকে হারাচ্ছি”, বলে মমতাকে শুভেন্দুর বেনজির আক্রমণ

খড়্গপুরের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নাম না করে “এই বেগমকে হারাচ্ছি। এই বেগমকে না হারালে গলায় কন্ঠী, তুলসীর মালা পড়তে পারবেন না। বেগমকে হারাতেই হবে” বলে হুঙ্কার দিলেন তৃণমূলের একদামন্ত্রী ও বর্তমান বিজেপি-র নন্দীগ্রামের প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার প্রথমে সাগরে তারপরে খড়্গপুরে সভা করেন শুভেন্দু অধিকারী। দুই সভা থেকেই লাগামছাড়া ভাষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী।

২৪ পরগনার সাগর থেকে নির্বাচনী সভা করে উন্নয়ের প্রশ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া সমালোচনা শুভেন্দু অধিকারীর। শুভেন্দু অধিকারী এদিন বলেন, “২০১১ সালে রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক ছিল ৫ লক্ষ ২০ হাজার। ১০ বছরে সেই পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা হয়েছে ৩০ লক্ষ। আমরা বামফ্রন্টের সমালোচনা করি। বাম আমলে রাজ্যের ঋণের পরিমান ছিল ২ লক্ষ কোটি টাকা। মাননীয়া সেই ঋণের পরিমাণ ৪ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে গেছেন। উনি কী চাকরি দিয়েছেন? প্রাণিমিত্র,দেড় হাজার টাকা আর সিভিক ভলিন্টিয়ার পায় সাড়ে সাত থেকে ৮ হাজার টাকা। এই তাকে না চলে সংসার আর ছেলেগুলো না পায় ভালো মেয়ে, যার জন্য বিয়ে হয় না। এই তো মাননীয়ার উন্নয়ন। শিল্প নেই।”

এর পর রাজ্যের সব প্রকল্পই রাজ্য কেন্দ্রের প্রকল্পের অনুকরণে করেছে বলে শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “যতগুলো প্রধানমন্ত্রীর স্কিম আছে সেগুলোর নাম বদল করে কঁচুবাবুরা, বঙ্কিম হাজরার বৌমারা, বঙ্কিমবাবুর জামাইরা, টাকা লুটপাট করে খাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম দিয়েছে বাংলার আবাস যোজনা। সমস্ত নরেন্দ্র মোদীর স্কিম। মানুষকে বলে ২টাকা কেজির চাল দিদি দিচ্ছে। দিদি না থাকলে পাবে কোথা থেকে? এতো ঢপের চপ। এই ২ টাকা কেজির চাল দিল্লির শুনে রাখুন। এই চাল ভারত সরকার মিল থেকে ৩২টাকা কেজি দামে কেনে। ২৯ টাকা দেয় দিল্লি, ১ টাকা দেয় রাজ্য, ২ টাকায় কেনেন আপনারা। অতএব এটা তৃণমূল কংগ্রেসের স্কিম নয়। এই যে শৌলায় তৈরির জন্য প্রধানমন্ত্রী ৯ হাজার টাকা করে প্রতি বাড়ির জন্য দিয়েছে, তার থেকেও কাটমানি খেয়েছে তৃণমূল । স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের নাম বদলে উনি নাম দিলেন নির্মল বাংলা। প্রতেককটা স্কিমের নাম বদলেছে। আর দেখুন প্রধানমন্ত্রীর কিষান যোজনার টাকা সারা দেশের কিসানরা পেলো, বাংলার ৭৩ লক্ষ কৃষক পেলো না। ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় এলে আমরা ৩ বছরের বাকি মোট ১৮ হাজার টাকা একবারে কৃষকদের দেব। এর পর থেকে এই ৬ হাজারের সঙ্গে আরও ৪ হাজার টাকা যোগ করে মোট ১০ হাজার টাকা করে কৃষকরা পাবে।” এর পর শুভেন্দু অধিকারী সংকল্প সোনার বাংলার সব প্রতিশ্রুতি বলতে থাকেন।

শুভেন্দু এদিন বলেন, “মাননীয়া সাড়ে ৯ বছর তোষণ করে এখন বলছেন বিষ্ণুমাতা। একে ভোট দিলে এর পর আর কন্ঠী পরতে পারবেন না। তুলসী মঞ্চ রাখতে পারবেন না। এরা চোর। আমফানের টাকা চুরি করেছে। আমফানে ক্ষতি হয়েছে বলে যার গরু নেই সে গরুর টাকা নিয়েছে, পানের বরজ যার নেই আমফানে পানের বরজের ক্ষতি হয়েছে বলে সে টাকা নিয়েছে। এই চোরগুলোকে জেতাবেন?”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.