বাংলা কেন ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে ঘোষিত হবে না ? ‘বাঙ্গালী বিরোধী’ বিজেপির জন্যই কি বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া যায়নি?পশ্চিমবঙ্গের অবিজেপি প্রায় সব রাজনৈতিক দল একটা ইস্যুকে আঁকড়ে ধরতে চাইছে তা হল – ‘বাঙ্গালীত্ব’। বলাই বাহুল্য আগামী নির্বাচনের বিজেপির মোকাবিলা করতে এখন থেকেই তারা ‘বাঙ্গালীত্ব’ অস্ত্রে শান দিতে শুরু করেছেন। প্রায় শুরু থেকেই এদেশের রাজনীতির একটা বিচিত্র ব্যাপার হল প্রথাধর্ম নিয়ে কথা বলা খুব খারাপ , মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে কিন্তু জাত-পাত বা প্রাদেশিকতার সুড়সুড়ি দেওয়া ‘প্রগতিশীল ভাবনা’ বলে অনেকেই মনে করেন। বাংলা কেন ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে ঘোষিত হবে না ? – এই প্রশ্ন উত্থাপনের মধ্যেও যে উদ্দেশ্য প্রছন্ন তা হল – এরপরও কি বাঙ্গালীরা বিজেপি ভোট দেবে , দেওয়া উচিত ?- এই প্রশ্নটিকে উস্কে দেওয়া । তামিল ,সংস্কৃত , কন্নড় , তেলেগু , মালয়ালম এবং ঘরের পাশের ওড়িয়া যদি ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে ঘোষিত হয় বাংলা নয় কেন ? এর জন্য কি বিজেপি দায়ী , মোদী দায়ী ?
এখনও অব্দি যে ছয়টি ভাষা ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে ঘোষিত হয়েছে তার কোনটিই কোন বিজেপি সরকারের আমলে হয়নি । নরেন্দ্র মোদীর সময়ে তো নয়ই । মনমোহন সিংহের নেতৃত্বে প্রথম ইউ পি এ সরকার ২০০৪ সালের ২২ শে মে ক্ষমতায় আসে। আর পাঁচ মাসের মাথায় ২০০৪ সালের ১৮ ই সেপ্টেম্বর প্রথম কোন ভারতীয় ভাষা ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে ঘোষিত হল – না সংস্কৃত নয় – প্রথম ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে কংগ্রেস সরকার তামিলকে মর্যাদা দিয়েছিলো।প্রশ্ন উঠতে পারে কেন হঠাৎ ধ্রুপদী ভাষা ঘোষণার প্রয়োজন হল ?তামিল ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে ঘোষণার দাবী বহু বছরের । একসময় ডিএমকে, পিএমকে বা এমডিএমকের মতো দল যারা এনডিএতে ছিল তারাও অটলবিহারী বাজপেয়ীর কাছে এই দাবী রেখেছিলো । কিন্তু এনডিএ আমলে সেই ঘোষণা হয়নি।আবার ২০০৪ সালের ইউপিএ সরকার তৈরী করতে সমর্থন দেয় ওই ডিএমকে আর এমডিএমকে । তারই ফল প্রথম ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে তামিলের দ্রুত স্বীকৃতি । তারপরই শুরু হয় আরও দাবী, আরও ঘোষণা। ইতিমধ্যেই মারাঠি,মণিপুরি সহ আরও কয়েকটি ভারতীয় ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে ঘোষণার লিখিত দাবী জমা পড়ে আছে । হয়তো কয়েকদিন পর এরাজ্যের বিধাসভাতেও এরকম একটা দাবী পাশ করিয়ে পেশ করা হবে !
২০০৫ সালে সংস্কৃত , ২০০৮ সালে নভেম্বর মাসে একই দিনে কন্নড় ও তেলেগু , ২০১৩ তে মালয়ালম এবং সর্বশেষ ক্ষমতা থেকে যাওয়ার মাত্র তিন মাস আগে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের ২০ তারিখ ওড়িয়া কে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিয়েছিলো কংগ্রেস সরকার । নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এন ডি এ সরকার শপথ গ্রহণ করে ২০১৪ সালের ২৬শে মে । এখনো পর্যন্ত সেই সরকার কোন ভাষাকে নতুন করে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেয়নি বা ঘোষিত কোন ভাষার ধ্রুপদী মর্যাদা কেড়ে নেয়নি। সুতরাং যে ছয়টি ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে সবকটিই মনমোহন সিংহের নেতৃত্বে ইউ পি এ সরকার ২০০৪ থেকে ২০১৪ র মধ্যে দিয়েছে । আজ যারা প্রশ্ন তুলছেন – বাংলা কেন ধ্রুপদী ভাষা নয় সেদিন তারা নীরব ছিলেন । ২০০৪ থেকে ২০১৪ র মধ্যে অধীর চৌধুরীও লোকসভার সদস্য ছিলেন যিনি নরেন্দ্র মোদীকে এখন চিঠি দিয়ে বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবী করছেন।এই সময়ে তৃণমূল কংগ্রেস ও বামেরাও ইউপিএ সরকারে খেপে খেপে ছিলেন ।তারাও কেন তখন অনুভব করেননি যে বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে ঘোষণা করা হোক ? যখন প্রথম ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে সংস্কৃত নয় , তামিলকে মর্যাদা দেওয়া হল তখনও তারা সরব হননি অথচ কোন ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পেতে গেলে যেসব পূর্বশর্ত ওই সরকারই ঠিক করেছিলো তার সবকটিই সংস্কৃত পূরণ করে ।এদিকে তামিলকে স্বীকৃতি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যদের বিশেষত কন্নড় ও তেলেগুর দাবী জোরাল হতে শুরু করে । ২০০৮ এর মে মাসে কর্ণাটকে ক্ষমতায় এসেই সেই রাজ্যের নতুন বিজেপি সরকার কন্নড় কে বিশেষ ভাষা মর্যাদার দাবীকে সমর্থন করে এমনকি মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা ওই বছর ৫ ই নভেম্বর ওই দাবীতে রাজঘাটে ধর্নার হুমকী দেন। তড়িঘড়ি ১ লা নভেম্বর মনমোহন সরকার এই দুই ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে ঘোষণা করে।২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে ওড়িশাতে বিধান সভা নির্বাচন হয় । নির্বাচনের তিন মাস আগে ২১ শে ফেব্রুয়ারী মাসে ওড়িয়া কে ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা অনুমোদন দেয়।
কিসের ভিত্তিতে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হবে? ইউপিএ সরকার নির্ধারিত ‘গাইডলাইন’ অনুসারে – প্রথমত সেই ভাষাকে অতি প্রাচীন হতে হবে, ১৫০০ থেকে ২০০০ বছরের পুরনো নথিভুক্ত প্রারম্ভিক পাঠ / ইতিহাস থাকতে হবে ।দ্বিতীয়ত কোন বিশেষ জনগোষ্ঠী বা প্রজন্ম ওই ভাষা বা সাহিত্যকে তাদের ঐতিহ্য বলে মনে করে । তৃতীয়ত ভাষা বা সাহিত্য ধারাটি মৌলিক হতে হবে অন্য কোন ভাষাগোষ্ঠী থেকে ধার করা হবে না এবং ওই ধ্রুপদী ভাষা ও সাহিত্য আধুনিক প্রকার থেকে পৃথক হওয়ায়, ধ্রুপদী ভাষা এবং এর পরবর্তী রূপগুলি বা এর শাখাগুলির মধ্যেও বিচ্ছিন্নতা থাকতে পারে।তাহলে কি ২০১৪ সালে ইউপিএ সরকার যাবার আগে পর্যন্ত বাংলা ভাষার এসব গুণ বা বৈশিষ্ট্য ছিল না ; নাকি ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেই বাংলা ভাষা এসব গুণ অর্জন করে ফেলেছে ? কেউ কি খোঁজ নিয়ে দেখেছেন ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে ঘোষিত হয়ে প্রকৃত অর্থে কি লাভ হয় বা যেসব ভাষা ইতিমধ্যে ঘোষিত হয়েছে সেইসব ভাষার বা সেইসব জনগোষ্ঠীর কি লাভ হয়েছে ? এই পরিসরে সব লেখা যাবে না শুধু এটুকু বলা যায় – প্রায় কিছুই না।মানুষের আবেগকে উস্কে দিয়ে রাজনৈতিক লাভ আদায়ের একটা ব্যর্থ প্রচেষ্টা হিসাবেই এই ঘোষণা দেখা উচিত।
২০০৪ থেকে যখন বিভিন্ন ভাষাকে ধ্রুপদী মর্যাদা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হল তখন থেকে কি পশ্চিমবঙ্গ সরকার , বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী ভাষা–সাহিত্যের সংস্থা, ব্যক্তিগতভাবে পশ্চিমবঙ্গের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে মর্যাদা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণ ইত্যাদি সংগ্রহ ও নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সেগুলো নথিভুক্ত করার কাজ শুরু করেছিলেন ? না । কেন করেননি ? বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আমলে তখনতো ‘সংস্কৃতি’ উপছে পড়ছিল ! ২০১১ তে ক্ষমতাই আসার পর দুটো ভাষার – মালয়ালম ও ওড়িয়া – ‘ধ্রুপদী হয়ে ওঠা’ চোখে দেখেও কেন তৃণমুল সরকার মনমোহন সরকারের কাছে বাংলার দাবী রাখেনি? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলেই বোঝা যাবে কেন এখন এই দাবী উঠছে । ২০১৩ র ২৩ শে মে যখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা মালয়ালম কে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেয় তখন সে রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেসের ইউডিএফ সরকার । সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী ওমেন চান্দি এর কৃতিত্ব দাবী করলে পাল্টা গলা চড়ায় বিরোধী বামেদের ভি এস অচ্যুতানন্দন ।তিনি বলেন– ‘ এর জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতির কাজ বামফ্রন্ট সরকারই করে রেখেছিল’। আজ যদি বাংলার ধ্রুপদী মর্যাদা আসে এখানকার বামফ্রন্ট একথা বলতে পারবে ?
নতুন করে ধ্রুপদী ভাষার দাবী উঠেছে জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষণার পর। সেখানে বলা হয়েছে সংস্কৃত ছাড়াও অন্য পাঁচটি ধ্রুপদী ভাষা এবং পালি,প্রাকৃত ও পার্সিয়ান অনেক অমুল্য সাহিত্য সম্পদে সমৃদ্ধ । সেসব ভাষা সাহিত্যর পঠন-পাঠন ও সংরক্ষণ প্রয়োজন ।আর পরিস্কার করে বলা আছে – ‘মৌখিক এবং লিখিত সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং জ্ঞান সম্পন্ন সমস্ত ভারতীয় ভাষার জন্য একই প্রচেষ্টা করা হবে’। আর বলা হয়েছে – বাধ্যতামূলক নয় – চাইলে বিদ্যালয় স্তরে দুবছর সৃষ্টিশীল আনন্দদায়ক কার্যক্রম হিসাবে শিক্ষার্থীরা এইসব ধ্রুপদী ভাষা শিখতে পারবে। সুতরাং এখানে বাংলা কিভাবে বিপন্ন হচ্ছে ? বাংলা বিপন্ন যদি হচ্ছে তার কারণ এক শ্রেণীর আর্থিকভাবে সম্পন্ন মানুষ এবং সন্তানদের ভবিষ্যতের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা এক শ্রেনীর মানুষের ইংরাজীর প্রতি মাত্রাতিরিক্ত আস্থা। সেটা যে সম্পূর্ণ অমূলক তাই বা কি করে বলা যায় ! কজন সম্পন্ন বাঙ্গালী নেতা , মন্ত্রী, আমলা, সরকারী কর্মচারী , সাংবাদিক , বুদ্ধিজীবী, শিল্পী , ব্যবসায়ী তাদের ছেলেপুলে , নাতি-নাতনিকে বাংলা মাধ্যম স্কুলে পাঠান?একটা সমীক্ষা করা হোক না ! যারা মনে করেন হিন্দী আমাদের সব কেড়ে নিল তারা একটু দেখুনতো কজন হিন্দিভাষীর সন্তান হিন্দী মাধ্যমের স্কুলে পড়ে ? বাংলা তখন বিপন্ন মনে হয় যখন দেখা যায় শুধু বড় বা ছোট শহর নয় প্রত্যন্ত গ্রামেও ‘ ইংলিশ মিডিয়াম’ এর ছড়াছড়ি ।বাঙ্গালীর দৈনন্দিন কথাবার্তায় দু একটা হিন্দী শব্দ যেমন এসেছে তেমন এরাজ্যের একটা বড় অংশের মানুষের দৈনন্দিন কথাবার্তা উর্দু প্রভাবিত যদিও জন্মসূত্রে তারা বাঙ্গালী।এতেও বাংলা কোনোভাবে বিপন্ন হয়নি। আবার যেসব উর্দুভাষীর সামর্থ্য আছে তারাও ইংরাজী মাধ্যমে ঝুঁকছে । আসলে ইংরাজী তাদের কাছে জীবিকা অর্জনের ভাষা , সামাজিক স্বীকৃতির ভাষা এবং সর্বভারতীয় যোগাযোগের ভাষা । একইভাবে ইংরাজি যাঁদের নাগালের বাইরে তারা সর্বভারতীয় যোগাযোগের ভাষা হিসাবে হিন্দী শেখার চেষ্টা করছেন। যারা চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারতে যান তারা নিশ্চয় দেখেছেন সেখানকার ডাক্তারবাবু কিমবা নার্সরা এখন ভালোয় হিন্দি বোঝেন ও বলেন । কলকাতায় যে বিরাট সংখ্যক অহিন্দিভাষী অন্য রাজ্যের মানুষ জীবিকা অর্জনের জন্য এসেছেন তারাও হিন্দি এবং বাংলা শিখে গেছেন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে যে লক্ষ লক্ষ মানুষ পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে গুজরাটে বা অন্য রাজ্যে যান তারাও গুজরাটি বা অন্য ভাষার থেকে হিন্দিটাই শেখা সুবিধাজনক মনে করেন।পশ্চিমবাংলায় কাজ জুটলে তাদের গুজরাট বা অন্যত্র যেতেও হত না , হিন্দী শিখতেও হতো না। তাদের মাতৃভাষা না হওয়া সত্ত্বেও মোদী বা শাহ যে ঝরঝর করে হিন্দি বলেন তাও সর্বভারতীয় সংযোগের ভাষা হিসাবে । সেই দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বড় অংশই অহিন্দিভাষী ।যে বিজেপির প্রতি হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ সেই দলের এখনো অব্দি এগারোজন সভাপতির মধ্যে পাঁচ জনের মাতৃভাষা হিন্দি নয় ।এখনো অব্দি আর এস এস এর ছয়জন সরসঙ্ঘচালকের মধ্যে মাত্র একজন হিন্দিভাষী ছিলেন। একটা বিদেশী ভাষা ইংরাজীর প্রতি এত প্রেম অথচ দেশের মাটীর ভাষা সংস্কৃত বা হিন্দির প্রতি এত বৈরি ভাব কেন ?
স্রেফ একটা সরকারী ঘোষণা বাংলা ভাষার মর্যাদা বৃদ্ধি করতে পারেনা । যে উন্নতমানের সাহিত্য বাংলা ভাষায় রচিত হয়েছে তা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত । বাংলা-সাহিত্য ,বাংলা-গান , বাংলা-নাটক , বাংলার সাংবাদিকতাকে আজ প্রকৃত অর্থে বাংলার করে তুলতে হবে এবং তা বাঙ্গালীদেরই করতে হবে ।বাংলা খবরের কাগজ ও অন্যান্য প্রকাশনায় যেসব নবীন লেখকদের লেখা প্রকাশিত হয় তাদের উপযুক্ত অর্থ দিতে হবে ,দশ লাখ ‘সারকুলেশনের’ বাংলা কাগজে রবিবার একটা ছোট গল্প বেরোলে অন্ততঃ পাঁচ হাজার টাকা লেখককে দেওয়া উচিত। রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলোর কর্মীর অভাব ঘুচিয়ে ও আধুনিকীকরণ করে চাঙ্গা করে তুলতে হবে ।বাংলা মাধ্যমের স্কুলগুলোকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত করে আরও ‘স্মার্ট’ করতে হবে যাতে অভিভাবকরা সেখানে সন্তানদের পাঠাতে উৎসাহ পান।সর্বোপরি বাংলা চর্চা করলেও জীবিকা অর্জনে অসুবিধা হবে না এই প্রত্যয় জাগাতে হবে । আর বাংলার সাহিত্যিক ,ভাষাবিদরা যদি মনে করেন যে ইউপিএ সরকারের তৈরি ‘যোগ্যতামান’ বাংলা ভাষাও পূরণ করে তাহলে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও বিধিবদ্ধ ভাবে বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে ঘোষণার দাবী জানাতে পারে যেমনভাবে অন্য ধ্রুপদী ভাষার ক্ষেত্রে হয়েছে ।আর চাইলেও বর্তমান কেন্দ্র সরকার তা ঘোষণাও করতে পারবে না , অতীতে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে সেভাবে এই ঘোষণা করতে গেলে খানিকটা সময়ও লাগবে । ততদিনে একুশের নির্বাচন মিটে যাবে ।
সোমেশ্বর বড়াল (Someshwar Baral)