বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুরে ভোটের আগে অতিরিক্ত আরও ১ জন পুলিশ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করল কমিশন। এ বারের ভোটে ১ জন পুলিশ পর্যবেক্ষককে দুই বা তার বেশি আসনের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যারাকপুরের ক্ষেত্রে বাড়তি আরও একজন পুলিশ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হল। ওই পর্যবেক্ষক শুধুমাত্র ব্যারাকপুরের ঘটনা নিয়ে কমিশনকে রিপোর্ট দেবেন।
শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে ষষ্ঠ দফার ভোটে কয়েকটি এলাকাকে ‘বিশেষ তালিকাভুক্ত’ করেছে কমিশন। ভোটের দিন ওই এলাকাগুলিতে অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছে তারা। সে জন্যই উত্তেজনাপ্রবণ এলাকাগুলিকে বিশেষ তালিকায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার আসন।
২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ৪ জেলার ৪৩ আসনে ভোটগ্রহণ রয়েছে। মঙ্গলবার ওই জেলাগুলির জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব। বৈঠকে কমিশন ৪৩ আসনের মধ্যে বেশ কয়েকটি আসনকে ‘বিশেষ তালিকাভুক্ত’ করা হয়। বিশেষ তালিকায় রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর, ভাটপাড়া, জগদ্দল, বীজপুর, স্বরূপনগর, আমডাঙা, উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া, ইসলামপুর, পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম, ভাতার, নদিয়ার করিমপুর, নাকাশিপাড়ার মতো আসন। এই আসনগুলিতে অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি পর্যবেক্ষক সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলেই ১০৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছে কমিশন।
চতুর্থ দফার ভোটে কোচবিহারের শীতলখুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনায় ৪ জনের মৃত্যু হয়। পঞ্চম দফার ভোটে অশান্তি এড়াতে আরও তৎপর হয়েছিল কমিশন। এর ফলে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটলেও বড় কোনও অশান্তি হয়নি। তা থেকে শিক্ষা নিয়েই ষষ্ঠ দফার ভোটে কয়েকটি আসনকে বিশেষ তালিকায় এনে আরও কঠোর হচ্ছে কমিশন। বিশেষ তালিকাভুক্ত করার পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ দেখাচ্ছে কমিশন। তাদের মতে, ওই আসনগুলিতে পূর্বে একাধিক অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। বিগত ভোটেও গন্ডগোল হয়েছে। এমনকি, নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হওয়ার পরও বারবার শিরোনামে এসেছে ওই আসনগুলি। সেখানে রাজনৈতিক হিংসা, প্রার্থীদের মারধরের মতো ঘটনাও ঘটেছে। তাই বিশেষ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ওই আসনগুলিতে বাড়তি নজর দেওয়া হবে। যাতে করে সেখানে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হয়।
অশান্তি এড়ানোর পাশাপাশি ভোটের সময় কোভিড বিধির উপরও জোর দিয়েছে কমিশন। ভোটের লাইনে দূরত্ব-বিধি বজায় রাখতেও জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। পাশাপাশি ভোট গ্রহণ শুরুর আগে বুথকে স্যানিটাইজ করার কথাও বলা হয়েছে। বিগত দফাগুলোর মতো এই দফাতেও ভোটারদের গ্লাভস ও স্যানিটাইজার দেওয়া হবে। অন্য দিকে, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সপ্তম ও অষ্টম দফার ভোট একদিনে করার দাবি জানিয়ে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠিয়েছেন বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে।