বীরভূমের দুবরাজপুরে বিজেপি কর্মীর রহস্য মৃত্যু। ভোররাতে পুকুর পাড় থেকে উদ্ধার দেহ। ভোটের আবহে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। ওই ব্যক্তিকে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
মৃত ব্যক্তির নাম পতিহার ডোম (৩৭)। দুবরাজপুর ব্লকের লোবা গ্রাম পঞ্চায়েতের ফকিরবেরা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। মঙ্গলবার দিনের আলো ফোটার আগে এলাকার একটি পুকুরের পাড় থেকে তাঁর নিথর দেহ উদ্ধার হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, রাতে বাড়িতেই ছিলেন ওই ব্যক্তি। একটা ফোন এলে বেরিয়ে যান। তার পর আর ফেরেননি। ভোররাতে তাঁর নিথর দেহ দেখতে পান গ্রামের বাসিন্দারা। মৃত ব্যক্তির মুখে ক্ষত ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের ধারণা, কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল তাঁকে।
বিজেপি-র দাবি, তাদের সক্রিয় কর্মী ছিলেন পতিহার। সেই জন্যই ভোটের আগে তাঁকে খুন হতে হয়েছে। সকালে পুলিশ দেহ তুলে নিয়ে যেতে এলে, দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বিজেপি কর্মী এবং গ্রামের বাসিন্দারা।
বিজেপি-র দুবরাজপুরের মণ্ডলের সভাপতি সাধন ধীবর বলেন, ‘‘লোবায় বিজেপি-র ভিত মজবুত। তৃণমূলের পায়ের নীচের মাটি সরে গিয়েছে। তাই আমাদের কর্মী পতিহারকে রাতের অন্ধকারে খুন করেছে তৃণমূল। পায়ের নীচের মাটি সরে গিয়েছে বলেই হত্যালীলায় মেতে উঠেছে তৃণমূল। আমরা পরিষ্কার ভাবে পুলিশ-প্রশাসনকে জানাতে চাই, সঠিক তদন্ত হোক। তৃণমূলের যে নেতারা পতিহারকে খুন করেছেন, তাঁদের কড়া শাস্তি দিতে হবে।’’
পতিহারের দেহ আটকে রেখে মঙ্গলবার বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের মতে, ভয় দেখিয়ে পতিহারের স্ত্রীকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। তাঁকে সামনে আনলেই ছবিটা পরিষ্কার হয়ে যাবে বলেও দাবি করেন সাধন। এলাকার বুথ সভাপতিকেও সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মৃতের দাদা নকুল বলেন, ‘‘তৃণমূলের লোকেরাই মেরে ফেলে দিয়েছে। মিটিং করে কাল রাতে বাড়ি গিয়ে ভাত খেয়েছিল। তার পর ফোন নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। এর পর পুকুর পাড়ে দেহ মেলে। গিয়ে দেখি, উপুর হয়ে পড়ে রয়েছে। মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়েছে।’’
তবে বিজেপি-র অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের তরফে বলা হচ্ছে, বিজেপি-র গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। পাশাপাশি পারিবারিক বিবাদের জেরেও এই খুন হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছে তারা। কিন্তু তাদের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগাযোগ নেই।