Dilip Ghosh: ‘সবাইকে তৃণমূল নাকে খত দিয়ে শেষে দলে নেবে’, তৃণমূলকে আক্রমণ দিলীপ ঘোষের

 মঙ্গলবার সকালে ইকোপার্কে আসেন দিলীপ ঘোষ। সেখানেই রাজ্যের বিভিন্ন বিষয়ে শাসকদলকে আক্রমণ করেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিষ্ঠা দিবস বিতর্ক

তিনি বলন, ‘বাংলার প্রথম সরকার। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় তাদের মন্ত্রী ছিলেন। তখন সরকারে থাকা হিন্দু বিধায়করা পশ্চিমবঙ্গ তৈরির জন্য ভোট দিয়েছিলেন। বঙ্গভঙ্গের পর হিন্দু প্রধান অংশ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ। জ্যোতিবাবুরা পর্যন্ত, হিন্দু বাংলা তৈরি করার জন্য ভোট দিয়েছিলেন। মোট ২০ জন। তখন থেকেই পশ্চিমবঙ্গের ধারণা তৈরি হয়। দেশ ভাগ হয়েছে তার পরে। তাই, পশ্চিমবঙ্গ তৈরি হওয়ার একটা দিন আছে। মমতা ব্যানার্জি ইতিহাস ঘেঁটে দিতে চাইছেন। এটা ঐতিহাসিক সত্য। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ছিলেন বলে হিন্দু বাঙালি হোম ল্যান্ড পেয়েছে। নাহলে সবাই উদ্বাস্তু হয়ে যেত। মমতা ব্যানার্জি আপত্তি জানানোর কে? উনি আজ আছেন, কাল থাকবেন না। ইতিহাস থেকে যাবে। আর উনি নিজে একদিন ইতিহাস হয়ে চলে যাবেন। তাই এসব চেষ্টা যেন উনি না করেন।‘

রাজভবনে পিস রুম। বাইরে ওয়ার রুম। কাল সুকান্তর পর আজ শুভেন্দু

তিনি বলেন, ‘বাস্তব পরিস্থিতি জানার দরকার ছিল। সব জায়গায় ওনার পক্ষে যাওয়া সম্ভব হয় নি। মানুষের অভিযোগ পুলিস নেয়না। সরকার ব্যবস্থা নেয়না। গায়ের জোরে একটা দল ভোট করতে চায়। মানুষের অভিযোগ জানানোর জায়গা নেই। রাজ্যপাল সেই সুযোগ করে দিয়েছেন। তাই হাজার হাজার মানুষ ফোনে অভিযোগ করছে। বিরোধি প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে চাপ দেওয়া হচ্ছে। গ্রামে গ্রামে বাইক বাহিনী ঘুরছে। আমাদের বহু ঘরছাড়া প্রার্থী পার্টি অফিস বা অন্যত্র আছেন। এটা প্রশাসন মানতেই চাইছে না। ওরা এটাকে শান্তিপূর্ণ ভোট বলে চালাতে চাইছে। রাজ্যপাল এরকম একটা পদক্ষেপ নিয়েছেন বলেই তৃণমূল আপত্তি তুলছে’।

কাল সুকান্ত, আজ শুভেন্দু রাজভবনে

দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বিরোধি বা সাধারণ মানুষের অভিযোগ করার বা সমস্যা জানানোর জায়গা নেই। সরকার কথা শোনে না। যার শান্তি রক্ষার কাজ সে অশান্তি করছে। মানুষ যাবে কোথায়? বাধ্য হয়ে রাজ্যপালের কাছে যেতে হচ্ছে’।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফের অভিষেককে তলবের প্রস্তুতি ইডির

তিনি  বলেন, ‘চুরি করলে ধরা পড়লে তদন্ত হলে রাজনৈতিক অভিসন্ধি হয়! লুঠপাট করেছেন, হাজার হাজার কোটি টাকা ঝেড়েছেন। এখন রাজনৈতিক অভিসন্ধি বললে লোকে মানবে? মানুষ অপেক্ষা করে আছে, কবে এই শয়তানগুলো জেলে যাবে’।

দিনহাটার তৃণমূল প্রার্থীর স্বামীকে গুলি তৃণমূলেরই এক কর্মীর

দিলীপ জানান, ‘প্রায় ১৫ হাজার এক্সট্রা প্রার্থী আছে ওদের। যখন তাদের মনোনয়ন তুলতে বলা হবে, তখনই গুলি বোমা চলবে। আরও অনেক এরকম ঘটনা ঘটবে। বহু এরকম লোক নির্দল হিসেবে থেকে যাবে। গতবারও হুমকি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্দল হিসেবে জেতার পর সবাইকে দলে টেনে নেওয়া হয়েছিল। যারা এতোদিন, দলে ছিল, পাওয়ারফুল, টাকাপয়সা কামিয়েছে, দলকেও দিয়েছে, তাদের হঠাৎ শুদ্ধিকরণের নামে টিকিট দেওয়া হয়নি। কিন্তু তাদের তো পাওয়ার ও টাকা আছে। এদের সবাইকে তৃণমূল নাকে খত দিয়ে শেষে দলে নেবে’।

বাহিনী নিয়ে সুপ্রিম নজর

তিনি বলেন, ‘কোর্টে যাওয়ার সুযোগ ছিল, তাই গিয়েছেন। কিন্তু কেন গিয়েছেন? রাজ্যের ১০ কোটি মানুষ চাইছে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই ভোট হোক। রাজ্য সরকার তা চাইছে না। তাই কমিশনও চাইছে না। কমিশন কি রাজ্যের হয়ে কাজ করছেন? এটাই প্রশ্ন’।

জেলায় জেলায় আক্রান্ত বিরোধিরা

তিনি বলেন, ‘মনোনয়ন করেই অনেকে বাড়ি ছাড়া। কোচবিহারে স্ক্রুটিনির পরেই অনেকে বাড়ি ছাড়া। অনেকে বাড়ি একবার ছেড়ে দিলে আর বাড়ি ঢুকতে পারবেন না। ভয়ংকর ভয়ের পরিবেশ। এই পরিবেশ তৈরি করে জিততে চাইছে তৃণমূল’।

মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ ঠেকাতে CESC কে কড়া ধমক অরূপ বিশ্বাসের

তিনি জানিয়েছেন, ‘এটা মুখ্যমন্ত্রী প্রায়ই করে থাকেন। কোনও কিছু হলে কারুর ঘাড়ে দায় চাপিয়ে দেন। বিদ্যুতে ঘাটতি আছে। এটা গোপন করে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি বিগড়ে গেলে কারুর ঘাড়ে দায় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে’।

প্রার্থী প্রত্যাহারের প্রস্তাব নৌশাদের

দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘প্রার্থী দিয়ে তুলে নেওয়া গনতন্ত্রের পরিপন্থী। বিরোধিরা সবাই লড়ছে। তাদের কর্মীরা লড়াই করছেন। লোকের মনে আশা আছে। সাধারণ মানুষ সঙ্গে আছেন। এখন পিছিয়ে গেলে চলবে কেন? আপনারা লড়ুন। তৃণমূলকে হারানোর দায়িত্ব মানুষের ওপর ছেড়ে দিন’।

আদিপুরুষ বিতর্ক

দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘এই ধরনের পৌরাণিক বিষয় নিয়ে সিনেমা হলে, বিতর্ক হয়েই থাকে। বিষয়টা কোর্টে গিয়েছে। যে লুক তৈরি করা হয়েছে, সেটা অনেকে পছন্দ করেনি। যেভাবে আমরা রামায়ণ-মহাভারত দেখেছি, আমাদের মনের মধ্যে একটা ছবি আছে। যখন সেই ছবির সঙ্গে মেলেনা, তখন একটা প্রতিক্রিয়া হয়। এখানেও সেটাই হয়েছে। কোর্ট পরিবর্তন করতে বলেছে। যদি হয়, তাহলে হয়তো সমাজ মেনে নেবে। কিন্তু ওরা যেটা করেছে, সেটা ঠিক হয়নি। নতুন চিন্তাভাবনা আসতেই পারে। কিন্তু পুরো লুক টাই পাল্টে দেবে, তাহলে তো প্রতিক্রিয়া হবেই’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.