লোকসভা ভোটের পর থেকেই কাটমানি ইস্যুতে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। তবে এবার কাটমানি না, এবার আস্ত সরকারি প্রকল্প দখল করে পার্টি অফিস বানিয়ে ফেলল তৃণমূলের নেতারা। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে ২ নম্বর পঞ্চায়েতের কাঠুরিয়াপাড়া গ্রামে। সেখানে গরিব পরিবারের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি দখল করে পার্টি অফিস বানিয়েছিল তৃণমূল। ঘটনাটি নজরে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। এর আগেও বহুবার কেন্দ্রীয় প্রকল্প হাইজ্যাক করে নিজেদের নামে চালিয়েছে তৃণমূল। কিন্তু এবার হাইজ্যাক করে নিজেদের পার্টি অফিস বানিয়ে ফেলল শাসক দল। বিজেপির দাবি অনুযায়ী, গ্রামে বাঁধের ধারে অস্থায়ী ছাউনিতে থাকেন শংকর মাঝিকে নামে এক ব্যক্তি। ওই ব্যাক্তি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে একটি ঘর পান। কিন্তু তৃণমূলের নেতারা সেই ঘর দখল করে নিজেদের পার্টি অফিস বানিয়ে ফেলেন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
২০১৮ সালে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে ২ নম্বর পঞ্চায়েতের কাঠুরিয়াপাড়া গ্রামে আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূল একটি দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করেছিল। কিন্তু লোকসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই এলাকার পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। তখন রাতারাতি তৃণমূলের ওই পার্টি অফিস থেকে দলীয় পতাকা খুলে নেওয়া হয়। প্রথমে এমন কেন হল সেটা বুঝতে পারছিলনা এলাকাবাসী, ধীরে ধীরে ব্যাপারটি জলের মতো পরিস্কার হয়ে যায়। জানা যায় যে, ওই কার্যালয় তৃণমূলের ছিল না, এক গরিব ব্যাক্তি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে একটি ঘর পেয়েছিল। আর সেটিকেই দখল করে পার্টি অফিস বানায় শাসক দল। এলাকাবাসীর নজরে আসতেই, বিজেপি ওই সংশ্লিষ্ট বাড়িতে নিজদের দলীয় পতাকা লাগিয়ে দেয়।
বিজেপির তরফ থেকে বলা হয় যে, যতদিন না শাসক দল তৃণমূল ওই বাড়িটি তাঁর আসল মালিকের হাতে তুলে দিচ্ছে, ততদিন সেখান থেকে দলীয় পতাকা খুলবে না বিজেপি। পঞ্চায়েত অফিসের সামনে চলে বিক্ষোভ। অবশেষে বিজেপি এবং এলাকাবাসীর চাপে পড়ে পার্টি অফিসের সামনে দেওয়ার সরকারি প্রকল্প ও উপভোক্তার নাম লিখে দেয় পঞ্চায়েত। আরেকদিকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর পাওয়া শঙ্কর মাঝির কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে জানা যায় যে, তাঁর নামে ঘর এসেছে সে জানেই না। তৃণমূলের নেতারা বেশ কয়েকবার তাঁকে ওই ঘরের সামনে দাঁড় করিয়ে ছবি তুলেছিল। কিন্তু সে তখনও ব্যাপারটা বুঝে উঠতে পারেনি।