পাখির চোখ একুশের বিধানসভা নির্বাচন। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১২ জানুয়ারি ফের কলকাতায় আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির শীর্ষ নেতা অমিত শাহ। হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে জনসভাও করতে পারেন শাহ। তবে এবার অমিত শাহের কর্মসূচির ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত আগাম কোনও তথ্য মেলেনি।
দিন কয়েক আগেই দু’দিনের রাজ্য সফর সেরে দিল্লি ফিরেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কলকাতায় এসে সিমলা স্ট্রিটে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িতে গিয়েছিলেন অমিত শাহ। কলকাতায় দলের রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠক সারেন শাহ।
এরপর মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে গিয়ে প্রকাশ্য জনসভা করেন তিনি। সেই সভাতেই ঘটে মেগা-দলবদল। একঝাঁক তৃণমূল বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। এরই পাশাপাশি বাম ও কংগ্রেস ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান আরও তিন বিধায়ক।
গত রবিবার শান্তিনিকেতনে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বোলপুরে শাহের রোড-শো-তে ছিল উপচে পড়া ভিড়। বিপুল জনসমাগম দেখে সেবার ভ্রূ কোঁচকাতে বাধ্য হয়েছিল বিরোধীরা। শাসকদল তৃণমূল শাহের সভায় ভিড় নিয়ে পাল্টা সমালোচনার পথ ধরে। বাইরে থেকে লোক এনে অমিত শাহের রোড-শোয়ে ভিড় বাড়ানো হয়েছিল বলে দাবি করে তৃণমূল।
যদিও তৃণমূলের টিপ্পনিতে কান দিতে নারাজ গেরুয়া ব্রিগেড। বরং গত রবিবার বোলপুরে অমিত শাহের রোড-শোকে একশোয় একশো নম্বর দিয়েছেন বিজেপি নেতারা। বাংলায় বিধানসভা ভোটে তৃণমূলকে সরিয়ে ক্ষমতা দখলে মরিয়া বিজেপি। মোদী-শাহরাও সেই লক্ষ্যেই প্ল্যান সাজিয়েছেন। সেই পরিকল্পনারই অঙ্গ হিসেবে শাহের বারংবার বঙ্গ-সফর। বিজেপির পাখির চোখ একুশের ভোট। বঙ্গবাসীর মন পেতে চেষ্টার কসুর করছে না গেরুয়া শিবির।
বিধানসভা ভোটের আগে জন সমর্থন আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে বিজেপি। সংস্কৃতিমনষ্ক বাঙালি মনের আরও কাছে আসতে সাংস্কৃতিক কর্মসূচিই হতে পারে মূল ‘হাতিয়ার’, এটা ভালোই বুঝেছেন মোদী-শাহরা। ২০২১-র ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মদিন। ওই দিন থেকেই সারা বাংলাব্যাপী নানা অনুষ্ঠান পালনের পরিকল্পনা কেন্দ্রের।
ইতিমধ্যেই নেতাজির ১২৫তম জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠান বছরভর পালনের জন্য একটি কমিটি গড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের তরফে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বিরাট ভূমিকাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এক বছর ব্যাপী উৎসব পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী পালনের জন্য কেন্দ্রের তরফে প্রকাশিত বিবৃতির পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও একটি টুইট করেছেন। সেই টুইটে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘নেতাজী সুভাষ বোসের সাহস সুবিদিত। একজন বিদগ্ধ পন্ডিত, সৈনিক ও শ্রেষ্ঠ এই জননেতার ১২৫তম জন্ম জয়ন্তী আমরা শীঘ্রই উদযাপন করতে চলেছি। এজন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তৈরি করা হয়েছে। আসুন, আমরা সকলে মিলে বিশেষ এই অনুষ্ঠানটিকে সাড়ম্বরে উদযাপিত করি’’।