সাম্প্রতিক অতীতের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে রাজধানী দিল্লি। করোনার প্রভাবে নাজেহাল অবস্থা দিল্লির। অক্সিজেনের অভাব, নেই বেড। এসবের মধ্যেই দিল্লির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে কার্যত সব ক্ষমতায় কেড়ে নিল কেন্দ্র। কার্যকর হয়ে গেল গভর্নমেন্ট অফ ন্যাশনাল ক্যাপিটাল টেরিটরি অফ দিল্লি (সংশোধনী) আইন ২০২১ বা এনসিটি আইন ২০২১ (National Capital Territory of Delhi Amendment Act)।
বুধবার কেন্দ্রের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মঙ্গলবার থেকেই বিতর্কিত এই আইন রাজধানীতে কার্যকর করা হয়েছে। যার অর্থ হল, আর স্বাধীনভাবে নিজেদের মতো কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার। মন্ত্রিসভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হলেও অনুমতি লাগবে লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বৈজলের। অর্থাৎ বকলমে দিল্লি সরকারের আর স্বাধীনভাবে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকল না। সবটাই চলে গেল লেফটেন্যান্ট গভর্নরের হাতে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল ক্ষমতায় আসার পর দিল্লিকে পূর্ণরাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে সরত হয়েছিলেন। সেটা তো তিনি পেলেনই না। উলটে যা ক্ষমতা ছিল, তাও খর্ব করা হল। তাও এমন একটা সময়, যখন দিল্লিতে কোভিড পরিস্থিতি ভয়াবহ। এই অবস্থায় হঠাত ক্ষমতার এই ‘হস্তান্তর’ আসলে কোভিডের (COVID-19) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দিল্লি সরকারকে আরও অসহায় করে দিল।
[আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় আসরে খোদ প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সুপ্রিম কোর্টে সাফাই কেন্দ্রের]
প্রসঙ্গত, গত ২২ মার্চ লোকসভায় পাশ হয়েছিল এনসিটি বিল (NCT Bill)। তার দিন দুই পরেই রাজ্যসভায় বিলটি পাশ হয়ে যায়। রাষ্ট্রপতিও সই করে বিলটিকে আইনে পরিণত করেন। ২৭ এপ্রিল থেকে সেটি কার্যকর করল কেন্দ্র। বিলটি পাশ হওয়া নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক কম হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের প্রতিক্রিয়া ছিল,“গণতন্ত্রের দুঃখজনক দিন আজ। কিন্তু আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। বাধা এলেও কাজ করে যাব।” আপের পাশাপাশি কংগ্রেস (Congress), তৃণমূলও এর বিরোধিতা করে। কিন্তু লাভের লাভ কিছু হয়নি। একপ্রকার অনড় মনোভাব দেখিয়েই বিলটি আইনে পরিণত করে কেন্দ্র।