সিবিআই তদন্ত পঞ্চায়েত ভোটেও, দুই প্রার্থীর নথি বিকৃতির অভিযোগ শুনে নির্দেশ বিচারপতি অমৃতা সিন্‌হার

নির্বাচনী নথি বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছিল রাজ্য সরকারের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে। ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও)-র বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র বিকৃত করার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দুই প্রার্থী। সেই মামলায় বুধবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিন্‌হা। নির্বাচনী নথি বিকৃত করার অভিযোগ সংক্রান্ত এই মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্ত করার নির্দেশ দিল উচ্চ আদালত।

বিচারপতি সিন্হার নির্দেশ, আগামী ৭ জুলাই তদন্তের রিপোর্ট আদালতে পেশ করতে হবে সিবিআইকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাওয়া উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের কাশ্মীরা বিবি, ওমজা বিবির মনোনয়নপত্র বিকৃত করার অভিযোগ ওঠে ওই বিডিও-র বিরুদ্ধে। মামলাকারীদের অভিযোগ, নথি বিকৃত করার ফলেই স্ক্রুটিনি থেকে বাদ চলে যায় এই প্রার্থীদের নাম। বিডিও-র কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েও কাজ হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে।

এর আগে পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ বহাল রেখে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিন্হা। কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলাতেও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে বলে যে রায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় দিয়েছিলেন, এজলাস বদলালেও সেই রায় বহাল রাখেন বিচারপতি সিন্‌হা।

রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেছিলেন বিরোধীদের একাংশ। সেই মামলার শুনানিতে বুধবার হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্‌হা বলেন, ‘‘অশান্তি, রক্তপাত, জীবনহানি হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’’ একই সঙ্গে বিচারপতি সিন্‌হা তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, অশান্তির জন্য যদি কোনও প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে না পারেন, তবে তাঁদের অতিরিক্ত সময়ও দেওয়া উচিত কমিশনের।

বুধবার এই নিয়ে বিরোধীদের একটি মামলার শুনানি ছিল হাই কোর্টে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রার্থীদের নাম কেন নেই এই প্রশ্ন তুলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল আইএসএফ এবং বামেরা। আদালতকে তারা জানায়, মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ শেষ। এমনকি, স্ক্রুটিনির কাজ সম্পূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও প্রার্থীদের নাম কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে না। এই প্রসঙ্গেই মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে ভাঙড়ে অশান্তি, বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়া এবং মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করার কথাও শুনানিতে টেনে আনেন মামলকারীরা। সে প্রসঙ্গেই বিচারপতি সিন্‌হা মন্তব্য করেন, ‘‘একটি নির্বাচন ঘিরে এত অভিযোগ। এটা রাজ্যের পক্ষে লজ্জার! রাজ্যের উচিত, আদালতের নির্দেশ মতো আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। তা না হলে বা অশান্তি, রক্তপাত, জীবনহানি হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.