রাজ্যে তৃতীয় দফার ভোটের কয়েক মুহূর্ত আগে তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে মিলল একাধিক ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট। হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের তুলসিবেড়িয়া গ্রামের এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। গ্রামবাসীরা বেশ কিছু ক্ষণ ওই তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘিরে রাখেন। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশ লাঠি চালায়। ওই নেতার বাড়িতে যে সেক্টর অফিসার ইভিএম নিয়ে এসেছিলেন বলে অভিযোগ তাঁকে নির্বাচন কমিশন সাসপেন্ড করেছে বলে জানা গিয়েছে।
অভিযোগ, সোমবার মাঝরাতে গাঁতাইত পাড়ায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা গৌতম ঘোষের বাড়িতে ইভিএম ও ভিভিপ্যাটের সেট পৌঁছে দেন সেক্টর অফিসার। এই খবর জানাজানি হতেই ওই তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘিরে রাখেন গ্রামবাসীরা। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। সেখানে উলুবেরিয়া ২ নম্বর ব্লকের বিডিও এলে বিক্ষোভের মুখে পড়েন। এর পর এলাকায় বিশাল পুলিশবাহিনী আসে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জও করে।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত সেক্টর অফিসারের নাম তপন সরকার। তাঁর দাবি, যে বাড়িতে তিনি ইভিএম রাখতে গিয়েছিলেন সেটি যে তৃণমূল নেতার বাড়ি তা তিনি জানতেন না। তাঁর আরও দাবি, “ইভিএম আর ভিভিপ্যাটগুলো নিয়ে ফিরতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল। আমাদের অবস্থার কথা রিটার্নিং অফিসারকে জানানোয় তিনি রাস্তায় রাত কাটাতে বলেন। আমি আমার দুই সহকর্মীর কথা শুনে স্থানীয় এক বাসিন্দার বাড়ি রাত কাটাতে যাই। সেটি যে তৃণমূল নেতার বাড়ি তা আমি জানতাম না।”
উলুবেড়িয়া উত্তরের বিজেপি প্রার্থী চিরন বেরার অভিযোগ, রিগিং করতে পরিকল্পিতভাবেই এগুলো আনা হয়েছিল। জানা গিয়েছে, ৪টি ইভিএম এবং ৪টি ভিভিপ্যাট পাওয়া গিয়েছে ওই তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে। যদিও গোটা ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের অরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ঘটনা নিয়ে অভিযোগ যায় নির্বাচন কমিশনে। তার পরই অভিযুক্ত ওই সেক্টর অফিসারকে সাসপেন্ড করে কমিশন। তার জায়গায় নতুন সেক্টর অফিসার এসেছেন। নির্বাচনে কমিশন এ ব্যাপারে বলেছে, ‘‘১৭৭ নম্বর বিধানসভা কেন্দ্র উলুবেড়িয়া উত্তর ১৭ সেক্টরের অফিসার অতিরিক্ত ইভিএম নিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ঘুমাতে গিয়েছিলেন। এ কাজের মাধ্যমে কমিশনের নির্দেশ গুরুতরভাবে অমান্য করা হয়েছে। ওই অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁকে শাস্তিও দেওয়া হবে।’’ওই ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটগুলি ভোটের কাজে আর ব্যবহার করা হবে না বলে জানানো হয়েছে কমিশনের তরফে।