এককথায় বেনজির। ‘অপরাধের সব সীমা ছাড়ানো’র শাস্তি হিসেবে দিল্লির বৃহত্তম মধুচক্রের পাণ্ডা সোনু পাঞ্জাবনকে ২৪ বছরের কারাদণ্ড দিল রাজধানীর এক বিশেষ আদালত। কুখ্যাত এই সমাজবিরোধীর বিরুদ্ধে মানব পাচার, অপহরণ, মধুচক্র চালানো, জোর করে নাবালিকাদের দেহ ব্যবসায় নামানোর মতো ভুরিভুরি অভিযোগ আছে। এককথায় দিল্লির মহিলা সম্পর্কিত অপরাধের কিংপিন ছিল সে। সেই কুখ্যাত অপরাধীকে এবার ২৪ বছরের জেলের ঘানি টানতে হবে। তার সঙ্গী সন্দীপ বেদওয়ালেরও ২০ বছর জেল হয়েছে।
সোনু পাঞ্জাবন (Sonu Punjaban) ওরফে গীতা অরোরার (এটিই আসল নাম) মূল পেশা নাবালিকাদের অপহরণ করে ‘হাই প্রোফাইল’ গ্রাহকদের যৌন চাহিদা মেটানো। মূলত দক্ষিণ দিল্লিতে তার আস্তানা হলেও দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে মধুচক্রের জাল বিছিয়েছিল সে। ২০০৭ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার হয় সে। কিন্তু প্রমাণের অভাবে ছাড়াও পেয়ে যায়। অবশেষে ১৩ বছরের এক নাবালিকাকে জোর করে দেহ ব্যবসায় নামানোর অভিযোগে শাস্তি পেল সোনু।
২০১৩ সালে ওই নাবালিকা সোনুর আস্তানা থেকে পালিয়ে যায়। পুলিশকে সে জানায়, সোনুর সঙ্গী সন্দীপ বেদওয়াল তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে। তারপর ১২ জন মিলে তাকে ধর্ষণ করে। তারপর সন্দীপের কাছ থেকে তাকে কিনে নেয় সোনু। সেখানে তাকে ‘হাই প্রোফাইল’ গ্রাহকদের উপযুক্ত করার জন্য ইংরেজি শেখানো হয়। বিশেষ ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় যাতে দ্রুত তাঁর শারীরিক বৃদ্ধি হয়। তারপর চারজনের কাছে বিক্রি করে সোনু। ওই নাবালিকার দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে ৩৫ বছর বয়সী গীতা অরোরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এটি ছাড়াও সোনুর বিরুদ্ধে আরও বেশ কয়েকটি মানব পাচার, অপহরণ, মধুচক্র চালানোর অভিযোগ ছিল।
বুধবার দিল্লির (Delhi) বৃহত্তম মধুচক্রের পাণ্ডাকে ২৪ বছরের জেলের সাজা দিয়েছে রাজধানীর এক বিশেষ আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তার ৬৪,০০০ টাকা জরিমানা করেছে আদালত। বেআইনি মানব পাচারের অপরাধে সোনুকে প্রথম ১৪ বছর জেলের সাজা দেওয়া হয়। এরপর ১০ বছর সে জেল খাটবে অপ্রাপ্তবয়স্ককে দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করা, দাসবৃত্তি করানো, জোর করে বন্দি করে রাখা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের জন্য। সোনুর সাজা ঘোষণার সময় বিচারপতি বলেন, “একজন মহিলা হয়ে এক নাবালিকার সঙ্গে যে ব্যবহার সে করেছে, তাতে নিজেকে মহিলা বলে পরিচয় দেওয়ার অধিকার হারিয়েছে সোনু। তার ভয়ংকরতম শাস্তি হওয়া উচিত।”