আজ প্ৰথম দফার
নিৰ্বাচনী প্ৰচারে এসে কয়লা চুরি,
সিন্ডিকেট রাজ,আমফানের টাকা গায়েব ইত্যাদি প্ৰসঙ্গে
তৃণমূল সরকারের কড়া সমাসমালোচনা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত
শাহ।
সোমবার
বাঁকুড়ার খাতড়ায়
বিজেপির ডাকে এক
নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখেন বিজেপির প্রাক্তন
সভাপতি এবং ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
অমিত শাহ। এখানে উপস্থিত ছিলেন
বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার, বাঁকুড়ার
পর্যবেক্ষক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, জ্যোতির্ময়
মাহাতো, শ্রী
অরবিন্দ মেনন, বাঁকুড়া
সাংগঠনিক বিজেপির সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র,
প্রমুখ বিজেপি নেতা ও
নেত্রী বৃন্দ. এছাড়া উপস্থিত
ছিলেন তিনজন প্রার্থী, রানিবাঁধের ক্ষুদিরাম
টুডু, তালডাংরাতে শ্যামল
সরকার, এবং রায়পুর বিধান
সভাতে সুধাংশু
হাঁসদা ।
এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
অমিত শাহ বক্তৃতার শুরুতেই
এই তিনজন প্রার্থীর জন্যই প্রচার করলেন
। তিনি
প্রথমেই উপস্থিত জনতার কাছে সভা দেরিতে হওয়ার
জন্য ক্ষমা চাইলেন, কারণ
হেলিকপ্টার খারাপ হওয়াতে তাঁরসভাস্থলে আসতে কিছুক্ষণ
দেরি হয় । তাঁর
হেলিকপ্টার খারাপ হওয়ার বিষয়ে
তিনি ঠাট্টা করে বলেন, এখানে
কোনও ষড়যন্ত্র
হয়নি, কারণ
হেলিকপ্টার খারাপ হতেই পারে ।
তিনি তৃণমূল সরকারের কড়া সমালোচনা কঢ়ে
বলেন, মা
মাটি মানুষের সরকার আপনাদের আদিবাসীদের
জন্য কিছু করেনি ।
কোন কাজ করতে গেলে
কাটমানি দিতে হয় নেতাদের
। এখানে
সিন্ডিকেট রাজ চলে । তাছাড়া
আমফানের ত্রাণের
জন্য মোদীজী যে টাকা
দিয়েছিলেন সেখানেও তৃণমূল কংগ্রেসের গুন্ডারা
খেয়ে নিয়েছে । এই
জন্য এই সরকারকে পাল্টাতে
হবে । তিনি
আরও বলেন, এই
তৃণমূল সরকার পূর্বতন বামফ্রন্ট
সরকারকে ও রাজনৈতিক হিংসাতে
ছাপিয়ে গেছে|
তিনি বলেন রাজ্যে হিংসায় , ১৩০
জন বিজেপির কার্যকর্তা মারা গেছেন ।
এখানেও
বিজেপির দুজন কার্যকর্তাকে মারা
হয়েছে । মমতার
পায়ে চোট প্রসঙ্গে তিনি
বলেন, তৃণমূলের
লোকেরা একে ষড়যন্ত্র বলছে,
নির্বাচন কমিশন বলছে এটা
একটা দুর্ঘটনা, কোন
হামলা নয় । ভগবান জানে কোনটা
ঠিক । তার
পরেই তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোট প্রসঙ্গে বলেন, আপনার
পায়ে চোট লেগেছে, আপনি হুইলচেয়ারে ঘুরছেন, কষ্ট
হচ্ছে, কিন্তু
আমাদের পার্টির ১৩০জন কার্যকর্তা মারা
গেছে, তাদের
পরিবারের লোকেরা কি রকম
আছে? এর জবাব আপনি
পাবেন ভোটের মাধ্যমে ।
এছাড়া তিনি বলেন, বাংলায় কয়লা চুরি হচ্ছে
এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে
ভারত সরকার, গরু
পাচার হচ্ছে, অনুপ্রবেশ হচ্ছে,
তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন
ছুড়ে দিয়ে বলেন, আপনারা কি এগুলো
বন্ধ করতে চান, তাহলে
বিজেপিকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত
করুন ।
একসময় বাংলা দেশের
২৫ শতাংশের বেশি
জিডিপি তে অংশগ্রহণ করত। এই
জন্য মোদীজী বাংলাকে সোনার
বাংলা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি
দিয়েছেন ।
তিনি বলেন, এখানকার
ভূমি হচ্ছে বিরসা মুন্ডার
ভূমি, সাঁওতালি কবি সারদাপ্রসাদ কিস্কুর
ভূমি, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী
অতুল্য চন্দ্র ঘোষের ভূমি,
সাঁওতালি লেখক পন্ডিত রঘুনাথ
মুর্মু র ভূমি ।
এই ভূমিতে দাঁড়িয়ে আমার
দিকে সংকল্প করতে হবে, যারা
এদিকে প্রশ্রয় দেয় তাদেরকে এবার
উৎখাত করতে হবে ।
তিনি আরো বলেন
আমরা ক্ষমতায় এলে আপনাদের বনভূমির
অধিকার দেব, যা
মমতা ব্যানার্জির সরকার আপনাদেরকে দেয়নি
। তাছাড়া
গন্ধেশ্বরী নদী ও দারকেশ্বর
নদের উপর বাঁধ তৈরির
পরিকল্পনা আছে । এটা হলে ৩৯ হাজার হেক্টর
জায়গা তে জল পৌঁছাবে
।
এছাড়া তিনি জঙ্গলমহলের
মা বোনদের উদ্দেশ্যে বলেন, এখানে
আপনারা ফোন করলে ফোন
কেটে যায় কারণ এখানে
টাওয়ার ভালো নেই, আমাদের সরকার ক্ষমতায়
এলে এখানে টাওয়ারের জাল
লাগানো হবে । তিনি
বলেন, আমরা
জানি বাঁকুড়ার পানীয় জলের অভাব
। ক্ষমতায়
এলে বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রামের পানীয়
জলের সমস্যা মেটাবো ।
যাতে প্রত্যেক পরিবার বিশুদ্ধ জল
পায় তার ব্যবস্থা করব
।
কৃষকদের জন্য ভারতীয় জনতা
পার্টির সরকার ৬০০০ করে তাদের একাউন্ট
এ টাকা দেয়, কিন্তু মমতা সরকার
এটা থেকেও মানুষকে বঞ্চিত
করেছে ।
আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, যদি ভারতীয় জনতা
পার্টির সরকার হয় তিন
বছরের মোট ১৮ হাজার
টাকা কৃষকদের একাউন্টে পাঠানো হবে । মরা ক্ষমতায় এলেই
আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প ‘প্রত্যেক
গরিব কে দেওয়া হবে
। আদিবাসীদের
জন্য ভারত সরকার এটা খুলেছে,
কিন্তু মমতা সরকার এটা
তেও বাধা দিয়েছে ।