নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী সাড়ম্বরে পালন করতে চায় কেন্দ্র। সেজন্য বছরভর বিভিন্ন কর্মসূচির পরিকল্পনা ছকে ফেলা হল। সম্প্রতি কেন্দ্রের সংস্কৃতি মন্ত্রক নেতাজির পরিবারের সদস্য, নেতাজি সংক্রান্ত বিভিন্ন সংঠনের সদস্য, আইএনএ ট্রাস্ট, একাধিক ইতিহাসবিদ এবং শিক্ষাবিদকে নিয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করেছিল। যাতে নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী পালনের জন্য পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
নেতাজির (Netaji Subhash Chandra Bose) জন্মদিন অর্থাৎ ২৩ জানুয়ারি থেকেই শুরু হয়ে যাবে বছরভরের উদযাপন। বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত তো বটেই দেশের একাধিক প্রান্তে নেতাজিকে নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান করবে কেন্দ্র। সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, নেতাজি তথা আজাদ হিন্দ ফৌজের (Indian National Army) অন্য সদস্যদের লেখা পুরনো বইগুলো নতুন করে ছাপা হবে। নেতাজিকে ইয়ুথ আইকন হিসেবে তুলে ধরতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে আলাদা লেকচারের ব্যবস্থা করা হবে। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল ঘোষণা করেছেন, ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কলকাতায় নেতাজির একটি সংগ্রহশালা তৈরি করা হবে। যাতে নেতাজি সংক্রান্ত বিভিন্ন ছবি, ভিডিও, নথি একত্রিত করে প্রদর্শিত করা হবে। দিল্লির লালকেল্লায় সুভাষচন্দ্র ও আজাদ হিন্দ ফৌজের বিষয়ে সংগ্রহশালা আরও বড় করা হবে। প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে আজাদ হিন্দ ফৌজের সেনানীদের প্যারেডে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ডাকা হতে পারে। বিভিন্ন দেশের দূতাবাস বা হাই কমিশনেও পালন করা হবে নেতাজি জয়ন্তী। আলাদা করে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে নেতাজিকে নিয়ে অনুষ্ঠানও করা হবে।
বাংলার নির্বাচনের আগে নেতাজির জন্মজয়ন্তী নিয়ে কেন্দ্রের এই উৎসাহ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আসলে সম্প্রতি ভোটের কথা মাথায় রেখে সুকৌশলে বাঙালি আবেগ উসকে দেওয়ার চেষ্টার কসুর করছে না বিজেপি (BJP)। আর এই কাজটিতে গেরুয়া শিবিরের প্রধান অস্ত্র স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। গত কয়েকমাসে একাধিকবার তাঁর বিভিন্ন বক্তৃতায় উঠে এসেছে বাংলার মনিষীদের নাম। আসলে তৃণমূল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের যে বহিরাগত তকমা দিচ্ছে, তা পুরোপুরি ঝেড়ে ফেলতে চায় কেন্দ্রের শাসকদল। আর সেই লক্ষ্যে এবার তাঁদের হাতিয়ার হতে চলেছে নেতাজি আবেগ। বাংলার অন্যতম বড় ‘আইকন’কে নিয়ে সম্ভবত সেকারণেই বাড়তি উৎসাহ দেখাচ্ছে গেরুয়া শিবির।
যদিও, বিজেপি বলতেই পারে নেতাজিকে নিয়ে তাদের উৎসাহ নতুন কিছু নয়। ক্ষমতায় আসার পর সুভাষচন্দ্র সংক্রান্ত গোপন নথি প্রকাশ করেছিল মোদি সরকারই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই প্রথম নেতাজির তৈরি আজাদ হিন্দ সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই নেতাজির প্রতি শ্রদ্ধাকে ভোট রাজনীতির অংশ হিসেবে দেখতে রাজি নয় গেরুয়া শিবির।