তারকেশ্বরের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বললেন, “দিদি, ক্রিকেট খেলতে গিয়ে যারা আম্পায়ারের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তোলে তারা খেয়ালে হেরে গেছে। আপনি নির্বাচনে কমিশন আর সেনা বাহিনীর নাম অভিযোগ করছেন। দিদি আপনি হেরে গেছেন।” এদিন নরেন্দ্র মোদীর কথায় ছিল বেশ দৃঢ়তা। তিনি বলেন, “দিদি গণতন্ত্র খেলা নয়। গণতন্ত্র জনসেবা। আপনি গণতন্ত্র নিয়ে খেলছেন। আপনার খেলা শেষ।”
তারকেশ্বর থেকে মোদী বলেন, “রাজ্যের মানুষকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০ বছর ধরে বঞ্চনা ও অপমান করেছেন। আপনি বলছেন বিজেপি-র সভায় বাংলার মানুষ টাকা নিয়ে আসছেন। এই গরমে মানুষ টাকার জন্য এসেছেন? আপনি এসব বলে বাংলার মানুষদের অপমান করছেন। বাংলার মানুষদের আত্মসম্মান আছে। ১০ বছর আগে আপনাকে যারা নয়নের মনি করে রেখেছিলো তাদের আপনি অপমান করছেন? বাংলার মানুষ ইংরেজদের সঙ্গে লড়েছে।” আসলে এই কথা বলে মোদী বাংলার মানুষকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করলেন।
এর পর উন্নয়নের প্রশ্নে প্রাধানমন্ত্রী বলেন, “২ মে রাজ্যে বিজেপির সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। আমি আসবে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে। প্রথমম মন্ত্রীসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কিষান নিধি প্রকল্পের সম্মতি দেওয়া হবে। কৃষকদের ব্যাংকে ১৮ হাজার টাকা পৌঁছে যাবে। ১০ বসের রাজ্যে উন্নয়ন হয়নি। শিল্প আসার রাস্তা বন্ধ হয়েছে। আগের শিল্প যা ছিল তাও বন্ধ হয়েছে। সিঙ্গুরের কারখানা হলো না। তারপর হিমঘরের নামে সিন্ডিকেটে রাজ হলো। বাংলায় এক সময় কত মানুষ কাজ করতে আসতেন। এখন সবাই ভিন রাজ্যে কাজ করতে যায়। বিজেপি রাক্যে ক্ষমতায় এসে ডানকুনি ফ্রেইট করিডোর করবে। মেট্রো সম্প্রসারণ হবে। সোনার বাংলার গৌরব ফিরিয়ে আনা হবে।”
নরেন্দ্র মোদী এদিনও তাঁর ভাষণে বহুবার “দিদি, ও দিদি”, বলে ডাকেন। বার বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে নরেন্দ্র মোদি বলেন, “দিদি আপনি হেরে গেছেন। ২ মে ইভিএম খুললেই শুধু পদ্ম ফুলে চাপ দেখা যাবে। বাংলার মানুষ নিজেরাই বিজেপি-র হয়ে ভোটটা করে নিচ্ছেন। আমি সেই জন্য বাংলার মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। বাংলায় ডাবল ইঞ্জিন সরকার হবে। প্রথম মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের সময় মুখ্যমন্ত্রীকে বলবো, আপনি কাজ করে যান , দিল্লি থেকে টাকা আসবে।”
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে রাজনৈতিক অভিজ্ঞরা বলছেন, “প্রধানমন্ত্রীর কথায় প্রমাণ হচ্ছে যে যে রাজ্যে বিজেপি শাসিত সরকার নেই, সেই রাজ্যের উন্নয়নের জন্য বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার সহযোগিতা করে না বা করতে রাজি নয়। না হলে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারে এসে কেন বার বার বলছেন রাজ্যে ডাবল ইঞ্জিন সরকার হলে বাংলাকে সোনার বাংলা করা হবে। এটা কী আসল যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে চলতে পারে?”