সরকারি নিয়মাবলী আত্মরক্ষার তাগিদেই মেনে চলতে হবে

নোভেল করোনাকে হু মহামারী ঘোষণা করেছে। মুখ্যমন্ত্রী সোমবার মহামারী আইন লাগু করলেন। রাজ্যে যাতে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের লড়াইয়েতে কেউ অসহযোগিতা করতে না পারে। ওই আইন কী সকলের জন্য প্রযোজ্য নয় ? তা না হলে পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের স্পেশাল সেক্রেটারির ক্ষমতার অপব্যবহারের ফলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকদের নির্দেশকে তোয়াক্কা না করে দুদিন সরকারি অফিস ও শপিং মলে নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়ালেন। এর ফলস্বরূপ কোভিড-১৯ পশ্চিমবঙ্গে মহামারী আকার ধারণ করতে পারে। এই একজনের রোগসংক্রমণ থেকে সব মিলিয়ে প্রায় ২০ জনকে হোম কোয়ারান্টাইন এবং ৫ জনকে কোয়ারন্টাইন করা হয়েছে।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণে ভারত যেন ইতালি না হয়। তার জন্য হাতে প্রায় ৩০ দিন। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে ৩ লক্ষ ২৪ হাজার মানুষকে স্ক্রিনিং কর হয়েছে। ৫ হাজার মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। গৃহপর্যবেক্ষণে ১২০০০ জনকে রাখা হয়েছে।

উদাহরণ স্বরূপ,ইতালিতে প্রথম সপ্তাহে ৩ জন, দ্বিতীয় সপ্তাহে ১৫২ জন, তৃতীয় সপ্তাহে ১০৩৬ জন, চতুর্থসপ্তাহে ৬৩৩২ জন, পঞ্চম সপ্তাহে ২৭৯৮০ জন আক্রান্ত। মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৩০০০ জন। ভারতে প্রথম সপ্তহে ৩ জন, দ্বিতীয়। সপ্তাহে ২৪ জন, তৃতীয় সপ্তাহে ১০৫ জন, বাকি এখনো চতুর্থ, পঞ্চম।

ভারত এখন ‘ফেজ-২’, ‘ফেজ-৩’ যখন তখন শুরু হতে পারে এই আশঙ্কায় এখন ভারতের ১৩০ কোটি জনসাধারণ। সেইদিক থেকে পশ্চিমবঙ্গে জনসংখ্যা প্রায় ৯ কোটি। এই অবস্থায় ২৬টি সরকারি হাসপাতালে আইসোলেশন বেড় করা হয়েছে যার সংখ্যা মাত্র ১৮১টি। যা পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যার তুলনায় অতি সামান্য।

এই কোভিড-১৯ ভাইরাস গুণিতক আকারে সংক্রামণ বৃদ্ধি পায় মানুষের মধ্যে, পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দপ্তরে ৩০ নয়, যদি ফেজ-২ থেকে ফেজ-৩ আরম্ভ হয়। যার ফলস্বরূপ শুরু হতে পারে মৃত্যুমিছিল। যদিও এই করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর হার শতকরা ২ থেকে ৩ শতাংশ তবুও সেই সংখ্যাটি কম হবে না। প্রায় ৫ থেকে ১০ হাজারের মধ্যে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে প্রায় ২ লক্ষ শুধু পশ্চিমবঙ্গেই।

তাই সরকার এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের উপর সম্পূর্ণ রূপে ভরসা না রেখে নিজেদেরকেই আরও বেশি সচেতন থাকতে হবে। সরকারি সতর্কতার নিয়মাবলীগুলিকে যথাযথ ভাবে মেনে চলতে হবে নিজেদের আত্মরক্ষার তাগিদেই।

তাহলেই হয়তো অনেকটাই এই ভাইরাসের প্রকোপ থেকে নিজেদের আড়াল করা সম্ভবপর হবে। কারণ এই করোনা ভাইরাসের এখনো পর্যন্ত সঠিক কোনো প্রতিষেধক নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।

ডাঃ শুভঙ্কর গৌড়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.