আজ বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ও মন্ত্রিপরিষদের বৈঠককে ঘিরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদলের জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেতে পারেন এমন কয়েকজনের নাম নিয়ে জল্পনা চলছে। গত কয়েকদিন ধরেই দিল্লিতে রয়েছেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ও নিশীথ প্রামানিক। সৌমিত্র খাঁ ও অর্জুন সিং একাধিকবার দেখা করেছেন দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে। এত সবের মধ্যেও রাজনীতির আনাচে-কানাচে নাম শোনা যাচ্ছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও জন বার্লার। ঘনিষ্ঠ মহলে এঁরা প্রত্যেকেই মন্ত্রিসভার সদস্য হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তবে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদল হয় কিনা এবং তাতে বাংলা থেকে আদৌ কেউ খায় পান কিনা, তা জানতে অপেক্ষা করতেই হবে।
সামনেই উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাব সহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদল হতে পারে বলে সূত্র জানাচ্ছে। আগামী উনিশে জুলাই থেকে সংসদের অধিবেশন মন্ত্রিসভায় রদবদল করতে হলে আগামী দু-একদিনের মধ্যেই তা করতে হবে। কারণ যারা নতুন মন্ত্রী হবেন তাদের দায়িত্ব বুঝে নেওয়া দপ্তর সম্পর্কে সম্যক ধারণার জন্য অন্তত ১৫ দিন সময়ের প্রয়োজন হয়।
বুধবারের এই বৈঠকে সমস্ত পূর্ণমন্ত্রী, স্বতন্ত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এবং রাষ্ট্রমন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন। সবদিক থেকেই এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সূত্রে ভরসা রেখে বলা যেতে পারে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদের এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রিসভার মন্ত্রীদের এবং মন্ত্রকের যাবতীয় কাজ পর্যালোচনা করবেন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মোদি অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করেছেন। বিস্তারিত আলোচনায় প্রত্যেক মন্ত্রী ও তার দপ্তরের কাজকর্মের হিসেবে নিয়েছেন। স্পষ্টতই, আজকের বৈঠকেও সমস্ত মন্ত্রীদের দপ্তরের কাজকর্ম পর্যালোচনা করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। এবং তার ভিত্তিতেই আগামী দিনে সরকারের গতিপথ নির্ধারণ করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী।সূত্রের মতে, আজকের বৈঠকে বিশেষত সড়ক ও পরিবহন, অসামরিক বিমান চলাচল এবং টেলিকমের মতো মন্ত্রকের কাজ বিশেষ ভাবে পর্যালোচনা করা হবে। আজকের বৈঠকে করোনার বিরুদ্ধে সামগ্রিক লড়াইয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পর্যন্ত যে সমস্ত পদক্ষেপ করেছে, মন্ত্রীদের সামনে বিস্তারিতভাবে তা উপস্থাপন করা হবে।
এ ছাড়াও দেশজুড়ে করোনা টিকাকরণ নিয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে কতদূর অগ্রগতি হয়েছে এবং ভবিষ্যতের জন্য তার রোডম্যাপ কী, তা মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সামনে তুলে ধরা হবে। দেশজুড়ে গণ টিকাকরণ কর্মসূচিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে মন্ত্রীদের করণীয় বুঝিয়ে দেওয়া হবে।প্রসঙ্গত, করোনার কারণে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলেছে। স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ বহুগুণ বেড়েছে। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দপ্তর ও মন্ত্রককে আরো সক্রিয় করে কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রহণযোগ্যতা কীভাবে বাড়ানো যায়, সে ব্যাপারে পরামর্শ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।উল্লেখ্য, আগামী বছর উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব-সহ ৫টি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে কেন্দ্রীয় সরকারের ছোট ও বড় সমস্ত মন্ত্রীদের জবাবদিহির ক্ষেত্রে প্রস্তুত রাখতে চাইছেন মোদি। আরো ভালো করে বললে বলা যেতে পারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিকে তৃণমূল স্তরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য উৎসাহ দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।অন্যদিকে, আগামী ১৯ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। চলবে ১৩ ই আগস্ট পর্যন্ত। প্রায় একমাস ব্যাপী সংসদের এই অধিবেশনে বিরোধী দলগুলো সরকারকে অনেক বিষয়ে চেপে ধরার চেষ্টা করতে পারে। বিশেষত করোনা মোকাবিলায এবং টিকাকরণকে ইস্যুতে বিরোধীরা ঝড় তুলতে পারেন সংসদে। তাই সময়ের আগেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুতি সেরে নিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি।