সপ্তাহখানেক আগেই পুলিশ ট্রেনিং স্কুলেরই দুজন পুলিশ কর্মীর করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পর মঙ্গলবার রাত থেকে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। মূলত পুলিশকর্মীরা পিটিএসের সামনে এজেসি বোস রোড অবরোধ করে। দ্বিতীয় হুগলী সেতু যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। বাঁশ দিয়ে ডিসি কমব্যাটকে পেটানোর অভিযোগ ওঠে পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা পৌঁছলে তাদের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদ হয় বিক্ষোভকারীদের।
সেদিনই প্রথম কলকাতা পুলিশে নজিরবিহীন ‘সিপাহী বিদ্রোহ’ প্রত্যক্ষ করেছিল শহরবাসী। পরিস্থিতি সামলাতে ছুটে আসতে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকে। এবার সেই পুলিশ ট্রেনিং স্কুলেই একসঙ্গে খোঁজ মিলল ১২ জন করোনা পজিটিভ পুলিশকর্মীর। সেদিন পুলিশ কর্মীদের বিক্ষোভ অমূলক ছিল না, একসঙ্গে এতজন পুলিশ কর্মীর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
এই ১২ জন পুলিশ কর্মীর মধ্যে ৯ জন কনস্টেবল, ২ জন এএসআই বা অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর এবং এক জন গাড়িচালক। করোনা আক্রান্ত এদের প্রত্যেককেই বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একসঙ্গে এত জন পুলিশকর্মী আক্রান্ত হওয়ায় কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে যথেষ্ট আতঙ্কিত অন্যান্য পুলিশকর্মীরা।
অভিযোগ, গত ২ মাসের মধ্যে কলকাতায় বিভিন্ন থানায় পুলিশ কর্মী এবং অফিসার মিলিয়ে প্রায় ৫০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। তাতেও মৌখিক আশ্বাস ছাড়া তাদের নিচুতলার জন্য সেভাবে কোনও সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়নি। একই ভাবে সোমবারও করোনা সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি এক পুলিশকর্মীর মৃত্যু হলে গরফা থানা ভাঙ্গচুর করেন পুলিশকর্মীরা। কাজ বন্ধ করে থানার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা গিয়ে বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। কিন্তু কলকাতা পুলিশ বিভাগের এই বারবার জ্বলে ওঠা বিক্ষোভের ফুলকি প্রশমনে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তা যে অচিরেই দাবানল হয়ে দাঁড়াবে, তা কিন্তু বুঝিয়ে দিচ্ছে পরিস্থিতিই। বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট আশঙ্কায় রয়েছেন লালবাজারের শীর্ষ কর্তারাও।