সন্দেশখালির মেয়ে রেখা পাত্রকে দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে বসিরহাট কেন্দ্রে প্রার্থী করে চমক দিয়েছে বিজেপি। এ বার সেই ভূমিকন্যার বিরুদ্ধেই পোস্টার পড়ল সন্দেশখালি বিধানসভা কেন্দ্রের একাংশে। এই ঘটনায় তৃণমূলকে দুষছে বিজেপি। অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।
রবিবার রাজ্যের ১৯টি আসনে দ্বিতীয় দফার প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করেছে বিজেপি। সেই তালিকায় রেখার নাম রয়েছে। এর পর সোমবার সকাল থেকেই রেখার নামে পোস্টার দেখা গেল সন্দেশখালি, পাত্রপাড়া ও ত্রিমোহিনী এলাকায়। একটি পোস্টারে লেখা, ‘বিজেপি প্রার্থী হিসাবে রেখা পাত্রকে চাইছি না’। আর একটি পোস্টারে লেখা, ‘সন্দেশখালির আন্দোলনকারী মানুষেরা রেখা পাত্রকে চায় না’।
বিজেপির অবশ্য দাবি, তাদের দলের কেউ এ কাজ করেনি। এর নেপথ্যে তৃণমূলের হাত রয়েছে। দলের বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, ‘‘এই পোস্টার আমাদের দলের থেকে কেউ লাগায়নি । তৃণমূল রাজনীতি করার জন্য কাউকে দিয়ে করাচ্ছে।’’
পাল্টা সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, ‘‘সন্দেশখালিতে যারা এত দিন ধরে বিজেপি করছেন, তাঁরা জানেন যে, বিজেপি এই আন্দোলনটা কাদের দিয়ে করিয়েছিল। আর যাঁদের দিয়ে এই আন্দোলন করিয়েছিল, তাঁদের মধ্যে থেকেই প্রার্থী করেছে। সেই কারণে বিজেপির পুরনো কর্মীরা আজ ক্ষোভ দেখাচ্ছেন। পোস্টার ফেলছেন রেখা পাত্রের বিরুদ্ধে।’’
সন্দেশখালিতে নারী নিগ্রহের অভিযোগ নিয়ে সরব হয়ে প্রথম নজরে এসেছিলেন রেখা। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে শিবু হাজরাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ। পরে গ্রেফতারও হন শিবু। সেই রেখাকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। দলীয় সূত্রে খবর, বসিরহাট আসনের প্রার্থী বাছাইয়ে হস্তক্ষেপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং। অনেক অঙ্ক কষেই মোদী রেখাকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গত ৬ মার্চ বারাসতে সভা করতে এসে মোদী সন্দেশখালির কয়েক জন ‘নির্যাতিতা’ মহিলার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানেও নাকি ছিলেন রেখা। বিজেপি সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রীকে সন্দেশখালির ঘটনার বিবরণ দেন মহিলারা। সেই সময় ওই মহিলাদের কথা মন দিয়ে শোনেন প্রধানমন্ত্রী। বসিরহাট আসনের জন্য তখনই রেখার কথা ভেবে রাখেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ঘুণাক্ষরেও কাউকে টের পেতে দেওয়া হয়নি।
রেখাকে প্রার্থী করার পিছনে পদ্মশিবিরের অঙ্ক রয়েছে। বিজেপি চাইছে, তাঁকে সামনে রেখে গোটা রাজ্যে মহিলাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগকে আরও তীব্র করা যাবে। বিজেপির ধারণা, শুধু বসিরহাটেই নয়, গোটা রাজ্যের ভোটে তার সুফল মিলবে। বসিরহাটে এমনিতেই বিজেপির সংগঠন মজবুত নয়। তবে রেখা প্রার্থী হওয়ায় লড়াই সহজ হবে বলেও মনে করছেন দলের রাজ্য নেতারা।