কৃষক স্বার্থে গঙ্গাজলের মতো পবিত্র উদ্দেশ্য নিয়ে এখন কাজ করা হচ্ছে। দেশের ১০ কোটিরও বেশি কৃষক পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কৃষক স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের খতিয়ান তুলে ধরে সোমবার এই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার বারাণসীতে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের হান্দিয়া (প্রয়াগরাজ)-রাজতলব (বারাণসী) সেকশনে ৬-লেন বিশিষ্ট দীর্ঘায়িত প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এরপরই ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘গুরু নানক জয়ন্তী এবং দেব দীপাবলিতে উন্নত ইনফ্রাস্ট্রাকচার পেল বারাণসী। বারাণসীর (কাশী) পাশাপাশি প্রয়াগরাজের মানুষও এর ফলে উপকৃত হবেন। আমার এখনও মনে আছে ২০১৩ সালে আমার প্রথম জনসভা এই ময়দানেই হয়েছিল। তখন এখান থেকে যাওয়া হাইওয়ে ৪ লেনের ছিল। বাবা বিশ্বনাথের আশীর্বাদে এই হাইওয়ে ৬ লেনের হয়ে গিয়েছে। এই হাইওয়ে চওড়া হওয়ায় কাশী ও প্রয়াগরাজের মধ্যে যাতায়াত আরও সহজ হবে। কুম্ভের সময়ও এর সুবিধা মিলবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিগত কয়েক বছরে কাশীতে সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি যোগাযোগ নিয়ে যে কাজ হয়েছে,তা এখন দেখা যাচ্ছে। নয়া হাইওয়ে তৈরী করা হোক অথবা সেতু ও ফ্লাইওভার বানানো হোক, বারাণসী এবং আশেপাশের এলাকায় এখন যত পরিমানে কাজ হচ্ছে, স্বাধীনতার পর তা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে উত্তর প্রদেশের ইন্ফ্রাস্ট্রাকচারের পরিস্থিতি কেমন ছিল, তা আপনারা সবাই ভালো করেই জানেন। এখন এক্সপ্রেস প্রদেশ হিসেবে পরিচিতি হচ্ছে উত্তর প্রদেশের। ৩-৪ বছর আগে উত্তর প্রদেশে মাত্র দু’টি বিমানবন্দরে ভালোভাবে কাজ হচ্ছিল। এখন প্রায় এক ডজন বিমানবন্দর উত্তর প্রদেশের পরিষেবার জন্য প্রস্তুত।
কৃষক স্বার্থে কিষাণ রেল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের ইতিহাসে প্রথমবার কিষাণ রেল শুরু হয়েছে। এই প্রচেষ্টায় নতুন নতুন বাজার পাচ্ছেন কৃষকরা। বড় শহরগুলিতে তাঁদের প্রসার বেড়েছে। তাঁদের আয়েও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সরকারের প্রচেষ্টা ও আধুনিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার থেকে কৃষকরা কীভাবে উপকৃত হচ্ছেন তার একটি উত্তম উদাহরণ হল চান্দোউলির কাল চাল-ব্ল্যাক রাইস। চান্দোউলির কৃষকদের পরিবারের সমৃদ্ধি বয়ে এনেছে এই চাল। সাধারণ চাল ৩৫-৪০ টাকা প্রতি কিলো দরে বিক্রি হয়, কিন্তু এই সুন্দর চাল ৩০০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে। সবথেকে বড় বিষয় হল, ব্ল্যাক রাইস বিদেশী বাজারেও জায়গা করে নিচ্ছে। অন্নদাতাদের ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের কৃষি পণ্য বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত। বড় বাজার এবং ভালো দাম পাওয়া কী কৃষকদের উচিত নয়? আগে মান্ডির বাইরে হওয়া লেনদেন অবৈধ ছিল। ছোট কৃষকদের ক্ষতি হত, বিবাদ হত। এখন ছোট কৃষকও, মান্ডির বাইরে হওয়া সমস্ত বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারবেন। নতুন বিকল্পের পাশাপাশি আইনি সংরক্ষণও পেয়েছেন কৃষকরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার নীতিমালা তৈরী করে এবং আইন ও বিধি তৈরী করে। নীতি ও আইনের যেমন সমর্থ পাওয়া যায় তেমনই কিছু প্রশ্নও ওঠে। এটা গণতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত। প্রধানমন্ত্রী জানান, কৃষক স্বার্থে গঙ্গাজলের মতো পবিত্র উদ্দেশ্য নিয়ে এখন কাজ করা হচ্ছে। দেশের ১০ কোটিরও বেশি কৃষক পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা কৃষকদের কাছে পৌঁছেছে। বিরোধীদের সমলোচনা করে এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের মনে রাখা উচিত, এঁরাই পিএম কিষাণ সম্মান নিধি নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছিল। এঁরা গুজব ছড়াচ্ছে যে, নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে এবং নির্বাচনের পর এই অর্থ সুদ সমেত ফেরত দিতে হবে।
2020-11-30