আগের তুলনায় সামান্য কমলেও, মঙ্গলবার দিনভর অশান্তির মধ্যেও তৃতীয় দফার ভোটে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই সাড়া দিয়েছেন বাংলার মানুষ। নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে তেমনই ইঙ্গিত মিলল। কমিশন জানিয়েছে, মঙ্গলবার সব মিলিয়ে রাজ্যে ৮০.৫৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। যদিও আগের দু’দফার তুলনায় তা খানিকটা কম। প্রথম দু’দফায় রাজ্যে ভোটের পরিমাণ গড়ে ৮৫ শতাংশ ছাপিয়ে গিয়েছিল।
মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ চলাকালীন সবচেয়ে বেশি হিংসার সাক্ষী থেকেছে হাওড়া এবং হুগলি। দুই জেলাতেই কার্যত পেশীশক্তির লড়াই হয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপি-র মধ্যে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে ইটবৃষ্টির মধ্যে মাথায় হেলমেট পড়ে বুথ পরিদর্শনে যেতে হয় উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী নির্মল মাজিকে। ইটের আঘাতে আহত হন তাঁর দেহরক্ষী। অন্য দিকে, উলুবেড়িয়া দক্ষিণে আক্রান্ত হন বিজেপি প্রার্থী পাপিয়া অধিকারী। সেখানে তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে তাঁকে চড় মারার অভিযোগ ওঠে। তার পরেও ৮৩.০৫ শতাংশ ভোট পড়ে হাওড়ায়।
তবে হাওড়ার তুলনায় হিংসায় অনেকাংশেই এগিয়ে ছিল হুগলি। গোঘাটে বুথে ভোট দিয়ে ফেরার পথে মৃত্যু হয় এক তৃণমূল নেতার। বিজেপি-র লোকজন তাঁকে ধাক্কা মেরে রাস্তায় ফেলে দেন এবং তাতেই গুরুতর আঘাত পেয়ে তাঁর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করে তৃণমূল। আরামবাগ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল খাঁর উপর একাধিক জায়গায় হামলা হয়। তার পরেও দিনের শেষে দেখা যায় ৮৩.৭৫ শতাংশ ভোট পড়েছে সেখানে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় লড়াইটা তৃণমূল বনাম বিজেপি-র পরিবর্তে, তৃণমূল বনাম আইএসএফ হয়ে দাঁড়ায়। বোমা-গুলি নিয়ে আইএসএফ সন্ত্রাস চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তৃণমূলের শওকত মোল্লা। তাঁকে বুথে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন। শকুন্তলায় আবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে আইএসএফ। পানাকুয়া, সাতগাছিয়াতেও দফায় দফায় অশান্তির খবর এসেছে। দিনের শেষে দেখা যায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৭৭.৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে।
বাংলার পাশাপাশি মঙ্গলবার পুদুচেরি, তামিলনাড়ু, কেরল এবং অসমেও ভোট ছিল। পুদুচেরি, তামিলনাড়ু এবং কেরলে যদিও একটি দফাতেই ভোট হয়েছে। তাতে দিনের শেষে পুদুচেরিতে ভোট পড়েছে ৮১.৬৯ শতাংশ। তামিলনাড়ুতে ৭২.৭৮ শতাংশ ভোট পড়েছে এবং কেরলে ভোট পড়েছে ৭৪.০৪ শতাংশ।