রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ক্রস ভোটিংয়ের অভিযোগ ঘিরে সরগরম জাতীয় রাজনীতি। দেশের রাষ্ট্রপতি হিসাবে দলের অবস্থানের বিপরীত মেরুতে হেঁটে অনেক বিরোধী শিবিরের সাংসদ-বিধায়কই এনডিএ-র দ্রৌপদী মুর্মুকে ভোট দিয়েছেন। বিজেপির একটি সূত্রে এমনই দাবি করা হয়েছে।
বিজেপি সূত্রে দাবি, বিভিন্ন বিধানসভার প্রায় ১২৫ জন বিধায়ক দ্রৌপদীর সমর্থনে ভোট দিয়েছেন। ভোটের গণনার গতিপ্রকৃতি দেখে বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, ১৭ জন সাংসদের ক্রস ভোটিংয়ে লাভবান হয়েছেন দ্রৌপদী।
জানা গিয়েছে, অসম, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় বিরোধী শিবিরের একাধিক বিধায়ক নিজেদের দলের অবস্থানের বিরুদ্ধে গিয়েই দ্রৌপদীকে ভোট গিয়েছেন। সূত্রের দাবি, অসমের প্রায় ২২ বিধায়ক, মধ্যপ্রদেশের ২০ জন, বিহার ও ছত্তীসগঢ়ের ছয় বিরোধী বিধায়ক, গোয়ার চার ও গুজরাতের ১০ বিধায়ক ক্রস ভোট দিয়ে থাকতে পারেন।
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহ্বাণ টুইটারে লিখেছেন, ‘দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসাবে দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থনের জন্য অন্য দলের বিধায়কদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধি দ্রৌপদী মুর্মুকে প্রার্থী করে কৌশলী চাল চেলেছে মোদী বাহিনী। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রপতি ভোটে প্রার্থী বাছাই নিয়ে জোটবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করেছিল বিরোধী শিবির। টালবাহানার পর ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিরোধী শিবির থেকে যশবন্ত সিন্হাকে প্রার্থীও করা হয়। কিন্তু তার পরই এনডিএ প্রার্থী হিসাবে আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধি দ্রৌপদীকে তুলে ধরায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কাকে সমর্থন করবে, সে নিয়ে অনেক বিরোধী নেতাই দোটানায় পড়ে যান বলে বিরোধী শিবিরের একাংশের ধারণা। সে কারণেই নির্বাচনে ক্রস ভোটিংয়ের সংখ্যা এত বেশি বলে মনে করছেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার ভোট গণনা শেষ হওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় ভোটমূল্য পেয়ে যান দ্রৌপদী। গণনা শেষে দেখা যায়, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ৬৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রপতি হিসাবে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ভোটমূল্য ছিল ৫,৪০,৯৯৬। দ্রৌপদী তৃতীয় রাউন্ড গণনার পরেই পেয়ে যান ৫,৭৭,৭৭৭ মূল্যের ভোট। উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ভোট পেয়েছেন দ্রৌপদী।