বেঙ্গালুরু দাঙ্গা প্রাক-পরিকল্পনাযুক্ত – বলছেন সিটিজেন ফর ডেমোক্রেসি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির দল

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্রীকান্ত ডি বাবালাদীর নেতৃত্বে *সিটিজেনস ফর ডেমোক্রেসি*-র একটি সত্য অনুসন্ধানকারী কমিটি ব্যাঙ্গালোর পুলকেশীনগরের কে জি হালি এবং ডি জে হালির সাম্প্রতিক দাঙ্গা প্রভাবিত অঞ্চলগুলি পরিদর্শন করার পর দাবি করেছেন “দাঙ্গা ছিল  সম্পূর্ণ ভাবে পূর্বপরিকল্পিত ও সংগঠিত। বিশেষত তারা হিন্দু এলাকাতেই এই দাঙ্গা সংগঠিত করে।কমিটির সদস্যরা শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরপ্পাকে একটি প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির তরফ থেকে। সেই প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী ঐ রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার এবং বাঙ্গালোরের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করার এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
কংগ্রেস বিধায়ক আখন্ড শ্রীনীবাস মুর্তির বাড়ি আক্রমন করা হয় এবং এই হিংসার ঘটনাতে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হয়। সরকার এই ঘটনাতে ম্যাজিস্টেরিয়াল তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ৪৯ পৃষ্ঠার সেই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, “রাজ্যের সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নষ্ট করার উদ্দেশ্য নিয়ে পুরো ঘটনাটি ঘটানো হয়, যেটি সম্পূর্ণ ভাবে পরিকল্পিত ছিল”।

বেশ কয়েকজন আক্রান্ত ব্যক্তি, পলিশ এবং এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে কথোপকথনের পরে,অবসরপ্রাপ্ত আমলা, সাংবাদিক, উকিল, অধ্যাপকদের নিয়ে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, “FIR এবং ভুক্তভোগীদের সাথে নির্দিষ্ট মতবিনিময় থেকে জানা যায় যে স্থানীয় লোকজন এই দাঙ্গাতে জড়িত ছিলেন এবং মদত দিয়েছিলেন।” প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে “স্থানীয়রা কেবল এই ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন শুধু তাই না, তারা আগে থেকেই এই ব্যাপারে অবগত ছিলেন।” রাজনৈতিক হিংসা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা হলেও এটি সম্পূর্ণ ভাবে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা বলেই দাবি করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনে এটাও জানানো হয়েছে যে এই ঘটনার পিছনে এবং বাস্তবায়নে SDPI এবং PFI সম্পূর্ণ ভাবে জড়িত রয়েছে।”


কমিটির পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে বলা হয় যে, রাজ্য এবং সাধারন ব্যক্তিদের যে ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণের সবটাই দাঙ্গাকারীদের পুনরুদ্ধার করা হোক। এবং অতি অবশ্যই রাজ্যের পক্ষ থেকে এই ঘটনাটির সার্বিক ভাবে তদন্ত করা উচিৎ।কোনোভাবেই যেন এই ঘটনাটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসাবে বিবেচনা করা না হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে “যে সমস্ত ব্যক্তি ও ধর্মীয় উগ্রপন্থী সংগঠনগুলি অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত তাদের তহবিলগুলি NIA দ্বারা নজরদারি চালানো হোক এবং পর্যবেক্ষণ করা হোক।অপর দিকে আরো একটি দাবি করা হয়েছে ,যাতে সাইবার অথবা স্যোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে যেন আগামী দিনে কোনো ভাবেই উস্কানি দিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করতে না পারে সেটি দেখা।
সর্বোপরি কমিটির তরফ থেকে সুপারিশ করা হয় তথ্য প্রযুক্তি আইন *ধারা 66A* বিলুপ্তির সাথে সাথে কোনও ধর্ম, বর্ণ,শ্রেণি অথবা সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে আপত্তিজনক কিছু বলা অথবা  অবমাননাকর কিছু মন্তব্য প্রতিরোধ ও বিচারের জন্য একটি ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.