তিন দফার ভোটে ৬৩-৬৮ আসনে জয়লাভ করবে বিজেপি : অমিত শাহ

পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যেই বিধানসভা নির্বাচনের তিন দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তিন দফায় ভোটগ্রহণ হয়েছে ৯১টি বিধানসভা আসনে। এই ৯১টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৬৩ থেকে ৬৮টি আসনে জয়লাভ করবে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। শুক্রবার অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন কলকাতার হোটেল হিন্দুস্থান ইন্টারন্যাশনালে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সাংবাদিক সম্মেলনে অমিত শাহ বলেছেন, “তিন-দফার ভোটে পশ্চিমবঙ্গের জনগণের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সমর্থন পেয়েছে বিজেপি। অনুমান করা যাচ্ছে, এই তিন-দফায় ৬৩ থেকে ৬৮টি আসনে জয়লাভ করবে বিজেপি।”
কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর অপব্যাবহার করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে অমিত শাহ বলেছেন, “উনি বারবার বলছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ইশারায় সিআরপিএফ নির্বাচনে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। নির্বাচনী দায়িত্বে যখন কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়, তখন তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে থাকে না। নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে। উনি সহজ বিষয়টি যদি না জেনে থাকেন তাহলে আমি মেনে নেব যে উনি অস্থির হয়ে পড়েছেন।” তৃণমূলকে খোঁচা দিয়ে অমিত শাহ বলেছেন, “তৃণমূলের বক্তৃতা ও কাজ থেকেই তাঁদের হতাশার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। আমি নিজের জীবনে এমন একজন নেতা অথবা মুখ্যমন্ত্রীকে দেখিনি যিনি বলছেন সিআরপিএফ-কে ঘেরাও করো। তিনি কী জনগণকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।” বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে এনে তৃণমূলকে আক্রমণ করে অমিত শাহ বলেছেন, “আমাদের কার্যকর্তাদের উপর লাগাতার হামলা হয়েছে। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপর হামলা হয়েছে এবং এই ঘটনার বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও নেতার কোনও বক্তব্য পর্যন্ত নেই। ওঁরা মৌন থেকে এই ধরনের কাজকে সমর্থন করছেন। মোদীজী যে প্রকল্পগুলি গরিব মানুষের জন্য করেছেন, তা মানুষের কাছে পৌঁছতে দেননি দিদি। সেটা আয়ুষ্মান ভারত বা কিষাণ সম্মান নিধি বা প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা, যাই হোক না কেন, তার থেকে মানুষকে বঞ্চিত করেছেন।”সম্প্রতি নির্বাচনী জনসভায় সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে মমতা বলেছিলেন, ‘‌আমি আমার সমস্ত সংখ্যালঘু ভাই–বোনেদের অনুরোধ করছি ভোট ভাগাভাগি হতে দেবেন না।’‌ মমতার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এদিন অমিত শাহ বলেছেন, “তৃণমূল যেভাবে সংখ্যালঘু ভোটারদের এক হয়ে তৃণমূলের পক্ষে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করছে, তা দেখে বোঝাই যাচ্ছে সংখ্যালঘু ভোটও তাঁদের হাত থেকে চলে যাচ্ছে।” অমিত শাহ এদিন কলকাতায় বসে দাবি করেছেন, “কলকাতা থেকেই সূচনা হবে সোনার বাংলা অভিযান। কলকাতা সিটি অফ জয় হিসেবেই থাকবে, তবে আমরা কলকাতাকে সিটি অফ ফিউচার-এ রূপান্তরিত করার চেষ্টা করব। ইনফ্রাস্ট্রাকচার শক্তিশালীকরণের জন্য আমরা ২২ হাজার কোটি টাকার কলকাতা উন্নয়ন তহবিল তৈরি করব।” অমিত শাহ আরও বলেছেন, “উত্তরবঙ্গের মানুষের সঙ্গে দিদি সবথেকে বেশি অন্যায় করেছেন। সেখানকার রাজবংশী, গোর্খা আর চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য দিদি ১০ বছরেও কিছু করেননি। বাংলার প্রত্যেক পরিবারের একজন করে ব্যক্তির কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার সংকল্পবদ্ধ বিজেপি। উত্তরবঙ্গে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং এইমস তৈরি করব আমরা।” অমিত শাহ এদিন আশ্বস্ত করে বলেছেন, “কালীঘাটের আদিগঙ্গাকে সংস্কার করে আবার নতুনভাবে পুনরুজ্জীবিত করা হবে। সেখানে নোংরা ফেলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। তৃণমূল আমলে বাংলা সবথেকে বেশি পিছিয়ে গিয়েছে। মমতার আমলে বেড়েছে দুর্নীতি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.