মা হতে চেয়েছিলেন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়! সন্তান দত্তক নিতে চেয়েছিলেন বলেই দাবি ইডির। আর তার জন্য প্রয়োজনীয় অনাপত্তির শংসাপত্র (নো অবজেকশন লেটার) দিয়েছিলেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আদালতে পেশ করা চার্জশিটে এমনটাই দাবি করেছে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি)। এই সংক্রান্ত চিঠি তদন্তকারী সংস্থা অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করেছে বলেও দাবি করা হয়েছে। সোমবারই আদালতে চার্জশিট পেশ করে ইডি। তা আনন্দবাজার অনলাইনের হাতে আসার পরে তাতে প্রকাশ্যে না আসা অনেক তথ্যেরই উল্লেখ দেখা গিয়েছে। তারই মধ্যে অন্যতম অর্পিতার দত্তক নিতে চাওয়ার বিষয়টি।
প্রসঙ্গত, ইডি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশির সময়েই তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতার দক্ষিণ কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে হানা দেয়। সেখানে নগদ ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ছাড়াও বহুমূল্য গয়না এবং বিদেশি মুদ্রা বাজেয়াপ্ত করে। সেই সময়ে বহু নথিও অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নিয়ে যান ইডির আধিকারিকরা। ২২ ও ২৩ জুলাইয়ের মধ্য রাতে উদ্ধার হওয়া নথির মধ্যে এমন একটি চিঠি পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি ইডির, যেখানে অর্পিতার সন্তান দত্তক নিতে চাওয়ার ইচ্ছা এবং তার জন্য মন্ত্রী হিসাবে পার্থর শংসাপত্র দেওয়ার উল্লেখ রয়েছে।
ইডি দাবি করেছে, ওই চিঠিতে পার্থ নিজেকে অর্পিতা ‘ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধু’ বলে উল্লেখও করেছেন। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, অর্পিতা সন্তান দত্তক নিলে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। এই সার্টিফিকেট নিয়ে পার্থ জেরায় তদন্তকারীদের কী বলেছেন সে কথাও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে। ইডির দাবি, পার্থ ওই সার্টিফিকেট প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, এক জন জনপ্রতিনিধি হিসাবে তাঁর কাছে অনেকেই বিভিন্ন বিষয়ে শংসাপত্র নিতে আসেন। সেই কারণে এমন অনেক শংসাপত্র তাঁর কাছে তৈরি করা থাকে। তবে সেই শংসাপত্রের নীচে যে তাঁরই স্বাক্ষর রয়েছে সে কথা তদন্তকারীদের কাছে স্বীকার করেছেন পার্থ।
প্রসঙ্গত, সোমবার যে চার্জশিট ইডি আদালতে পেশ করেছে তাতে পার্থ ও অর্পিতার নামে বিভিন্ন জায়গায় বিপুল সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছে বলেও উল্লেখ রয়েছে। কোন দেশের কত মুদ্রা অর্পিতার হেফাজত থেকে পাওয়া গিয়েছে তারও উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে। তবে সব ক্ষেত্রেই ইডি দাবি করেছে, এই সব মুদ্রার প্রকৃত সুবিধাভোগী পার্থ।