দিলীপের ভবিষ্যৎ ভাবনা কী? মেদিনীপুর আসনে বিজেপি প্রার্থী না করলে কোন পদক্ষেপ করবেন ঘোষ

বাংলায় দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে আপাতত বিশেষ নজর মেদিনীপুর আসনের দিকে। তৃণমূল জুন মালিয়াকে প্রার্থী ঘোষণা করে দিলেও এখনও বিজেপি গত লোকসভা নির্বাচনে জয়ী দিলীপ ঘোষের নাম ঘোষণা করেনি। বাংলার প্রথম তালিকাতে তাঁর নাম ছিল না। ২ এপ্রিল সেই তালিকা প্রকাশের পর থেকেই রাজ্য বিজেপিতে নানা জল্পনা শুরু হয়। যা এখনও চলছে। সেই জল্পনায় অনেক প্রশ্ন। দিলীপকে কি প্রার্থীই করবে না বিজেপি? দিলীপকে কি মেদিনীপুর ছেড়ে অন্য আসনে পাঠাতে পারে দল? আর সে সব কিছু হলে কী করবেন দিলীপ? এমন সব জল্পনার মধ্যেই আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন তিনি। দিলীপ বলেন, ‘‘প্রার্থী না করলে আমার কিছু আসে-যায় না। দল যে কাজ দেবে সেটাই করতে চলে যাব।’’

তবে এখন দিলীপ খানিক অন্য রকম। আগের মতো ‘ঝাঁজ’ নেই দলের নেতৃত্বের প্রতি। অনেকেই বলছেন দিলীপের কেন্দ্র বদলে যেতে পারে এ বার। এই প্রসঙ্গে বিজেপির অনুগত সৈনিকের সুরে দিলীপ বলেন, ‘‘ সেটা দল ঠিক করবে। আমি বরাবর দলের সিদ্ধান্ত মেনে চলেছি।’’ একটুও কি মনখারাপ হবে না? জবাবে দিলীপ বলেন, ‘‘দল যা করবে সেটা দলের সিদ্ধান্ত। আমার কিছু বলার নেই। টিকিটি দেবেই এমনটাও নয়। সব কিছুর জন্য তৈরি থাকতে হবে। রাজনীতিতে এসে সব দরজা খুলে রাখতে হয়। যে দরজা খুলে রাখতে পারে না তার পক্ষে মুশকিল হয়।’’

কোন দরজা খুলে রেখেছেন, দিলীপ তা খোলসা করেননি। অতীতে অনেক বারই দিলীপের মুখে শোনা গিয়েছে, ‘‘দল না চাইলে আবার প্রচারক জীবনে চলে যাব। আমার ব্যাগ, বেডিং গোছানোই থাকে।’’ তবে কি সেই দরজাই খোলা দিলীপের?

নিজের এলাকায় যে তিনি সময় দিয়েছেন এবং সেটা একটা পরীক্ষাই ছিল দিলীপের। তিনি বলেন, ‘‘আমি সর্বভারতীয় স্তরে, রাজ্য স্তরের কর্মসূচিতে রোজ ঘুরতাম। সেই লোকটা এখন রোজ গ্রামে যাচ্ছে, গ্রামে ঘুরছি, সেখানে চা খাচ্ছি, থাকছি, এটা কি কম বড় পরীক্ষা! নিজেকে ছোট জায়গার মধ্যে সীমাবদ্ধ করা। কিন্তু আমি জানি শক্তি ওখানেই আছে।’’ তাঁর এলাকায় ১৫০০-১৬০০ গ্রামের বেশিরভাগেই তিনি গিয়েছেন দাবি করে বলেন, ‘‘একই এলাকা থেকে পাঁচ-পাঁচ বার সাংসদ হয়েছেন এমন অনেকেও সেটা করেন না।’’ তাঁর দলের সাংসদেরাও কি তাই? নিজেকে সামলে নিয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘দল এমন কর্মসূচি দেয় যে করতেই হয়। এই যে ‘গ্রাম চলো অভিযান’ হল। সবাই গ্রামে গ্রামে গিয়েছেন। দিল্লিতে অনেকে আমায় বলেছেন, দারুণ লাগল গ্রামে গিয়ে। আমি তাঁদের বলি, এটা তো আমি নিয়মিত করি।’’

৩২ বছর আরএসএস প্রচারক থাকার পরে রাজনীতিতে। রাজ্য দলের সর্বোচ্চ দায়িত্বের পরে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। বিধায়ক এবং সাংসদ হয়েছেন। দ্বিতীয় বার সাংসদ হতে পারবেন কি না সেটা এখনও প্রশ্নের মুখে। তবে মেদিনীপুরের কর্মীরা যে তাঁকেই সেখানে প্রার্থী চাইছেন তা জানিয়েছে দিলীপ। বলেন, ‘‘সবাই জিজ্ঞেস করছে, কবে নাম ঘোষণা হবে? আমরা প্রচারে বার হব। আমি সবাইকে বলছি, সেটা দল ঠিক করবে।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.