BJP Meeting: ৩ থেকে ৭৭, আত্মসমীক্ষা নয়, আত্মতৃপ্তির টনিক বিজেপি রাজ্যকমিটি বৈঠকে

রাজ্য কমিটির বৈঠকে কার্যত ব্যর্থতার কারণ খোঁজা বা আত্মসমীক্ষায় ঢুকল না বিজেপি। প্রকাশ্যে কোনও ফল পর্যালোচনা হল না। বরং তুলে ধরা হল দলের উত্থানগাঁথা। ৩-৭৭ এ পৌঁছেছে দল, এই বার্তাকে সামনে রেখে কার্যত রাজ্য নেতাদের পিঠ চাপড়ালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা।

২০০ আসনের স্বপ্ন নিয়ে লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছিল বিজেপি। কিন্তু স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছে। হাতে এসেছে ৭৭টি  আসন। তার মধ্যে আবার দু’জন ইতিমধ্যে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। দলই ছেড়ে দিয়েছেন মুকুল রায়। অর্থাৎ সব মিলিয়ে এখন হাতে রয়েছে ৭৪ টি আসন। বাম-শূন্য বিধানসভায় দু’বারের সরকারের সঙ্গে লড়াই করে প্রধান বিরোধী  হিসেবে ৭৪ আসন নিয়ে উঠে আসাকে অ্যাচিভমেন্ট হিসেবে দেখতে চাইছেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা।

রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা সংগঠনকে চাঙ্গা রাখতে ব্যর্থতা ভুলে ইতিবাচক দিক তুলে ধরা ছাড়া বিজেপির আর কোনও উপায়ও নেই। তার কারণ এই বৈঠকে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাও ছিলেন। কেন্দ্রীয় নেতারাই বিজেপি বাংলা ভোট স্ট্র্যাটেজি সাজিয়েছিলেন। পরাজয়ের কথা বললে আসলে তাঁদের ব্যর্থতার খতিয়ান ও তুলে ধরতে হয়। এই কারণেই বিজেপি চাইছে ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে সামনের দিকে তাকাতে। কেন এই বিষয়ে সবার মুখে কুলুপ, প্রশ্ন করতেই দলের নেতারা বললেন,অতীতে তো পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছিল। যদিও তথ্য বলছে, অতীতের বৈঠকে এই নেতারাই বলেছিলেন এখনও বুথওয়ারি ফলাফল আসেনি।

উল্লেখ্য আসি আসি করেও শেষমেশ বিজেপির এই বৈঠক শেষমেশ এড়িয়েই গিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে নিয়ে নানা মন্তব্য শোনা গিয়েছে এই বৈঠকে আগত নেতাদের মুখে। তবে সামগ্রিক ভাবে  তৃণমূল থেকে আসাদের নিয়ে দলের নীতিগত অবস্থান কী হবে , এই নিয়েও কেউ রা কাড়লেন না এই মিটিংয়ে। ভোট মিটেছে, এখনই সময় স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়ার, তবু কেন সকলে চুপ! রাজনৈতিক মহলের ব্যখ্য, এদিন রাজীব না এলেও সব্যসাচী দত্ত, জটু লাহিড়িরা এসেছিলেন। তাঁদের এই উপস্থিতিকে সম্মান জানাতে চায় বিজেপি। তাছাড়া পরিষদীয় দলের বিভিন্ন কমিটি থেকে শুরু করে সাংগঠনিক নানা জায়গায় অনেকেই বড় পদ পেয়েছেন অন্য দল থেকে আসারা। গ্রহণযোগ্যতা, অভিজ্ঞতার নিরিখেই এই পদে আসীন তাঁরা। তাঁদের বিরূপ সমালোচনা কার্যত অসম্ভব।

শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য স্রোতের বিপরীতেই হাঁটলেন। ব্যর্থতা নিয়ে বিধাসভাওয়ারি পর্যালোচনার কথা আনলেন শুভেন্দু। চাইলেন, বুথ লেভেলে আলোচনা হোক।

সামনেই উপনির্বাচন এবং পৌরসভা নির্বাচন। বিজেপি ঘর গোছানোর আগে নির্বাচন চায় না। কোভিড তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা থাকায় আদৌ উপনির্বাচন হবে কিনা ঠিক নেই। কিন্তু যদি হয় সেক্ষেত্রে নূন্যতম প্রস্তুতি দরকার। সেই কারণেই  সাংগঠনিক বিচ্যুতিতে ফোকাস করতে চাইছেন শুভেন্দু অধিকারী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.