জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন যে কেন্দ্র তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করবে। বিরোধীরা এই সিদ্ধান্তকে বিজেপির ‘হার’ হিসেবে দেখছে। রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী থেকে শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সবাই এই ঘোষণাকে কৃষকদের জয় এবং বকলমে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের হার হিসেবে দেখছেন। তবে এই সিদ্ধান্তের ঘোষণার মাঝে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মোদীর মধ্যে ‘যোগ্য রাষ্ট্রনায়ককে’ খুঁজে পেয়েছেন।
এদিন মোদীর বক্তব্য পেশের পর এক টুইট বার্তায় অমিত শাহ লেখেন, ‘কৃষি আইন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘোষণা এক দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ। নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে কৃষকদের পক্ষে এবং কৃষক স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে সব সময় সব রকমের সাহায্য করতে প্রস্তুত কেন্দ্রীয় সরকার।’ শাহ আরও লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র এই ঘোষণার জন্য গুরু নানক জয়ন্তীর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ দিনকে বেছে নিয়েছেন। এখানেই তাঁর অভিনব চিন্তাভাবনার খোঁজ পাওয়া যায়। এই সিদ্ধান্তে থেকেই বোঝা যায় প্রত্যেক ভারতীয়র কল্যাণের কথা ছাড়া প্রধানমন্ত্রী অন্য কোনও কিছু চিন্তা করেন না। তিনি একজন যোগ্য রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নজির স্থাপন করেছেন।’ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ প্রায় একবছর ধরে কৃষক এবং সরকারের মধ্যে টানাপোড়েনের পর এদিন নরেন্দ্র মোদী কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেন। মোদী এদিন বলেন, ‘এই তিনটি আইনের লক্ষ্য ছিল কৃষকদের, বিশেষ করে ছোট কৃষকদের ক্ষমতা বাড়ানো। কৃষকদের স্বার্থে আইনগুলি আমরা প্রয়োগের পরিকল্পনা করেছিলাম কিন্তু এক শ্রেণির কৃষকদের বোঝাতে পারিনি। আমি দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইছি। হায়ত আমাদের তপস্যাতেই খামতি ছিল। কাউকে দোষ দেওয়ার সময় এটা নয়। আমরা তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী সাংসদ অধিবেশনে তিন কৃষি আইন বাতিল করার ব্যবস্থা করা হবে। সকল আন্দোলনকারী কৃষককে আমি তাঁদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’
উল্লেখ্য, মোদীর আজকের এই ঘোষণা পঞ্জাবে অমরিন্দর সিংয়ের সঙ্গে তাদের জোট গঠনের রাস্তা সুগম করল। মোদীর ঘোষণার পরই তাঁকে ধন্যবাদ জানান পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশেও ফের কৃষকদের মনে নিজেদের জায়গা তৈরির একটি সম্ভাবনা তৈরি করল বিজেপি। আন্দোলন চলতে থাকলে উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক সমীকরণ যে অন্যরকম হতে পারত, তা বলাই বাহুল্য। পাশাপাশি ‘হার’ মানার মাধ্যমেই মোদী নিজের বিনম্র ভাবমূর্তি স্থাপন করার চেষ্টা করলেন, যা পরবর্তীতে বিজেপিকে সাহায্য করতে পারে রাজনৈতিক ভাবে।