নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই ৪ রাজ্যসহ ১ টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা করে দিয়েছে আর সাথে সাথেই আবারও দেখা দিয়েছে কংগ্রেসের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে চূড়ান্ত বিভ্রান্তি। শতাব্দীপ্রাচীন এই রাজনৈতিক দলটি কেরালায় বামেদের প্রতিপক্ষ হয়ে মাঠে নামলেও পশ্চিমবঙ্গে তারা বামেদের জোট-সহযোগী। নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস জোট বেঁধেছে বামপন্থীদের সঙ্গে। কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গে বাম ও কংগ্রেসের এই পরস্পরবিরোধী রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে শশব্যস্ত হয়ে আলোচনায় নেমেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। তারা মাপতে পারছে না কংগ্রেসের আদত রাজনৈতিক অবস্থানটি ঠিক কি যদিও ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় যে কংগ্রেসের অবস্থান সম্পর্কে বিভ্রান্ত হওয়ার কারণ নেই কেননা এই দলটি নিয়মিতভাবেই রঙ-বদলের রাজনীতি করে অভ্যস্ত। আপাতদৃষ্টিতে বাম ও কংগ্রেস—এই দুই দলের মতাদর্শ ও রাজনৈতিক অবস্থান আলাদা বলে মনে হলেও ১৯৪৭ সালে মুসলিম লীগ যখন ভারতবর্ষের মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্রের দাবি জানিয়েছিল, তখন আশ্চর্যজনকভাবে একমত হয়ে গিয়েছিল কংগ্রেস ও কম্যুনিস্টরা। দুইয়ে মিলে তারা সমর্থনের সীলমোহর দিয়েছিল মুসলিম লীগের দাবিতে। মাতৃভূমিকে ভাগ করার মত আদর্শগত ইস্যুতে তাদের মধ্যে কোনো মতানৈক্য ছিল না। কিন্তু দেশভাগ হয়ে যাওয়ার পরেই দেখা গিয়েছিল কংগ্রেস ও বামেরা প্রকাশ্যে হয়ে উঠেছে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক আকচাআকচির কোনো সুযোগই তারা তখন ছাড়ে নি। সন্দেহ দেখা দিয়েছিল তখনই যে বাম-কংগ্রেসের প্রতিদ্বন্দ্বিতা আদতে লোক দেখানো। আদর্শগত বা ভাবধারাগত কোনো পার্থক্য তাদের মধ্যে নেই। কিন্তু ভারতবর্ষের ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দল—দুটি আসনকেই নিজেদের দখলে রাখার উদ্দেশ্যে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার মাধ্যমেই পরস্পর-প্রতিদ্বন্দ্বিতা জারি রেখেছিল তারা যাতে বিকল্প আদর্শের কোনো দল ‘প্রকৃত বিরোধী’ হিসেবে মাথা তুলতে না পারে। ক্ষমতাসীন কংগ্রেস ও তাদের বিরোধী দল কম্যুনিস্ট—এইভাবে নিজেদেরকে জনগণের সামনে উপস্থাপন করে, রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার জন্য ময়দানে এক ইঞ্চি জমিও পরস্পরকে না ছেড়ে গট-আপ রাজনৈতিক বিরোধিতার যুগলবন্দী চালিয়ে গিয়েছিল যাতে তৃতীয় কোনো প্রকৃত বিরোধী দলের আত্মপ্রকাশ ঘটতে দিতে না হয়। বর্তমানে কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গে তাদের রাজনৈতিক অবস্থানগত দ্বিচারিতা এমন সন্দেহের সত্যতারই প্রমাণ। আপাত-দ্বন্দ্বের আড়ালে কংগ্রেস ও কম্যুনিস্টদের অন্তর্নিহিত ঐক্যের সপক্ষে ভুরি ভুরি করোবরেটিভ এভিডেন্সেস বা প্রতিপোষক প্রমাণ আছে।
পশ্চিমবঙ্গ ও সর্বভারতীয় রাজনীতিতে গত ষাট বছর যাবৎ নখ দাঁত সহকারে পরস্পরের বিরোধিতা করার পর বাম ও কংগ্রেস নিজেদের মধ্যে প্রথমবারের মতো নির্বাচনী জোট গঠন করে ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে। অতীতের আকচাআকচি ভুলে, পাবলিকের সামনে চক্ষুলজ্জার বালাই না রেখে। এমন আচরণ তাদের জন্য অস্বাভাবিক ছিল না কারণ আদর্শ বা নীতিগত কোনো বিরোধ দলদু’টির মধ্যে আদতে নেই। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে এমন জোট অস্বাভাবিক ঠেকেছিল কারণ ১৯৭৭ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের গলি থেকে রাজপথে বামেদের মুখে “কংগ্রেসের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুঁড়িয়ে দাও” স্লোগান শুনে অভ্যস্ত ছিল তারা। ২০১৬ সালে বাম-কংগ্রেসের হঠাৎ-জোট তাই পশ্চিমবঙ্গের কৌতুকপ্রিয় মানুষকে জুগিয়েছিল কৌতুকের প্রভূত রসদ। ‘বাম বন গ্যয়া ঝণ্ডু বাম’—বলেছিল পাবলিক। হলও তাই। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচনে যাওয়ার ফলে বামেদের আসন ও ভোট সংখ্যা কমে গেল আরও। বস্তুতঃ ২০১৬ সালে বাম-কংগ্রেস জোটের পরেই পশ্চিমবঙ্গের আমজনতা সম্যক বুঝতে পেরে গিয়েছিল যে দুটি দলের মধ্যে আদতে আদর্শগত কোনো দ্বন্দ্ব নেই এবং যে বিরোধ এতকাল দেখানো হয়েছে তার গোটাটাই ছিল সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য। ফলস্বরূপ, ২০১৬ সালের জোটের পর পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে বামেদের রাজনৈতিক ক্ষতি হয়েছিল আরও বেশি। ঠকতে হয়ত সাধারণ মানুষের তত আপত্তি থাকে না, কিন্তু ঠকেছে বুঝতে পারলে যা(দে)র কাছে ঠকেছে তা(দের)কে আগের মতো গ্রহন করা মানুষের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। কংগ্রেস বরং কিঞ্চিৎ ভালো ফল করেছিল কারণ কয়েকটি নির্দিষ্ট পকেট এলাকা ছাড়া ১৯৭২ সালের পর থেকে কংগ্রেসের ওপর পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বিশেষ ভরসাও করে না, তাদের কাছ থেকে বড় একটা প্রত্যাশাও রাখে না। তাই ২০১৬’র নির্বাচনী জোটের পর কংগ্রেসের তুলনামূলক পারফরম্যান্স ভালো হয়েছিল। এবারও অনুমান করা যায় যে বাম-কংগ্ৰেস জোট থেকে কিছু নির্বাচনী লাভ কংগ্রেস যদিও বা তুলতে পারে, বামেদের ভরাডুবি প্রায় সুনিশ্চিত। ২০২১ এ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচন বামেদের কফিনে হয়ত সেই পেরেকটি পুঁততে চলেছে যে পেরেক কংগ্রেসের কফিনে পুঁতেছিল এ রাজ্যে ১৯৭৭ সালের বিধানসভা নির্বাচন।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের বাম দলগুলো পেয়েছিল মাত্র ৭% ভোট। সবকিছু এভাবেই চললে আসন্ন নির্বাচনে বামেদের ভোট আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে অনুমান করা যায়। মাটির কাছাকাছি বাস করা লোকেদের উপলব্ধি হল—বাম-কংগ্রেস জোট আদপে সুযোগসন্ধানী রাজনীতির জোট। যদিও দল দুটি চায় যে সাধারণ মানুষ এই জোটকে নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি হিসাবে দেখুক, কিন্তু আদতে এটিই বাম-কংগ্রেসের স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত রসায়ন। নীতিগতভাবে বাম ও কংগ্রেসে কোনো বিভেদ কোনোদিন ছিল না। পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই বরং মানুষকে তারা বিভ্রান্ত করেছিল। আদতে এমত জোটই তাদের স্বাভাবিক, স্বতঃস্ফূর্ত রসায়ন। পশ্চিমবঙ্গের জনসাধারণের একটা তাৎপর্যপূর্ণরকমের বড় অংশ তা বুঝতে পেরে গিয়েছে। নীতি ও আদর্শগত দিক থেকে কম্যুনিস্টরা হ’ল কংগ্রেস পার্টিরই আর একটি ভ্যারিয়েন্ট। দুইটি দল একই নীতির দুই ভিন্ন প্যাকেজিং মাত্র। কম্যুনিস্টদের বিপ্লবী ভাবমূর্তির প্যাকেজিংটিও সুপরিকল্পিত। আরও বহু মানুষকে ঐ একই ভাবধারার প্রতি আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে। সেই কারণেই দেখা যায়— যে স্থানে কংগ্রেস নিজেদের রাজনৈতিক স্পেস তৈরি করতে পারে, সেখানে বামপন্থীরাও সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে, আবার এর বিপরীতটিও প্রায়শঃই সত্যি হয়। বামপন্থীদের রাজনৈতিক ফায়দাও, কোনো না কোনোভাবে কংগ্রেসের পক্ষেও লাভজনক হয়ে ওঠে। কেরালার রাজনীতির ছবিও সে সাক্ষ্যই দেয়। প্রতি ৫/১০ বছর অন্তর পালাবদলের যে খেলা এই দুই দল প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে, গড়াপেটা না থাকলে তেমন হওয়া কার্যতঃ অসম্ভব।
এই নীতিগত ঐক্যের কারণেই হয়ত পশ্চিমবঙ্গের বাম-কংগ্রেস জোট এখন ‘আজকের মুসলিম লীগ’ ওরফে আব্বাস সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টকে সমর্থন করছে ঠিক যেমনভাবে ১৯৪৭ সালে তারা একযোগে সমর্থন করেছিল মুসলিম লীগের দেশভাগের দাবীকে। সিপিএম এতকাল প্রচার করেছে যে ঈশ্বরের অস্তিত্ব বা কোনও অতিপ্রাকৃত শক্তিতে তারা বিশ্বাস করে না। কিন্তু আজ তারা মুসলিম উলেমাদের অর্থাৎ আল্লাহর উপাসকদের হাত ধরেছে। এমন দ্বিচারিতাকে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ কি স্বীকৃতি দেবে? একদিকে কাকা ত্বহা সিদ্দিকীর আশীর্বাদের হাত রয়েছে তৃনমূলের মাথার ওপর, অন্যদিকে ভাইপো আব্বাস আসন-সমঝোতা করেছে বাম-কংগ্ৰেস জোটের সঙ্গে। এইভাবেই গোটা পশ্চিমবঙ্গের তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ সমাজের উপর একাধিপত্য কায়েম করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফুরফুরা শরীফ। সুপরিকল্পিতভাবে। কংগ্রেস, সিপিএম, তৃনমূল—সব তথাকথিত সেক্যুলার দলই একই পথে গমন করে ঢুকে পড়েছে ফুরফুরা শরীফের উঠোনে। যদিও তৃনমূল এবং বাম-কংগ্ৰেস জোট প্রাক্-নির্বাচনী পর্বে প্রকাশ্যে একে অপরের বিরোধী, কিন্তু নির্বাচনোত্তর অঙ্কের পরিপ্রেক্ষিতে যথাসময়ে বিরোধিতা পরিত্যাগ করে ‘এক হয়ে যেতে’ এই দলগুলি যে বিন্দুমাত্র সময় নেবে না তা সহজেই অনুমেয়। চটজলদি উদাহরণ মহারাষ্ট্র।
‘মুসলিম ক্রাচ’ ব্যবহার না করে বাম-কংগ্ৰেস জোটই বা পশ্চিমবঙ্গে দাঁড়াতে পারল না কেন? কারণ বামপন্থীদের এবং কংগ্রেসের ভোটেরও একটা বিরাট অংশ আসে মুসলিমদের থেকে। এইবছর সেই ভোটগুলির যেহেতু আব্বাস সিদ্দিকীর বাক্সে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তাই আইএসএফের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নিজেদের জোরে নির্বাচন লড়ার সামর্থ্য আদতে বাম-কংগ্রেসের আর নেই। তাই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে ইণ্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের হাত ধরা ছাড়া বাম-কংগ্রেস জোটের কাছে কোনো বিকল্প পথ এবার ছিল না। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে শুধুমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসই নয়, কংগ্রেস ও সিপিএমও নির্বাচনী রাজনীতিতে মুসলিম-ভোটের ওপরেই নির্ভরশীল, কিন্তু এবছর আব্বাস সিদ্দিকীর উপস্থিতি তাদের সেই ভোটব্যবসার পথ রোধ করে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন—পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম ভোটের সংখ্যা এত বেশী কেন যাতে সমস্ত তথাকথিত সেক্যুলার দলগুলি মুসলিম ক্রাচে ভর দিয়ে নির্বাচনী সফরে নামে? অভিযোগ হল— মিথ্যা পরিচয় দিয়ে ও ভুয়ো দলিল দেখিয়ে নির্বাচনের সময় পশ্চিমবঙ্গে অবাধে ভোট দেয় অবৈধ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীরা আর এইটি হ’ল পশ্চিমবঙ্গের একটি ন্যক্কারজনক ‘ওপেন-সিক্রেট’। একটি ইসলামিক দেশের সীমান্তবর্তী রাজ্য হওয়ার এমত কুফল পশ্চিমবঙ্গ ভুগছে তার জন্মলগ্ন থেকেই।
তৃনমূলসহ বেশ কিছু মানুষ বিশ্বাস করেছিলেন যে এআইএমআইএমের সমর্থন নিয়ে গড়ে ওঠা ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট আদতে বিজেপির একটি চক্রান্ত কারণ বিজেপি চেয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম ভোট ভাগ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোটব্যাঙ্কে ভাঙ্গন ধরাতে। এইধরণের অনুমান অনেকের কাছেই বিশ্বাসযোগ্য হয়েছিল কারণ মুসলিম ভোট ভাগ হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোটব্যাঙ্ক নিশ্চিতভাবেই দুর্বল হয়। কিন্তু ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের সাথে বাম-কংগ্রেস জোট আনুষ্ঠানিকভাবে আসন-সমঝোতা ঘোষণা করার পর একদিকে যেমন ‘বিজেপির চক্রান্ত’ জল্পনাটি তার গুরুত্ব হারিয়েছে অন্যদিকে আসন্ন নির্বাচনও আরও বেশী জমজমাট এবং আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। রাজ্যের নির্বাচন-পরবর্তী অবস্থা কেমন হবে তা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের উপর। কোনও একটি দল সুস্পষ্ট একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে তৃনমূল + কংগ্রেস + সিপিএম + আব্বাস + ত্বহা সিদ্দিকীর অনুগামীরা সহ সম্পূর্ণ মুসলিম সংগঠনের একটি সম্মিলিত জোট যে তৈরি হয়ে যেতে পারে, তা অনুমান করতে বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার পড়ে না। পশ্চিমবঙ্গের আকাশে এ এক ঘোর অশনি সংকেত। এমন একটি জোটের থাবার মধ্যে পড়লে পশ্চিমবঙ্গকে মুখোমুখি হতে হবে আরও ভয়াবহ রকমের আর্থ-সামাজিক ও সুরক্ষা সংক্রান্ত সঙ্কটের। তাই আসন্ন নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ভাগ্য নির্ধারনের আদত চাবিকাঠিটি রয়েছে রাজ্যের অমুসলিমদের হাতেই। তাঁরা স্থির করবেন রাজ্যের হিন্দুরা মাথা উঁচু করে বাঁচবেন নাকি পালিয়ে বাঁচবেন।
দেবযানী ভট্টাচার্য্য
Debjani Bhattacharyya