আজ বিজেপিতে ‘মেগা’ যোগদান, দলবদলের জল্পনায় প্রার্থী সরলাকে সরাল তৃণমূল!

সাতসকালেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদির ব্রিগেড সমাবেশের পরদিনই, সোমবার ‘মেগা’ যোগদান পর্ব রয়েছে। আর দিলীপের এই মন্তব্যের পরপরই জল্পনা তৈরি হয়েছে, সেই যোগদান পর্বে কারা কারা আসতে চলেছেন গেরুয়া শিবিরে? আর বিজেপিতে যোগদানের জল্পনার কারণেই সোমবার প্রার্থীপদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল মালদার হাবিবপুরের তৃণমূল প্রার্থী সরলা মুর্মুকে। যদিও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তাঁকে প্রার্থীপদ থেকে সরিয়েছে তৃণমূল। তাঁর জায়গায় প্রার্থী করা হয়েছে প্রদীপ বাস্কেকে। অবশ্য বিজেপি সূত্রে দাবি, সোমবার কলকাতায় বিজেপির হেস্টিংস অফিসে দিলীপ ঘোষের হাত ধরে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাবেন তিনি। শুধু সরলা একাই নন, মালদার প্রায় ১৪ জন ‘প্রভাবশালী’ নেতার বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বাংলায় এবার নতুন ট্রেন্ড চালু হতে চলেছে। টিকিট না পাওয়ার জন্য দলবদল করা এক রকম, কিন্তু টিকিট পেয়েও দল ছাড়া ভোটবঙ্গে নতুন ধারার সংযোজন করল।

রবিবারই রাজ্যে এসে সোনার বাংলার স্বপ্ন ফেরি করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ব্রিগেড সমাবেশ থেকে দাবি করেছেন, আর কোনও অন্যায় নয়, এবার ‘খেল খতম’ হতে চলেছে ‘দিদির’ দলের। গত শনিবারই প্রথম দু’দফার প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করেছে বিজেপি। আর সেই ৫৭ জন প্রার্থীর অধিকাংশই দলীয় নেতা। এদিকে ২৯১ আসনে প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপর থেকেই দিকে-দিকে তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়েছে ক্ষোভ। বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে মনস্থির করে ফেলেছেন মমতার দীর্ঘদিনের ‘ছায়াসঙ্গী’ সোনালি গুহও। তাঁর যোগদানও আজই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ৩০ বছরের সঙ্গীকে টিকিট দেন না। আসলে দিদিমণি বুঝতে পেরেছেন, এবার চলে যাচ্ছেন। আমরা তৃণমূলকে ভাঙছি না, তৃণমূলকে ভাঙার জন্য তৃণমূলই যথেষ্ট। আমাদের দলে আসতে চাইলে আমরা বেছে -বেছে তাঁদের নেব।’

বিজেপি সূত্রে আরও খবর, তৃণমূল ছেড়ে আজই গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাতে চলেছেন বাঁকুড়ার বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক শম্পা দরিপা। তাঁকে এবার টিকিট দেয়নি দল। প্রার্থীতালিকা ঘোষণার দিনই দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন শম্পা। তখনই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল, শম্পার গন্তব্যও হতে পারে বিজেপি। শেষমেশ তেমনটাই হতে চলেছে বলে খবর। এবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ৫ মন্ত্রী-সহ ৬৪ জন তৃণমূল বিধায়ক। তাঁদের অনেকের বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। সেই তাঁদের অনেকেই এবার বেছে নিচ্ছেন পদ্ম শিবিরকে।

জল্পনা তালিকায় রয়েছে দীনেশ বাজাজের নামও। দীনেশ তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য ছিলেন। গত শুক্রবার প্রার্থীতালিকা সামনে আসার পরেই দীনেশ মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যদিও তাঁর যুক্তি, টিকিট না পাওয়ার কারণে তিনি দল ছাড়ছেন না। কারণ ২০১১ এবং ২০১৬ সালেও তো তিনি টিকিট পাননি। তাঁর কথায়, বহিরাগত তত্ত্বে ক্ষুব্ধ হয়েই তিনি পদ্মপথে।

আবার ১৯৯৮ সাল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী স্মিতা বক্সীও টিকিট পাননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোড়াসাঁকো কেন্দ্রে বেছে নিয়েছেন বিবেক গুপ্তকে। যুক্তি একটাই, হিন্দি বলয়ে বিজেপির ভোট আটকানো। ২০১৬ সালে এই কেন্দ্র থেকেই রাহুল সিনহাকে হারিয়েছিলেন স্মিতা। গুঞ্জন টিকিট না পেয়ে এবার স্মিতা বক্সীও নাকি যোগাযোগ রাখছেন মুকুল রায়ের সঙ্গে। তাকেও নাকি দেখা যেতে পারে পদ্ম পথেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.