ওয়াং ‘উইলিয়াম’ লিকিয়াং (Wang “William” Liqiang) নামে এক আত্ম-স্বীকৃত চীনা (Chinese) গুপ্তচর হংকং, তাইওয়ান এবং অস্ট্রেলিয়ায় গণপ্রজাতন্ত্রী চীন ওরফে কমিউনিস্ট শাসনের রাজনৈতীক প্রভাব বিস্তারের জন্য সমগ্র দুনিয়াব্যাপী ইহার ব্যাপক গুপ্তচরবৃত্তি ও হস্তক্ষেপমূলক কার্যকলাপের সর্বপ্রথম এক চমকপ্রদ বর্ণনা প্রকাশ করেছিলেন। ২৮ বছর বয়সী এই চীনা গুপ্তচর স্বীকার করেন যে বর্তমানে করোনা মহামারীর দরুন প্রত্যাহৃত গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অনধিকার হস্তক্ষেপের মাধ্যমে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি চীনের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলসমূহে গণতান্ত্রিক আন্দোলনগুলিকে অস্থিতিশীক করে তোলার সার্বিক চীনা প্রচেষ্টার সে সক্রিয় অংশীদার ছিল। তিনি অভিযোগ করেন যে তাকে শেষ কাজ হিসেবে তার তথাকথিত এক ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার মনিব (boss) ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অনধিকার হস্তক্ষেপ করতে নিযুক্ত করেছিলেন, যদিও এই নির্বাচন পরবর্তীকালে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট সাই ইং-য়েন (Tsai Ing-wen) জয়ী হয়েছিলেন।
ওয়াং উইলিয়াম লিকিয়াং তাঁর জীবন রক্ষা করতে এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নির্যাতনমূলক, সর্বগ্রাসী ও স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের প্রকৃত চরিত্র উদঘাটনে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। তিনি ২০১৯-এর নভেম্বরের শেষদিকে ’60 Miniutes Australia’ নামে এক সংবাদ সংস্থার কাছে চীনের উক্ত কার্যকলাপ ফাঁস করার চেষ্টা করেছিলেন যখন তিনি তার ও তার পরিবারে সদস্যদের জীবনহানি সম্পর্কে আশঙ্কিত হয়েছিলেন। ওয়াং আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তার এই বিশ্বাসভঙ্গের দরুন চীনে বসবাসকারী তার পিতা-মাতাকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (CPC) হত্যা করবে। ওয়াং তার মনিবের প্রদত্ত রাডার পরিত্যাগের পর অস্ট্রেলিয়াতেও তাকে চীন (China) অনুসরন করেছিল এবং এই বিষয় সম্পর্কে অবহিত হয়ে তিনি ইতিমধ্যে তিনবার তার বাসসস্থানের ঠিকানা বদল করেছিল। অস্ট্রেলিয় গোয়েন্দা সংস্থা (ASIO) ইতিমধ্যে দক্ষিন চীনসাগরে চীনের গৃহীত অবস্থান বিষয়ে চীনের সাথে বিবাদের সময় থেকেই অস্ট্রেলিয় সমাজ ও রাজনীতিতে চীনের গুপ্তচর মাধ্যমের (Spy Network) অবৈধ হস্তক্ষপের প্রচেষ্টা সম্পর্কে অবহিত ছিল। অস্ট্রেলিয় গোয়েন্দা সংস্থা চীনা গুপ্তচর সংস্থার ভয়ঙ্কর কার্যকলাপের কথা মাথায় রেখে চীনের সম্ভাব্য উদ্দেশ্যসমূহ ও বিশ্বে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য অসংশোধনীয় বাসনা সম্পর্কে তদন্তে অবতীর্ণ হয়েছিল।
চীনা (China) মদতপুষ্ঠ হংকং-এর প্রধান ক্যারি ল্যাম-এর দ্বারা সূচিত প্রত্যর্পন বিলের বিরোধিতা করতে সহস্র মানুষকে পথে অবতরনকারী হংকং আন্দোলন ইহাতে ওয়াংকে অন্তর্ঘাতের জন্য নিয়োগের আগে পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ছিল এবং ওয়াং তার অধীনে একটী দলকে নিয়ে এই আন্দোলনকে সহিংসতায় পর্যবসিত করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল। চীনা-বিরোধী সাহিত্য প্রকাশকারী পাঁচ জন প্রতিষ্ঠিত হংকং নাগরিক একের পর এক রহস্যজনকভাবে অন্তর্হিত হয়ে যায়। Causeway Bay Books-এর এইরকম একজন মালিক ও ম্যানেজার লাম উইং-কি (Lam Wing-kee) ওয়াং-এর নির্দেশে অপহৃত হন এবং পরে তাকে মূল চীনা ভূখন্ডে খুঁজে পাওয়া যায়। এই অপহরনের সংবাদ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করেছিল যা হংকং (Hong Kong) -এর অধিবাসীদের ক্ষোভ বৃদ্ধি করেছিল। ওয়াং জানায় তারা প্রথমে গণতান্ত্রিক মতামত প্রকাশকারী ছাত্র সংসদের সাথে মিত্রতা স্থাপন করেছিল; পরে তারা কি পাঠ করে সে সম্পর্কে গোপনে খোঁজখবর চালায়, তাদের ব্যক্ত চিন্তাভাবনায় আড়ি পাতে ও চীনা-বিরোধী সাহিত্যগুলির মূল্যায়ন করে এবং ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে চীন ও কমিউনিস্ট পার্টি’র প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসার যুক্তি রোপন করে। ওয়াং জানায় যে, তার তত্ত্বাবধানে আন্দোলনে পেট্রোল বোমার ন্যায় অস্ত্রসহ গুপ্তচর অনুপ্রবেশ করে এবং সুসংঘবদ্ধভাবে পুলিশকে সরল শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে প্রতি-আক্রমন চালাতে সহায়তা করার জন্য উত্তেজনার সঞ্চার করেছিল। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে হিংসা সংক্রমনের এই কৌশল আশ্চর্যজনকভাবে Vedanta Sterling Copper Smelting Protest, অসনাক্তকৃত উৎস থেকে গুলি চালানোর ফলে এক কৃষকের মৃত্যু হওয়া মহারাষ্ট্রের কৃষক আন্দোলন এবং দিল্লি দাঙ্গার ন্যায় ভারতের ঘটনাসমূহের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। গুপ্তচরের মাধ্যমে একটি প্রতিবাদ আন্দোলনকে সহিংসতায় পর্যবসিত করার বিষয়টি এক ভয়ঙ্কর কার্যপ্রণালী যে সম্পর্কে সমগ্র বিশ্বকে দ্রুত অবহিত করা উচিত।
ওয়াং উইলিয়াম লিকিয়াং ও CPC-র কাছে ২০২০ সালে তাইওয়ানের (Taiwan) নির্বাচন ছিল গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট সাই ইং-য়েন-এর ক্ষমতায় পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনাকে বানচাল করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য কারন সাই ইং-য়েন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির তাইওয়ানকে কব্জা করার অশুভ প্রয়াসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ও প্রতিকূল স্বরুপ ছিলেন এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র মনোভাবাপন্ন ছিলেন। ওয়াং জানান Public Pension Reform, সমলিঙ্গ বিবাহ, দূষণ ও শ্রমিক সংস্কারসমূহের ন্যায় বিভিন্ন আভ্যন্তরীন্নীতি নির্ধারন বিষয়সমূহকে ভিত্তি করে অসন্তোষ সৃষ্টি করা হয়েছিল। সুপরিকল্পিতভাবে বৌদ্ধ মন্দিরগুলির মর্যাদাহানি ঘটানো হয়েছিল কারন এইগুলি তাইওয়ানি রীতিনীতির গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্র ছিল। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টকে বিপন্নতার আবর্তে নিক্ষিপ্ত করার অন্যতম চাবিকাঠি ছিল সংবাদমাধ্যম ও তৃণমূল স্তরের সংগঠনগুলিতে অনুপ্রবেশ। ওয়াং জানায় চীন এবং আমেরিকার মধ্যে সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক রাজনীতিতে তাইওইয়ান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল এবং তাইওইয়ানকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ বাধতে পারত। এইক্ষেত্রেও ভারতের বেশকিছু সাম্প্রতিক বিষয় যেমন- শবরীমালা মন্দির সংক্রান্ত বিতর্ক বা সাম্প্রতিককালে এন.ডি.এ সরকার কর্তৃক পাশ হওয়া সমকামী স্বাধীনতা আইনের সম্পর্কে ভারতের মর্যাদাকে আঘাতকারী ভারতের বামপন্থী ও নক্সালদের অসাড় (peddling) বিবরণের ক্ষেত্রে আশ্চর্যরকম সাদৃশ্য পাওয়া যায়। কিভাবে বর্তমান ভারত সরকারের এবং ভারতের গো-বলয়ের ন্যায় জাতিগত মন্তব্যসমূহ ও ব্যক্তিগত আক্রমনের দ্বারা বর্তমান নেতৃবর্গের নীতিকে দূর্বল করার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে আঘাত করা হচ্ছে তা সহজেই উপলদ্ধি করা যায়।
ওয়াংকে (Wang) যখন তাইওয়ানে (Taiwan) উক্ত প্রতিহিংসাপরায়ন কাজ সম্পাদনের জন্য তার একটি সম্পূর্ণ নতুন পরিচয় সম্পর্কে তাকে অবহিত করে প্রদান করা হয় তখন সে পুরো বিষয়টি সম্পর্কে সন্দিগ্ধ হয়ে পড়েছিল। একমাত্র তখনই সে তার প্রদত্ত কাজ ও তার থেকে উদ্ভূত মারাত্মক বিপদ উপলদ্ধি করতে পারে; এর আগে পর্যন্ত তাকে বোঝানো হয়েছিল যে সে তার দেশের জন্য কাজ করছে এবং এটা তার স্বাদেশিক কর্তব্য। এইভাবে ওয়াং তার মনিব প্রদত্ত রাডার পরিত্যাগ করার ও অস্ট্রেলিয়াতে আশ্র্য় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যেখানে তার স্ত্রী পড়াশুনা করত এবং তার সাথে তাদের একটি ২ বছরের শিশু ছিল। অস্ট্রেলিয়ার শত্রুপক্ষের গুপ্তচরবৃত্তির বিপক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি’র আক্রোশ জনসমক্ষে এইভাবে উন্মোচনের দ্বারা ওয়াং তার জীবনকে প্রবল বিপদের মধ্যে নিক্ষিপ্ত করেছে।
ওয়াং অস্ট্রেলিয় রাজনীতিতে চীনা কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য বহু চীনা ব্যবসায়ী মারফৎসেই দেশে গভীর গুপ্তচর মাধ্যমের বিবরণ দিয়েছে। অস্ট্রেলিয় গোয়েন্দা সংস্থা (ASIO) এক চীনা দ্বারা পরিকল্পিত পূর্ব মেলবোর্ন-এর লিবারেল পার্টির প্রার্থী ৩২ বছর বয়সী গাড়ি ব্যবসায়ী নিক জাও-এর হত্যাকান্ডের তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু করেছিল এবং বর্তমানে এই আসনটি অস্ট্রেলিয়ার প্রথম চীনা সাংসদ গ্ল্যাডসি লিউ (Gladsy Leu)-এর দখলে এবং অস্ট্রেলিয় সংসদে একজন চীনার নির্বাচিত হওয়ার দরুন তাকে নিয়ে প্রবল বিতর্ক হয়েছিল। অবসরপ্রাপ্ত ASIO প্রধান ডাঙ্কান লুইস-এর মতে চীন এক প্রতারনামূলক পন্থা ও সুপরিকল্পিত গুপ্তচরবৃত্তি ও অপ্রয়োজনীয় প্রচারের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থার উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। এমনকি সরকার ও নিরাপত্তা পরিষেবার সাথে গোপন যোগসাজশের মাধ্যমে চীন অস্ট্রেলিয় সংসদ ও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সিস্টেমে সাইবার অ্যাটাকের ন্যায় কাজকর্মের জন্য ব্যাপকভাবে অভিযুক্ত হয়।
ওয়াং তথাকথিত এক ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার ও গুপ্তচর এজেন্ট সিয়ন শিং (Schion Shing)-এর অধীনে চীনা সরকারের পক্ষে কাজ করত। এই সিয়ন শিং হংকং-এর এক অফিসের উচ্চপদস্থ এক সামরিক আধিকারিক ছিলেন। ওয়াং জানায় অস্ট্রেলিয়ার সুরক্ষা ভিসার আবেদনের আগে পর্যন্ত তার পরিবার তার কাজের সম্পর্কে কিছুই জানত না। তার এই অল্প বয়স্ক ও অতিসরল মুখাবয়বে এক আতঙ্কের ছাপ বিদ্যমান ছিল এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টি তাকে হত্যা করার নিরন্তর হুমকি প্রদান করে যার অমানবিক নির্যাতন, মানবজীবনের সম্পূর্ণ অমর্যাদা সম্পাদনের এক ভয়ঙ্কর ইতিহাস রয়েছে এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টি চীনের নাগরিকদের ব্যবহারের বিষয়বস্তু বলে মনে করে।
বরাবরের ন্যায় চীন বিশ্বাসঘাতক ওয়াং ‘উইলিয়াম’ লিকিয়াংকে বেকার প্রতারক ও পলাতক হিসেবে তুলে ধরে, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদানের জন্য আহ্বান বৃদ্ধি পায়। চীনা বিদেশমন্ত্রকের প্রবক্তা Geng Shuang ওয়াং-এর উক্ত দাবিকে খারিজ করে দিয়ে ‘তথাকথিত গুপ্তচর সাজানো’র জন্য ‘অস্ট্রেলিয়ার কিছু রাজনীতিবিদ, সংবাদ মাধ্যম’কে দায়ী করেছেন এবং একটি বিচার কার্যের ভিডিও প্রকাশ করে যেটিকে ওয়াং উইলিয়াম খোলাখুলিভাবে খারিজ করেছেন।
চিন নামক ব্ল্যাক বক্সটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাফিয়া গ্রূপের দ্বারা পরিচালিত হয় যেটি অর্থ শক্তি ও দমনমূলক কৌশলসমূহের মাধ্যমে প্রতিটি অন্য সত্ত্বার উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় আগুয়ান। শেষের সেঈ সময় নিকটে উপস্থিত এবং সে সম্পর্কে আমাদের সচেতন হওয়া উচিৎ। বিশ্বকে এই আস্ফালনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং সকল মানবতার এক সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে। যেভাবে চীন করোনা ভাইরাস (Covid-19) নিয়ন্ত্রণ করল তা আমাদের কাছে সর্বশেষ সতর্কতা হওয়া উচিৎ এবং ইহা পাশবিক বল ও অর্থ শক্তি দ্বারা বিশ্ব সংগঠনগুলির সাথে চক্রান্তে লিপ্ত।
চীনের কমিউনিস্ট পার্টি নামে পরিচিত নারকীয় প্রহসন এবং ইহার সমগ্র বিশ্বে ভীতি প্রদর্শনকারী শক্তি প্রসারের প্রক্রিয়া স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে এবং অবশ্যই তা ইতিহাসের কালো পাতায় স্থান পাবে। এই শাসনের সম্পূর্ণ অবলুপ্তিকরনের এটাই আদর্শ সময় এবং নতুন এক বিশ্বব্যবস্থার উদ্ভব হবে তা প্রত্যাশা করা যায়।
অনুবাদ- অধ্যাপক শুভজিৎ আওন (Professor Shubhjit Aon)
মূল নিবন্ধ – লেখক : নবনীল স্যনাল, চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং সামাজিক কার্যকর্তা
The Great Game
Wang “William” Liqiang a self confessed Chinese Spy agent revealed startling details in a first time ever charge of extensive espionage and interfearing operations around the world by the People’s Republic of China aka the Communist Regime to flex its political clout across Hong Kong , Taiwan and Australia. The 28 yrs old Chinese said he had been in the thick of the efforts by the communist Party to destabilise the democratic processes around its territory by meddling with the democratic Honkong protest now withdrawn due the Corona Pandemic. He alledged the last task he was assigned by his boss a so called investment banker to influence the Taiwan Presidential election of 2020 when he decided to requested for protection visa in Australia which was later won by the incumbent president Tsai Ing-wen.
Wang william Liqiang desperate to save his life and illustrate the true face of the oppressive, totalitarian and dictatorial regime of the communist party sought to wistleblow the antiques to a News Agency ‘60 minitues Australia’ around 2019 november end when he feared for his life and his family. Wang whose father and mother stays in china fear CPC will kill them because he is a traitor to the state. Knowing that he is being followed in Australia as well since he dropped of the radar of his boss, he changed home 3 times already. .. Australian Intelligence Agency ASIO already had reports of chinese spy network’s attempts to infiltrate in Australian parliament and politics since their fallout with China over China’s stance of south China sea disputes, took cogniance of the horrendous activies of the spy agency of PRC and has initiated investigation to the ulterior motives of China and its incorrigible hunger for World dominance.
The Hong Kong protest where millions poured over in streets to dissent the extradition bill (one of the five key demands) introduced by the chinese backed Chief of Hong kong Carri Lam was peaceful until Wang was assigned to infiltrate the protest and he worked with a group under him to turn it violent. 5 established citizens of Hong Kong who published anti china literature one by one disappear.One such Owner and manager of Causeway Bay Books Lam Wing-kee was kidnapped under the direction of Wang and later resurfaced in Mainland China . The news of the abdution was noted by international media and the contempt of the citizens augmented. Wang alleges he first befriended students’ groups supporting their cause of democratic expressions, later spied on the articles they read, evesdropped their ideas and assessed literatures against china and slowly injected reasoning toward the love for the mainland and thecommunist party. Wang asserted under his supervision the protest was penetrated with spies armed with petrol bombs and deliberately introduced arsoning to help the police launch counter attack on gullible peaceful protesters. The technique is uncannily similar to the protests which turned violent in India like the Vedanta Sterling copper smelting protest, the Maharashtra Kissan protest where a farmer was killed in firing from unidentified sources and the recent Delhi Riots. The introduction of spies to turn a protest violent is an alarming modus operandi which the whole world should be made aware of at the earliest.
The 2020 Taiwan election was the most important assignment for Wang William Liqiang and CPC to execute and jeopardise the possibity of a return of the incumbent President Tsai Ing-wen who is vocal and considered hostile to the Communist Party of China’s sinister efforts to overtake country and is known to be US friendly. Wang said discontent was manufactured over numerous domestic policy issues, including public pension reform, same-sex marriage, pollution, and labour reforms. There was a systematic approach to insult the Buddhist temples because they are important social and political hubs for Taiwanese ethos. Penetrating the media and grassroot organisations was key to undermine the incumbent President. Wang goes on to say Taiwan is the most important faultline in current Geoplitics between China and Us and it can trigger a war anytime. There is again an eery similarity of how the leftist the naxalites in India go about their business of peddling a narrative which hurts the ethos of our country like the sabrimala temple issue, the homosexual liberty law which was recently passed in india by the NDA govt. One clearly gets to understand how the cultural aspects are systematically targeted to weaken the standing of the current government and the leaders of current time by personal attacks and racist comments such as the cow belt of india.
Wang became apprehensive when he was presented and handed over a complete new identity to take up this vindictive assignment. Only then understood the severity of his work and grave danger it can transpire to, until then he was made to believe he was working for the Country and it was his patriotic duty. Wang thus decided to drop of the radar of his boss and seeked asylum in Australia where his wife studied and has a kid 2 yrs old. The counter- espionage experts of Australia believe he has put his life in severe danger by coming out in open to expose the Communist Party of China of its malice.
Wang William Liqiang went on to elucidate the deep spy network in Austalia in cahoots with multiple Chinese businessmen in streaming China’s hold in the politics of the country. AISO was already investigating a 2015 murder case of a 32 yr old car dealer Nick Zao cultivated by the Chinese who was a candidate of the Liberal party from east melbourne seat currently held by the first chinese MP Gladsy leu who was shrouded in a huge controversy for being a chinese implant in the Australian parliament. Retired ASIO chief Duncan Lewis said that China wanted to “take over” Australia’s political system with an “insidious” and systematic campaign of espionage and influence peddling.China is also extensively alleged of being behind major cyberattack into the computer systems of Australia’s parliament and a university with close ties to the government and security services.
Wang exposed he worked for the Chinese govt as an under cover spy agent under Schion Shing a so called investment banker who was a high ranking military officer from an officein Hong Kong. He said his family didn’t know of his work until he applied for a protection Visa in Austalia. His young age and gullible face has a deep sense of palpable fright and is under constant threat of being terminated by the Communist party of China which has a terrible history of inhumane atrocities and total disregard for human life and is known to use its citizens as subjects of use.
As always China has tried to paint defector Wang “William” Liqiang as an unemployed fraudster and fugitive, but there are growing calls in Australia to grant him political asylum. Chinese foreign ministry spokesman Geng Shuang denied the claims, accusing “some politicians, organisations and media in Australia” of “cooking up so-called China spy cases.” and showed a video of a court procedding which Wang William has categorically denied.
The black box called china is run by the biggest Mafia group in the world which arm twists every other entity with Money power and coercive techniques…Beware and behold the end has to be near. The world needs to stand up to this bully once and for all for humanity to have a secured future. The way china handled the Covid-19 pandemic should be the final eye opener and its cahoots with all the World organisations by using brute force and money power.
Its time the diabolical farce called Communist party of China and the menacing power it flexs across the world is categorically exposed and put in the pages of a dark dark history. Its time this regime is put to rest and dusted and hope a new world order emerges.
Nabanil Sanyal
Film Maker, Social Activist