বিধানসভায় সংবিধান প্রণেতা বাবাসাহেব আম্বেদকরের মূর্তিতে মাল্যদান করতে এসে রাজ্যের বিরুদ্ধে ফের সরব হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস ও রাজ্যের আইন কানুন নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যপাল এদিন জানান, বাংলায় গণতন্ত্র বিপদের মুখে। বাংলার ভোটারদের কোনও স্বাধীনতা নেই। পাল্টা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘রাজ্যপাল বিধানসভায় এসে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে যাচ্ছেন। অবাক হয়ে যাচ্ছি।’
এদিন রাজ্যপাল রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘রাজ্যে কোনও আইনের শাসন নেই। শাসকের আইন চলছে। পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ।’ এরপরই তিনি কিছুটা হুশিয়ারির সুরেই জানান, রাজ্যের শাসক দল বিরোধীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছে। রাজ্য সরকারি আধিকারিকরা সংবিধানের মর্যাদা ভুলে গিয়েছেন। একইসঙ্গে রাজ্যপাল জানিয়ে দিলেন, কোনও ফাইল তাঁর কাছে সইয়ের অপেক্ষায় পড়ে নেই। রাজ্যপালের নামে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। যে ভাষায় রাজ্যপালকে চিঠি লেখা হয়, তা অত্যন্ত লজ্জার। একইসঙ্গে উপাচার্যের নিয়োগ নিয়েও রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন রাজ্যপাল। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘কীভাবে রাজ্যপালের অনুমতি ছাড়া ২৫ জন উপাচার্যকে নিয়োগ করা হল। এই রকম নিয়োগ দেশের কোথাও হয় নাকি। শিক্ষার উন্নয়নের জন্য উপাচার্যদের ডাকা হয়েছিল। কিন্ত তাঁরা না এসে ইউনিয়ন করছেন?’ বিধানসভার স্পিকারকেও নিশানা করে রাজ্যপাল জানান, ‘রাজ্যপালকে অন্ধকারে রেখে অধ্যক্ষ কিছু করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রাজ্যপালের এই ধরনের আচরণের কড়া সমালোচনা করে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘রাজ্যপাল বি আর আম্বেদকরের স্মৃতিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর বিধানসভা সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমের সামনে সমালোচনা করলেন। এটা অত্যন্ত অসৌজন্যমূলক আচরণ বলেই মনে করছি।’ হাওড়া কর্পোরেশন বিল প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অধ্যক্ষ জানান, ‘বিধানসভা এমন একটা জায়গা যেখানে সব তথ্য সামনে আসা দরকার। কিন্ত হাওড়া কর্পোরেশন বিল পাশ করা হয়নি। কোনও তথ্য আসেনি। রাজ্যপাল একথা কীভাবে বললেন, সেটা কথা জানা নেই।’ ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্যপালের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিধানসভার অধ্যক্ষ জানান, বিষযটি সুপ্রিম কোর্ট দেখছে। তারপরও রাজ্যপাল কীভাবে এই বিষয়ে মন্তব্য করেন জানি না।