“বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে ভারতের রূপান্তর” – শ্রী অরুণ কুমার, জম্মু ও কাশ্মীর স্টাডি সেন্টার

শীতঋতুর শীতলতা থেকে বসন্তঋতুর উষ্ণতায় রূপান্তরের সূচনা করে এই মকর সংক্রান্তি; পার্থিব ও আধ্যাত্মিক উভয় অবস্থারই পরিবর্তন ও রূপান্তরের তিথি এটি। আমাদের দেশও এমনই একটি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গত কয়েক বছর যাবৎ যাচ্ছে। বহু প্রবুদ্ধ মানুষের অবদানের প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েই এই উদ্যোগ সম্ভব হচ্ছে। মকর সংক্রান্তির এই পুণ্য লগ্নে ভারত বিকাশ পরিষদের উদ্যোগে এক বৌদ্ধিক সমাবেশ। বক্তা : শ্রী অরুণ কুমার, জম্মু ও কাশ্মীর স্টাডি সেন্টার। বিষয় : “বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে ভারতের রূপান্তর”

ভারত তথা হিন্দুরাষ্ট্র, কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী এক অভিন্ন হিন্দু দেশ। সেখানে থাকেন নানা মত নানা মার্গের নানা ভাষার জাতির মানুষ বাস করেন। বহূত্ত্বের মধ্যে ঐক্য ভারতের বৈশিষ্ট্য। সুপ্রাচীন ঐতিহ্যমন্ডিত ভারতে গণতন্ত্র হল ভিত্তি। কিন্তু সেই গণতন্ত্র বার বার ক্ষুন্ন হয়েছে বৈদেশিক অপশক্তির মদতে। কাশ্মীর হোক বা কেরালা , ম্লেচ্ছ অপশক্তি দ্বারা শান্তিপ্রিয় হিন্দুরা বারবার অত্যাচারিত হয়েছে। একসময় সেই অকথ‍্য অত্যাচারে নিজ ভূমে প্রবাসের স্বীকার হয়েছেন কাশ্মীরের পন্ডিতরা। দীর্ঘ দিন উদ্বাস্তু জীবন ভোগ করার পর এবং ভূস্বর্গ সন্ত্রাসী হামলা দ্বারা বিষাক্ত হবার পর নারকীয় ৩৭০ ধারার অবলুপ্তি ফলে সেই অন্যায়ের বিচার হয়েছে।

২০১৪ সাল থেকে ধীরে ধীরে পরিবর্তন ঘটেছে ভারতের। আজ ১৫ জানুয়ারী ২০২০ ,মকর সংক্রান্তির পুন্য তিথিতে ভারত বিকাশ পরিষদ সেই বদলে যাওয়া উন্নত ভারতকে নিয়েই একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন – ” Transformation of Bharat in the Context of Current Scenario ” . এই অনুষ্ঠানের মুখ্য বক্তা হিসাবে সভা আলোকিত করছেন জম্মু ও কাশ্মীর স্টাডি সেন্টারের শ্রদ্ধেয় শ্ৰী অরুণ কুমার। এছাড়াও বিশেষ অতিথি থাকছেন প্রাক্তন পুলিশ মহা নির্দেশক শ্ৰী দীনেশ বাজপেয়ী, প্রধান অতিথি মানিনীয় বিচারপতি শুভ্র কমল মুখোপাধ্যায় এবং ভারত বিকাশ পরিষদের কার্যকর্তা ঘনশ্যাম শুক্লা, চেয়ারম্যান শ্ৰী নন্দলাল জি সিংহানিয়া।

এবার নবীন-মন্ত্রে হবে জননী তোর উদ্বোধন।
নিত্যা হয়ে রইবি ঘরে, হবে না তোর বিসর্জন।।
সকল জাতির পুরুষ-নারীর প্রাণ
সেই হবে তোর পূজা-বেদী মা তোর পীঠস্থান:
সেথা শক্তি দিয়ে ভক্তি দিয়ে পাতবে মা তোর সিংহাসন।।

পরিবর্তন সংসারের নিয়ম, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদেরও চলতে হয়। নতুন ভারত গঠনের কাজ এক দীর্ঘ ইতিহাস। সেই নতুন ভারত গঠনের এক নব মন্ত্রে দীক্ষিত করে চলেছেন জম্মু কাশ্মীর স্টাডির অধিকর্তা শ্ৰী অরুণ কুমার জী।

এই দিন সন্ধ্যায় শ্রদ্ধেয় অরুণ কুমার জী ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি সহ ৩৭০ ধারা বিলোপ, রাম মন্দির মামলা এবং বর্তমান নাগরিকত্ব আইন নিয়ে এক ঐতিহাসিক বক্তব্য রাখেন। তারই কিছু অংশ আমি এখানে উল্লেখ করছি –

ভারত বিকাশ পরিষদের সূচনা ঘটেছিল নব্বই এর দশকে। তারপর অনেক উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে কলকাতায় তার কাজ শুরু হয়। হিন্দু ভারতের জাতীয়তাবাদী কার্যক্রমকে সংঘটনটি ক্রমশ অগ্রগতির দিকে নিয়ে গেছে।

আজ শুভ মকর সংক্রান্তির পবিত্র সন্ধ্যায় এই মঞ্চে আমার সঙ্গে জাতীয়তাবাদী সংস্থা ভারত বিকাশ পরিষদের শ্ৰী দিনেশ বাজপায়ী, শ্ৰী সিংহানিয়া, শ্ৰী পোদ্দার, শ্ৰী রাজীব অগ্রযাল ইত্যাদি বিশিষ্ট ব্যক্তি প্রমুখ উপস্থিত আছেন। আমি তাঁদের এবং যাঁরা আমার কথা শুনতে এসেছেন তাঁদের প্রণাম করে বক্তব্য শুরু করছি। আজ আমি তিনটি বিষয় কথা বলব। তার আগে বলি আজ আমাদের বিষয় হল নতুন ভারত। এই যে নতুন পরিবর্তনের ভারত সেই নিয়ে বলার আগে আমাদের জানতে হবে ভারত কি?

আমি বলব ভারত কি? মকর সংক্রান্তি হল প্রকৃতির উপাসনা। এই ছোট ছোট বিষয় নিয়েই আমাদের জীবন তৈরি। শীতের বিষণ্নতাকে কেটে নতুন আলো দেখায় সংক্রান্তির উৎসব। নিরাশার অন্ধকারকে নষ্ট করে বসন্তের আশার আলোক আনে। তাই মকর সংক্রান্তি হল ভগবান সূর্য নারায়নের উপাসনা। কিন্তু যে বৃদ্ধ শীতের সময় করুন হতাশা আসে , সেই সময় আমাদের কি করা উচিত? এই সময় ধৈর্য রাখাই আমাদের মূল কাজ। কারন রাতের পরেই সূর্য ওঠে এবং অশুভ শক্তি ধ্বংস করে। সংক্রান্তি আনে বসন্ত, আনে প্রকৃতির বুকে নতুন পরিবর্তন।

স্বামী বিবেকানন্দের জন্মও ঠিক এই সময়। তিনি নচিকেতা সম। তিনি ও তাঁর গুরু শ্ৰী রামকৃষ্ণদেব সেই সময়ের দূত যখন ধর্মান্তরের বিষাক্ত বাতাস আমাদের হিন্দু সমাজকে ক্ষত বিক্ষত করছিল। নচিকেতা যম রাজের দরবারে ব্রম্ভ জ্ঞান প্রাপ্ত করেন । নচিকেতার সেই সনাতনী সমাজ কিভাবে নিজেকে নষ্ট করছে? কারণ সে নিজের ইতিহাসকে ভুলে গেছে । স্বামীজী বলেছেন যে সমাজ আত্মবিস্মৃত হয়ে সে সমাজের অন্তিম খুব দ্রুত ঘনিয়ে আসে। তিনি বিশ্বের দরবারে ভারতের যথা হিন্দুত্বের জয়গান গেয়েছিলেন।

হিন্দু কি , ভারত কি? দুনিয়ার বাকি দেশ ও ভারত এক নয়। হিন্দুত্ব এবং ভারত একে অপরের পরিপূরক। ভারত একটি জীবন যাত্রা। একটি সনাতনী যাত্রা। পশ্চিমের দেশগুলি ভারতকে বুঝবে না।

গান্ধার হতে লঙ্কা অখন্ড ভারতের অংশ ছিল। এই অখন্ড ভারতের উপর বার বার বৈদেশিক আক্রমন
অখন্ড ভারতের উপর বিদেশি আক্রমন হয়েছে। শক, হুন , কুষান , দরদ , পারদ এমনকি গ্রিক সকলে এসে এই একদেহে লীন হয়েছে । পারে নি কেবল ম্লেচ্ছ যবন রা। তারা এসেছে অকথ্য অত্যাচার করেছে। মন্দির ধ্বংস করেছে । আমাদের স্বাভিমানে হাত দিয়েছে। তবুও আজকের বিক্রিত ঐতিহাসিকরা তাদেরই বন্দনা করে।

মুনি ঋষিদের এই সুপ্রাচীন ভারত ছিল সোনার পাখির দেশ। মরুদস্যু , ইংরেজ, ডাচ, ওলন্দাজ , পর্তুগিজ যে যেখান থেকে পেরেছে সেই সোনার পাখির লোভে ভারতকে আক্রমন করেছে। তার সঙ্গে অবশ্যই আক্রমন হয়েছে আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার উপর। এই সব পৃথিবীর প্রকৃতির প্রাচীন দেশ থেকে মানুষেদের পশুর মতো ধরে এনে ক্রীতদাস করে বিক্রি করেছে। কিন্তু আমরা সুপ্রাচীন জাতি কেন ক্রীতদাস হয়ে থাকব। তাই বার বার আমরা বিদ্রোহ করেছি। নিজেদের অধিকারের লড়াই ….

কিন্তু আমেরিকার ইতিহাস জানেন? সাদা চামড়া সাদা চামড়া নিজেদের মধ্যে লড়াই করেছে। তার থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হল। ইতালির বয়স ১৫০ বছর। জার্মানে বয়স কালও তাই। ব্রিটিশদের প্রকৃত বয়স মাত্র হাজার বছর…যুদ্ধ ,যন্ত্রনা, স্বার্থ থেকে এদের উত্থান। এরা কি জানে ভারত কে ? এর সুপ্রাচীন ঐতিহ্য কি?

এই ভারত আগে দেশ। পরে প্রদেশ। এখানে সবাই ব্রহ্ম। প্রাচীন ভারতে বৈদিক মুনিঋষিরা তাই উদাত্ত কন্ঠে উচ্চারণ করতেন অহং ব্রহ্মাস্মি – “আমিই ব্রহ্ম”, বা “আমি দিব্য। এখানে দেহ পোশাক। বাকি সব পরমআত্মার অংশ। সবার মধ্যে পরমাত্মা রাম বাস করেন। জীবে প্রেম করেন যে সে
জন শিব সেবা করেন। এখানে কেউ ছোট বা বড় নয়।
সমাজ গড়ে উঠেছে কর্মের ভিত্তিতে। এখানে সবাই সবার মঙ্গল কামনা করেন।

সর্বে ভবন্তু সুখিন,
সর্বে সন্তু নিরাময়া,
সর্বে ভদ্রানি পশ্যন্তু,
মা কশ্চিদ দুঃখ মাপ্নুয়াত,
ওম শান্তি শান্তি শান্তি।

অর্থাৎ সবাই যেন সুখী হয়, সকলে যেন নিরাময় হয়, সকল মানুষ পরম শান্তি লাভ করুক, কশ্মিনকালেও যেন কেহ দুঃখ বোধ না করেন। সকলের শান্তি লাভ করুন।

আমরাই বেদ মন্ত্র উচ্চারণ করে তাই বিশ্বের মঙ্গল কামনা করে বলতে পারি –

বসুধৈব কুটুম্বকম – অর্থাৎ গোটা বিশ্ব আমার আত্মীয়,আত্মীয়- অর্থাৎ আত্মার সাথে সম্পর্ক। একি কোন দেশের সার্বিক মন্ত্র??

গুরুগৃহে আমরা শিক্ষা পাই যে, ত্যাগ ও সেবাই জীবনের সূত্র। ধর্ম অর্থ কাম মোক্ষ থেকে এই রাষ্ট্র।

ধর্মে চ অর্থে চ কামে চ মোক্ষে চ ভরতর্ষভ|
যদিহাস্তি তদন্যত্র যন্নেহাস্তি ন তত্ক্বচিত্ ||

ভারতে রাজ্য অনেক রাষ্ট্র এক। মানুষ এক। এক রাষ্ট্র ,এক জন , এক সংস্কৃতি….

আমি যখন নেপাল গেছিলাম তখন আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল নেপাল ভারতের সম্পর্ক ভালো নয় ? কেন ? আমি তখন বলেছিলাম , তিবেত নেপাল যুদ্ধ করত। উভয়ের কিন্তু প্রজাদের সম্পর্ক ভালো ছিল। কারন নেপাল ও তিবেত কোনো না কোনো ভাবে সনাতনী ছিল। প্রসঙ্গত নেপাল হিন্দু রাষ্ট্র। হিন্দুত্ব সেখানের শক্তি এবং অখন্ড ভারতের অংশ। সেভাবে দেখলে ভারত তাই অদ্ভুদ দেশ। এখানে প্রাণ হল ধর্ম। স্বামীজী বলেছেন ঈশ্বর প্রদত্ত ধর্ম দ্বারা চালিত ভারতের লক্ষ্য বিশ্বের কল্যাণ করা। আমরা পৃথিবীতে উপনিবেশ বানাই নি। আমার আমাদের ঐতিহ্য ,সংস্কৃতিকে সারা পৃথিবীতে পৌঁছেছি। খোটান থেকে কুচা, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া আমাদের সাংস্কৃতিক উপনিবেশ ছিল।

ব্রিটিশদের নিকট দীর্ঘ পরাধীনতার গ্লানি ভোগ করার পর বহু রক্তের বিনিময়ে ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা তো পেল কিন্তু দেশ ভাগ হল। কেন? কিসের ভাগ ? ভারত তো অখন্ড , নতুন রাষ্ট্র নয়। তাহলে ইংরেজ ভাগ করবে কি? বহুত্ব বাদ সনাতনী ভারতের ঐতিহ্য। তাহলে তার দেহ থেকে কেটে কেটে কেন বার বার নতুন রাষ্ট্র নির্মাণ?

যারা আজাদীর লড়াই চেয়ে ভারতের ভাগ চায় তারা অসুস্থ অশুভ। তারাই সন্ত্রাসী।

কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী স্বাধীনতার পর এক ভারত। তাহলে কেন ৩৭০ ধারা লাগু করে তার অপমান করা হল? আমরা সবাই এক ভারত। কোনো এক ধর্ম, ভাষা ,প্রাদেশিকতা কারুর কারুর পরিচয় নয়। ১৯৫২ সালে সেই স্বাভিমানে আঘাত লাগল আবার। জম্মুকাশ্মীরে ৩৭০ ধারা লাগু হয়ে।মুসলিম মেজরিটি জম্মু কাশ্মীর সাংবিধানিক গ্যারান্টি চাইল। যদিও কাশ্মীর কোনোদিনও মুসলিম মেজরিটি ছিল না। সে এক বৃহৎ ইতিহাস। তো ১৯৪৭ এ যখন বিছিন্নতাবাদীরা পাকিস্তান পেয়ে গেল তাহলে কাশ্মীরে আবার সংবিধান কেন ?শ্যামাপ্রসাদ প্রতিবাদ করলেন। প্রতিবাদের মূল্য চুকিয়েছিলেন তাঁর জীবন দিয়ে। ১৪ মে ১৯৫৪ সালে ৩৫ এ লাগু হল। দেশের মানুষ দুই ভাগ হল :

১. ভারতের এক দল মানুষ জম্মু কাশ্মীরের

২. ভারতের বাকি মানুষ জম্মু কাশ্মীরের নয়।

এরপর বলব ১০ নভেম্বর ২০১৯ শ্ৰী রাম জন্মভূমি মামলা জেতা। সেকুলাররা বলল কি দরকার এসবে? একদল হায়না বলল ওখানে ভারতের প্রথম মসজিদ ছিল। ইতিহাস বলল ওখানে কখনো মসজিদ ছিল না। ভারতের পরিচয় রাম, কোনো বিদেশি অত্যাচারী সুলতানের সেনাপতি দ্বারা তৈরি বাবাড়ি মসজিদ না। ঈশ্বর এক । তাকে যেমন ভাবে ডাক। কিন্তু মন্দির নষ্ট করে মসজিদ? নাঃ…বহু হয়েছে। জমি রামলালার। তাই বাবরি মসজিদ ধ্বংস হল। যুদ্ধ শ

ুরু হল। ১৫ কোটি মানুষ করসেকবক আন্দোলনে অংশ নিলেন। শিলা পূজা হল। এভাবেই রাম জন্মভূমির রাস্তা প্রশস্ত হল।

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা ভারতের পতাকা উড়ল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রথমে কিন্তু ধর্ম প্রচার করতে আসেনি। পরে মিশনারীদের নোংরা ইতিহাস অনেক বড়। ভারতের এমন ম্লেচ্ছরাই ইতিহাসকে নষ্ট করেছে। তাই ভারতের ইতিহাসের নায়ক ম্লেচ্ছ আক্রমণকারীরা হতে পারে না।

৮.১২.২০২৯ CAB পাশ ও CAA চালু হলে। সেইসব হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ ,জৈন ভারতে থাকতে পারবেন আফগানিস্থান, বাংলাদেশ , পাকিস্তান থেকে অত্যাচারিত হয়ে এসেছেন। কিন্তু মুসলমানদের কে কয়েকটি স্বার্থপর লোক বলল, তাদের তাড়ানোর জন্য এসব করা হয়েছে। দেশ স্বাধীনতার সময় পাকিস্তান যারা চাইত তারা ভাগ করল দেশ।

আবার তারাই পাকিস্তান নামক দেশের অর্থনৈতিক দুর্বলতা এবং নিজেদের নোংরা ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য এখানে এসে দলে দলে জুটতে লাগলো ।এর জন্যই দরকার ভারতের নাগরিকত্ব আইন। সেই সময় একথা বলা হয়েছিল যে, ভারতে যেদিন থেকে সংবিধান রচিত হয়েছে এবং সংবিধান কার্যকরী হয়েছে সেইদিন থেকে সাধারণ মানুষ ভারতের নাগরিক বলে পরিগণিত হবেন। তবে এর ভবিষ্যৎ কি হবে বা পরবর্তীকালে কিভাবে নাগরিকত্ব তালিকা তৈরি করা হবে তা একমাত্র ভবিষ্যতের অবস্থার উপর নির্ভর করবে। ১৯৫০ সালে ২৬ জানুয়ারিতে সংবিধান রচিত হল এবং ১৯৫০ সালের ৫ নভেম্বর THE IMMIGRANTS (EXPULSION FROM ASSAM) ACT এর খসড়া বাবা সাহেব আম্বেদকর প্রস্তুত করলেন। সংবিধান প্রস্তাবনার ১০মাস এটা শুরু হল।নেহেরু বললেন , ” যারা পাকিস্তান থেকে অত্যাচারিত হয়ে এসেছে তারা আমাদের ভাই । তাদের এখানে আশ্রয় দেওয়া আমাদের কর্তব্য। নবাকিদের তাড়ানো হবে।

এরপর ১৯৬৪ থেকে ১৯৭২ সাল। বিশ্ব জুড়ে দেখল পূর্ব পাকিস্তানে ভয়ঙ্কর হিন্দু গণহত্যা। ১ কোটি লোক প্রাণ ও মান বাঁচাতে পালিয়ে এল। ৩০ লক্ষ হিন্দু হত্যা হল ….

ইন্দিরা গান্ধী বললেন, অত্যাচারিত এই হিন্দুদের ভারতে থাকতে দেবেন। কি হল তার?

একদল সংখ্যা বাড়ায়। যারা আসে লোভে ও ধর্মের মোহে । এক সময় কংগ্রেস মনমোহন সিং থেকে বামপন্থী নেতা প্রকাশ কারাট অবধি উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দাবিতে রাষ্ট্রপতির নিকট অবধি গেছিল। আজ কেন তাদের এমন উল্টো সুর?

পাকিস্তান হল। আমরা কিন্তু জনবিনিময়ের কথা বললাম না। গান্ধী জি কিন্তু জিন্না কে বিশ্বাস করতে বারন করলেন । দেশ ভাগের সময় মানুষ ভাবতেও পারেনি কি হবে। একদিকের মানুষ এক রাতে ভারত থেকে পাকিস্তানি হয়ে গেল। ওরা তো মন থেকে ভারতীয় ছিল, আছে , থাকবে।কত বড় প্রশ্ন? চার যুগ কেটে গেছে…তারা স্বাধীন হয়ে আবার গোলাম হল। তাদের ধর্ম, আস্থ্ সব নষ্ট হল। লিয়াকত নেহেরু চুক্তি হল। শ্যামাপ্রসাদ ভূভাগ চাইলেন, সম্পত্তির দাম চাইলেন…প্রতিবাদ করলেন। অত্যাপর তিনি পদত্যাগ করলেন। সরদার প্যাটেল প্রতিবাদ করলেন। কেউ শুনলেন না… পূর্ব পাকিস্তান থেকে যোগেন মন্ডেল পালিয়ে এল।

সব ধর্ম সব জাতির ইসলাম দেশে অধিকার নেই। সেখানে সেকুলার শব্দটি নাজায়েজ। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান আইনি ভাবে ইসলামিক রাষ্ট্র হল। ১৯৭১ এ ৩০ থেকে ৫০ লক্ষ হিন্দুর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ ও তাই হল।

এখন অত্যাচারিত হিন্দুরা ভাবছেন তাঁদের সন্তানদের সাথে এমন না হয়। তাই তারা ভারতে আসছেন বাঁচার তাগিদে। তাঁদের গ্রহণ করা আমারাদর কর্তব্য। আমরা গঙ্গা জল হাতে নিয়ে বলি আমরা অখন্ড ভারতবাসী।

আফগান, পাক ও বাংলাদেশে থাকা অত্যাচারিত লোক গুলো নিজেদের আইডেন্টিটি বদলে ফেলেছে। কেন ? প্রশ্ন করুন…

দুদিন আগে পি চিদাম্বর বললেন, চার দিনের মধ্যে নাকি নাগরিক বিল এসেছে। কিন্তু সংবিধানে তো এ আলোচনা দীর্ঘ দিনের। ২০১৬ তে প্রথম এই এক্ট নিয়ে আসার প্রস্তব রাখা হয়। ৯ হাজার আমেমন্ড হয়। ২০১৮ তেও বিল পাশ হয় নি।অবশেষে ২০১৯ এ তা হল।

এত মানবীয় বিষয় । গত ৭০ বছর ধরে , নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধী ও মনমোহন সিং , নানা দল যা নিয়ে বলেছে সেগুলো ভুল তবে?

১৯৭৬ এ সংবিধানে সেকুলার শব্দ এল।কিন্তু জম্মু কাশ্মীরে হল না। সাহস হল না সরকারের। গুলাম নবী আসাদ মুখ্যমন্ত্রী ছিল। সেখানে হিন্দুদের অধিকার দেওয়া হল না। সেকুলারিজম ইসলাম বিরোধী তাই ? অবশেষে ৫ আগস্ট ২০১৯ তা লাগু হল। এর আগে কোনো দল কেন করলনা এটা? প্রশ্ন করুন…

আন্তর্জাতিক নানা কাগজ বলল হিন্দু রাষ্ট্র শুরু হল। caa নাকি সেকুলারিজম এর বিরোধি? রাশিয়া ভাগ হল। খ্রিস্টান ও জিউসরা মাইনরিটি হল নানা ছোট দেশে। তারা রাশিয়া ফিরল। কেউ আমেরিকায় গেল। সেখানে মাইনরিটি বিল পাশ হল। ১৯৮৯ সাল এ তা হল।

ইরানের সংখ্যা লঘুদের জন্য আমেরিকা বিল আনতে পারে। আফগান ,পাক ও বাংলাদেশ এর মাইনরিটির জন্য নয়। ভাবুন একবার…

কংগ্রেস এক দেশ এর জন্য ভোট লড়লের । কিন্তু জেতার পর বেইমানি করল।

কেউ ভাবল কি দেশ ভাগ হলে অন্য অংশের মানুষের কি হবে ? এভাবে চললে তো দেশ টুকরো হবে। দেশ ভাগে ১০ লাখ মানিশ মরল। ১.৫ কোটি হারিয়ে গেল…বিচার করার সময় হয়েছে।

যে সন্ত্রাসী শক্তি এখন দেশে এসব করছে তাদের বুঝজন। কি ছাত্র আন্দোলন? পিছনে কে? p

fi, isis …এরা আবার ভারতকে ভাগ করতে চায়। গত ৬ বছর লিনচিং, ইন্টেরলারেন্স এর কাজ এরাই করেছেরাজনৈতিক স্বার্থ পূরণের জন্য। ভাবুন একবার…

যদি caa সবার জন্য চান তাহলে বিভাজন সম্মাপ্ত করে দিন। তাহলে এসব কিছুই থাকবে না। দুনিয়ার সব দেশে nrc আছে। নিজের মত করে আছে। ১৯৫০ যে নেহেরু প্রথম বিষয়টি আনেন। সব দেশের একটি নাগরিক লিস্ট আছে। আমাদের দেশে কেন থাকবে না ? আমাদের ঐতিহ্য আছে । ইতিহাস আছে। বেইমানি করি না। কিন্ত সন্ত্রাসীদের সামনে আমরা ঝুকব না। একদেশ ,এক সংস্কৃতি। সবাই এক সঙ্গে সম্মান করে বাঁচবে। এটা চাই আমরা ।
ভারত জাগছে। নিজেকে জানছে। উদ্বাস্তু হিন্দুদের বাঁচার অধিকার আমাদেরই করে দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.