পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়ে গেল বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ। চতুর্থ দফায়, শনিবার সকাল সাতটা থেকে পশ্চিমবঙ্গের ৪৪টি আসনে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। ভোটদান চলবে সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা পর্যন্ত। এই দফায় হাওড়া, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হুগলি-এই পাঁচটি জেলার ৪৪টি আসনে চলছে ভোটগ্রহণ। এদিন সকাল সাতটা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার আগে থেকেই পাঁচ জেলার বিভিন্ন পোলিং বুথে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ভোট শান্তিপূর্ণভাবে মেটাতে তৎপর নির্বাচন কমিশনও। মোতায়েন করা হয়েছে ৭৯৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী।চতুর্থ দফায় ভোটদান চলছে হাওড়া জেলার বালি, হাওড়া উত্তর, হাওড়া মধ্য, শিবপুর, হাওড়া দক্ষিণ, সাঁকরাইল, পাঁচলা, উলুবেড়িয়া পূর্ব ও ডোমজুড়ে। আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম, কালচিনি, আলিপুরদুয়ার, ফালাকাটা ও মাদারিহাটে। এছাড়াও কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ, মাথাভাঙা, কোচবিহার উত্তর, কোচবিহার দক্ষিণ, শীতলকুচি, সিতাই, দিনহাটা, নাটাবাড়ি ও তুফানগঞ্জে। চতুর্থ দফায় ভোটগ্রহণ চলছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর দক্ষিণ, ভাঙড়, কসবা, যাদবপুর, সোনারপুর উত্তর, টালিগঞ্জ, বেহালা পূর্ব, বেহালা পশ্চিম, মহেশতলা, বজবজ ও মেটিয়াবুরুজে। এদিনই ভোটগ্রহণ চলছে হুগলি জেলার উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, চাঁপদানি, সিঙ্গুর, চন্দননগর, চুঁচুড়া, বলাগড়, পাণ্ডুয়া, সপ্তগ্রাম এবং চণ্ডীতলায়।
রেকর্ড ভোটদানে অনুরোধ মোদীর, আর্জি মহিলা-যুবকদের কাছে চতুর্থ দফায় পাঁচ জেলার ভোটারদের রেকর্ড পরিমানে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইটে লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে চতুর্থ দফার ভোটদানের শুরুতে, জনগণের কাছে রেকর্ড পরিমাণে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করছি। বিশেষ করে যুবক ও মহিলাদের কাছে অনুরোধ করছি।”
বাবুল থেকে পার্থ, চতুর্থ দফায় হেভিওয়েট তারকাদের ছড়াছড়ি পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফায় ৩০, দ্বিতীয় দফায় ৩০ এবং তৃতীয় দফায় ৩১ আসনে ভোট হয়েছে। তবে গত ৩ দফার তুলনায় চতুর্থ দফায় নজরে থাকা প্রার্থীর সংখ্যা একটু বেশিই। চতুর্থ দফায় এক দিকে যেমন অভিনয় জগৎ থেকে রাজনীতির ময়দানে নামা প্রার্থীরা রয়েছেন, অন্য দিকে তেমনই পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদরাও লড়াই করছেন।
অরূপ বিশ্বাস ও বাবুল সুপ্রিয়: টালিগঞ্জ বিধানসভা আসনে তৃণমূল ও বিজেপি— দু’দলের প্রার্থীই হেভিওয়েট। এক দিকে রাজ্যের মন্ত্রী তথা টালিগঞ্জের বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক অরূপ, অন্য দিকে আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল।
রত্না চট্টোপাধ্যায় ও পায়েল সরকার: বেহালা পূর্বেও এ বার জোরদার টক্কর হবে, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ও প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের জায়গায় এ বার তৃণমূল প্রার্থী করেছে তাঁর স্ত্রী রত্নাকে। অন্য দিকে, বিজেপি ঝঙ্কার তুলতে চেয়েছে টলিউডের পায়েলকে প্রার্থী করে।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়: রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থর সঙ্গে বিজেপির অভিনেত্রী প্রার্থী শ্রাবন্তীর লড়াইয়ে জমজমাট বেহালা পশ্চিম। এক দিকে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। অন্য দিকে, প্রথম বার ভোটে দাঁড়ানো টলি অভিনেত্রী।
মহম্মদ সেলিম ও যশ দাশগুপ্ত: প্রথম জন বর্ষীয়ান বাম নেতা। অন্য জন প্রথমে ছোট পর্দা ও পরে বড় পর্দা হয়ে রাজনীতিতে। হুগলির চণ্ডীতলায় এ বার লড়াই সিপিএম প্রার্থী সেলিম ও বিজেপি-র যশের মধ্যে।
লাভলি মৈত্র ও অঞ্জনা বসু: রুপোলি পর্দার দুই পরিচিত মুখের মুখোমুখি লড়াই সোনারপুর দক্ষিণে। লাভলি তৃণমূলের, বিজেপি-র প্রার্থী অঞ্জনা।
এছাড়াও চতুর্থ দফায় হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন-চুঁচুড়ার বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়, হাওড়ার শিবপুরে তৃণমূলের মনোজ তিওয়ারি, চন্দননগরে তৃণমূলের ইন্দ্রনীল সেন, যাদবপুরে সিপিএম-এর সুজন চক্রবর্তী, সিঙ্গুরে তৃণমূলের বেচারাম মান্না, চাঁপদানিতে কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান, উত্তরপাড়ায় তৃণমূলের অভিনেতা প্রার্থী কাঞ্চন মল্লিক এবং বালিতে বিজেপির বৈশালী ডালমিয়া।
2021-04-10