‘প্রণয় সন্ত্রাস’ শব্দটি অনেকের কাছেই অপরিচিত মনে হতে পারে।কিন্তু ‘লাভ জেহাদ’ সকলেরই পরিচিত শব্দ! ‘লাভ জেহাদ’ শব্দ দুটি অ-ভারতীয়।তাই পরিচিত হলেও বর্জন করা গেল।এবং ‘লাভ’ ও ‘জেহাদ’ মিলে যে ভয়াবহতা ভারতীয় সংস্কৃতিতে উদ্ভূত হয়েছে তাকে ‘সন্ত্রাস’ শব্দ দিয়েই যথার্থ ভাবে প্রকাশ করা যায়।যদিও গণমাধ্যমে এখনও পর্যন্ত ‘প্রণয় সন্ত্রাস’ ব্যবহার করা হয় না।কেন না আমরা ‘সুশীল’ সমাজের ততোধিক ‘সুধীজন’ ‘প্রণয় সন্ত্রাস’ নিয়ে মাথা খাটাই না।একটি দেশ,একটি সংস্কৃতিকে,একটি ধর্মকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে ‘প্রণয় সন্ত্রাস’ একটি অমোঘ অস্ত্র! এই অস্ত্র তাৎক্ষণিক কোনও রক্তপাত ঘটায় না।প্রাণহানিও ঘটায় না।পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী ক্ষতি করে।একটি ধর্ম-সংস্কৃতি তথা দেশকে বিধ্বস্ত করে দেয়।বিশেষত ভারতের ক্ষেত্রে ‘প্রণয় সন্ত্রাস’ দিনে দিনে ভয়াবহ আকার নিচ্ছে।ভারতের বিরুদ্ধে বাইরের ও দেশের ভিতরের শত্রু লাগাতর ভাবে ‘তথ্য সন্ত্রাস’,’শব্দ সন্ত্রাস’ ও ‘প্রণয় সন্ত্রাস’ দীর্ঘদিন যাবৎ চালিয়ে যাচ্ছে। এই জাতীয় সন্ত্রাসীদের আইনের মাধ্যমে শাস্তি দেবার মতো আইনি সংস্থান আমাদের দেশে নেই।কেন না,এই সন্ত্রাসীরা তৎক্ষণাৎ রক্তপাত বা প্রাণহানি ঘটায় না।তাই দেশে প্রচলিত আইনে এদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইন প্রয়োগ করা যায় না।আবার ‘প্রণয় সন্ত্রাস’-এর সাথে প্রাথমিক ভাবে সম্পত্তি বা আর্থিক সম্পর্কও জড়িত থাকে না।তাই দেওয়ানি আইনেও ‘প্রণয়’ সন্ত্রাসীদের বিচারের কাঠগড়ায় তোলা যায় না।
'প্রণয় সন্ত্রাস' কী ?
সহজ কথায় বললে দাঁড়ায় যে,প্রণয় বা প্রেমের বা ভালোবাসার ফাঁদে ফেলে হিন্দু কিশোরী-তরুণী কখনও-বা হিন্দু গৃহবধূদের ধর্মান্তরীত করে মুসলমান বানানো।খ্রিস্টান বানানো।ধর্ম বদল করিয়ে তাদের বিয়ে করে প্রণয় সন্ত্রাসীরা।আবার বিদেশে বিক্রি করেও দেয়।বিশেষত আরব দেশগুলিতে হিন্দু কন্যাদের চাহিদা খুব বেশি। ওই দেশগুলিতে হিন্দু কন্যাদের নানা ধরণের শারীরিক-মানসিক পীড়ন তো সহ্য করতেই হয়।তার সাথে দেহ ব্যবসাতেও বাধ্য করা হয়।
এ তো গেল বিক্রি হয়ে যাওয়া হিন্দু কন্যা-বধূদের কথা।কিন্তু যাদের বিক্রি করা হয় না,তাদের জন্য অন্য ব্যবস্থা করে প্রণয় সন্ত্রাসীরা।মনে রাখা প্রয়োজন যে,প্রণয় সন্ত্রাসীদের মূল লক্ষ্যই হল হিন্দুর ধ্বংস সাধন।ইসলামের বিস্তার ঘটানো।তাই কোমলমতী বা প্রণয়াকাঙ্খী হিন্দু কন্যা-বধূরা সহজেই সন্ত্রাসের শিকার হয়।প্রেমের ফাঁদে পড়ে তারা ঘর-সংসার ত্যাগ করে প্রতারক প্রেমিকের কাছে ছুটে যায়।প্রেমিক প্রথমেই ধর্ম বদল করায়।যাতে পরবর্তীতে তারা নিজ গৃহে আর না-ফিরতে পারে।এর পরের পর্ব বিয়ে।তার পরের পর্ব পরের-পর সন্তান জন্ম দেওয়াতে বাধ্য করা।অর্থাৎ মুসলিম জনসংখ্যার বৃদ্ধি ঘটানো।তবে এই ধর্মান্তরীত হিন্দু কন্যাদের মুসলিম পরিবারে গিয়ে সুখে সংসার করা ভাগ্যে জোটে না।তারা প্রতিনিয়ত গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হয়।সংস্কারিত হিন্দু কন্যারা অ-সংস্কারিত মুসলিম পরিবারে গিয়ে তার সবকিছুই হারাতে বাধ্য হয়।এমন-কি কখনো-সখনো জীবন হারাতেও বাধ্য হয়।এছাড়াও ‘প্রণয় সন্ত্রাস’-এর শিকার হওয়া হিন্দু কন্যাদের অন্য ভাবেও ব্যবহার করা হয়।সেটা হল,মগজ-ধোলাইয়ের মাধ্যমে সরাসরি জঙ্গি তৈরি করা।এবং ভারত তথা হিন্দুদেরই হত্যার জন্য ধর্মান্তরীত হিন্দু কন্যাদের কাজে লাগানো।মাস তিনেক আগে এমনই একজন বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হয়।যে আদতে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার এক হিন্দু কন্যা।যে কিনা নবম শ্রেনিতে পড়ার সময়ই প্রণয় সন্ত্রাসের শিকার হয়ে পরিবার ছাড়ে।সন্ত্রাসীরা ধর্মান্তরীত করে তাকে জঙ্গি বানায়।এবং মুসলিম যুবতী হিসেবেই বাংলাদেশের পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করে।তদন্তে আসল ঘটনা সামনে আসে।যদিও পশ্চিমবঙ্গের কিছু প্রথম সারির দৈনিক সংবাদপত্র যারা কিনা পেট্রো-ডলারে পুষ্ট,তারা এই জঙ্গির পৈতৃক হিন্দু নামই প্রকাশ করে চলেছে।মেয়ের এই অধঃপতন তার পরিবারও জানত না বলে সংবাদে প্রকাশ।এই ভাবে প্রতিদিনই শত শত হিন্দু কন্যা প্রণয়ের ফাঁদে পড়ে বিপথগামী হচ্ছে।নিজেদের অজান্তেই হিন্দু জনসংখ্যা কমিয়ে মুসলিম সংখ্যার বৃদ্ধি ঘটাচ্ছে।
কীভাবে ফাঁদ পাতে প্রণয় সন্ত্রাসীরা ?
সময় বদলের সাথে সাথে প্রণয় সন্ত্রাসীরা তাদের শিকারের কৌশলেরও পরিবর্তন ঘটিয়েছে।মোঘল-সহ অন্যান্য মুসলিম শাসন আমলে দেখা গিয়েছে হিন্দু কন্যাদের ভয় দেখিয়ে জোর পূর্বক বিয়ে করা হয়েছে।অস্ত্রের সামনে ধর্ম পাল্টাতে বাধ্য করা হয়েছে।আবার অনেক মুসলিম শাসক হিন্দু-মুসলমানে সৌহার্দ্যের বার্তা দিতেও হিন্দু কন্যাদের বিয়ে করে তাদের ধর্ম নাশ করেছে।কিন্তু মজার বিষয় সৌহার্দ্যের বার্তা দিতে নিজেরা ইসলাম ত্যাগ করে হিন্দু হন নি!এবার বুঝুন মুসলিমের হিন্দুপ্রেম “কারে কয়”!যবে থেকে ভারতে মুসলমানের আগমন ঘটেছে,তবে থেকেই হিন্দুদের ধর্ম নাশের প্রতি তাদের সজাগ কৌশল কার্যকরী থেকেছে।যা আজও রয়েছে।হিন্দু নারীদের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি রয়েছে তাদের।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে কয়েক লক্ষ হিন্দু নারী ধর্ষিত হয়েছেন।প্রাণ দিয়েছেন।অনেকেই বেঁচে থেকে ধর্ষণের ফলে গর্ভবতী হয়ে মুসলিমের ঔরসজাত সন্তানের জন্ম দিতে বাধ্য হয়েছেন।ফলে ওই সকল হতভাগ্য হিন্দু নারীরা মুসলিম জনসংখ্যা বাড়তে সাহায্য করেছেন।এছাড়া তাদের আর উপায়ও ছিল না।
বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া আবিষ্কারের আগে অন্য পদ্ধতিতে প্রণয় সন্ত্রাসীরা তাদের শিকার ধরত।বছর কয়েক আগেও দেখা যেত স্কুল-কলেজের সামনে স্কুল-টাইমে কিছু যুবক মোটর বাইক নিয়ে ঘুর ঘুর করত।তাদের চুল বাহারি রঙের!চোখে ততোধিক বাহারি চশমা থাকত।মুখে থাকত সিগারেট বা সুগন্ধি পান।চেহারায় কোনোরূপ মার্জিতের ছাপ থাকত না।তারা স্কুল-কলেজে আসা-যাওয়ার সময়ে পড়ুয়া কিশোরীদের সাথে আলাপ জমাতে ব্যস্ত থাকত।প্রয়াস চালাত।এই প্রয়াস চলত ধারাবাহিক ভাবে।দিনের পর দিন।
বয়ঃসন্ধিকালে এমনিতেই বিপরীত লিঙ্গের প্রতি কিশোর-কিশোরীদের আকর্ষণ বৃদ্ধি পায়।পরস্পরের সান্নিধ্যে আসতে জৈবিক কারণেই ভিতর থেকে তাগিদ অনুভব করে তারা।বাহারি চুল-পোষাক-বাইক শোভিত,সিগারেট-পানের সুগন্ধে মিষ্টি মিষ্টি অনুরাগ মিশ্রিত কথায় হিন্দু কিশোরীরা অগ্র-পশ্চাৎ না-ভেবেই জড়িয়ে পড়ত প্রেমে!মনে রাখা প্রয়োজন যে,এই ‘প্রেম ভিক্ষারী’ ‘প্রেমিকা শিকারি’-রা আসলে ‘প্রণয় সন্ত্রাসী’-রাই।আলাপ জমানোকালে তারা এমন-কিছু ছদ্মনাম ব্যবহার করে,যা দেখে হিন্দু-মুসলিম বা খ্রিস্টান কিছুই বোঝা যায় না।যেমন–আকাশ,রিকি বা রকি,নীল,কেজেএল বা কাজল ইত্যাদি।অন্যদিকে,সরল বিশ্বাসী কিশোরীরা নিজের প্রকৃত নামেই পরিচয় দিত।ফলে শিকারের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে যেত।
বর্তমানে স্কুল-কলেজের সামনে এই জাতীয় ‘প্রেম ভিক্ষারী’-দের আর দেখা যায় না।সরকারি বা অসরকারি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই নিরাপত্তার কারণে রক্ষী,সিসি টিভি ও অন্যান্য প্রকারের ব্যবস্থা করার ফলে বাইকশোভিত সন্ত্রাসীরা উধাও হয়েছে।
ওই একই কাজ তারা বর্তমানে করছে অনলাইনে বিভিন্ন প্রকারের সামাজিক যোগাযোগ ও গণমাধ্যম ব্যবহার করে।ফলে বিষয়টা আরও সহজ হয়েছে।সময়ও কম লাগছে।এখন সরাসরি শিকারের সাথে কথা বলা,ভাবের আদান-প্রদান,ছবি-ভিডিও-মতাদর্শের বিনিময় করা যাচ্ছে।ফলে সম্ভাব্য শিকারের মগজধোলাই ব্যাপারটাও করা যাচ্ছে নির্বিঘ্নে।’প্রণয় সন্ত্রাসী’-দের মূল লক্ষ্য কিন্তু সেই একটাই অ-হিন্দু জনসংখ্যা বৃদ্ধি করা।
সোস্যাল মিডিয়ার ভুয়ো প্রোফাইলে মজে অবিবাহিত কিশোরী-তরুণীদের পাশাপাশি অনেক হিন্দু গৃহবধূও ‘প্রণয় সন্ত্রাস’-এর শিকার হচ্ছে।ভুয়ো প্রোফাইলের আড়ালে কে আছে,তা যতদিনে জানা যাচ্ছে,ততদিনে তারা বড়ো-ই দেরি করে ফেলেছে।”ফিবরাব আর পথ নাই”!
প্রণয় সন্ত্রাসের আড়ালে কে ?
প্রণয় সন্ত্রাসের মূল লক্ষ্যই হল হিন্দু তথা ভারতের ধ্বংস সাধন।পরিবর্তে অ-হিন্দু ভারত গড়া।তা সে মুসলমান ভারতই হোক।বা খ্রিস্টান ভারতই হোক।
প্রণয় সন্ত্রাসে নিয়োগ করা হয় কিশোর ও তরুণদের।কেন না,এই বয়সীদের প্রতিই কিশোরী-তরুণী ও গৃহবধূরা জৈবিক কারণেই বেশি আকৃষ্ট হয়।কিন্ত প্রণয় সন্ত্রাসীরা শিকারের সামনে যে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ দেখায়,ওই রকম কম বসয়ে অতটা আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য তো তাদের আসার কথা নয়।তাদের মধ্যে দু-একজন বাদে কারওই চেহারায় আভিজাত্য বা আর্থিকভাবে স্বচ্ছলের ছাপ থাকে না।তাহলে প্রণয় সন্ত্রাসীরা দামী গাড়ি-বাইক-মোবাইল,নামী রেস্টুর্যান্টে শিকারকে নিয়ে খাওয়ানো,নানা জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার খরচ পায় কোথা থেকে ? আর কীভাবেই-বা পায় ? এখানে এসেই প্রশ্ন জাগে আড়ালে কে ? এত সংখ্যক প্রণয় সন্ত্রাসীর পিছনে কোটি কোটি ডলার খরচ করার ক্ষমতা কার আছে ?
পৃথিবীতে খ্রিস্টান ও মুসলমানদের জন্য নিজস্ব একাধিক দেশ রয়েছে।কিন্তু হিন্দুদের নিজস্ব দেশ বলে কিছু নেই।ভারত নামক যে একটি মাত্র দেশে হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ,সেটা-ও সাংবিধানিক ভাবে হিন্দু রাষ্ট্র নয়!সংবিধানে 'ধর্ম নিরপেক্ষ' বলে ভারতকে নপুংসক করে রাখা হয়েছে!এই নপুংসক দেশকে যদি অ-হিন্দু করে খ্রিস্টান বা মুসলমান রাষ্ট্র বানানো যায়,তাহলে পৃথিবীতে আরেকটি খ্রিস্টান বা মুসলমান দেশ বাড়বে।আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ভারতকে তো সরাসরি যুদ্ধের মাধ্যমে পরাজিত করে মুসলিম দেশ বা খ্রিস্টান দেশ বানানো যাবে না! তাহলে উপায় ? উপায় সেই প্রণয় সন্ত্রাসজনিত সন্তান উৎপাদনের মাধ্যমে ভারতে অ-হিন্দু জনসংখ্যার বৃদ্ধি ঘটানো।তার জন্য নিজ ধর্মের মধ্যে একাধিক বিয়ে করো আর পিল পিল করে সন্তানের জন্ম দাও।নাহলে হিন্দু কন্যা-রমণীকে ছলে-বলে-অর্থে কব্জা করে,ধর্মান্তরীত করে,তাদের গর্ভে অ-হিন্দুর ঔরসজাত সন্তানের জন্ম দেওয়াও!তাতেই নপুংসক ধর্ম নিরপেক্ষ ভারত এক সময় হিন্দুশূন্য হবে।যেমনটা বাংলাদেশ হয়ে চলেছে।ভারত স্বাধীন হবার পর সব হিন্দুই তো আর উদ্বাস্তু হয়ে ভারতে আসেনি।যারা ছিল বা এখনো আছে,তাদের অনেকেই মুসলিম-চাটা অথবা মুসলিম হয়েই আছে!তবে বাংলাদেশ হিন্দুশূন্য হতে দেরি নেই।ওখানে হিন্দু-নিপীড়ন ও প্রণয় সন্ত্রাস দু'ভাবেই হিন্দুশূন্য করার প্রক্রিয়া চলেছে!
আবার আধুনিক আফগানিস্তানকে দেখুন।এর প্রাচীন নাম ছিল গান্ধার।রামায়নের সীতার পৈতৃক রাজ্য হল গান্ধার।কয়েক হাজার বছর ধরেই গান্ধার ছিল হিন্দু রাষ্ট্র।কিন্তু মাত্র দেড়-দুশো বছরের মধ্যেই সেটা হিন্দুশূন্য হয়ে গেল কোন্ যাদুবলে ! সেই হিন্দু-পীড়ন আর প্রণয় সন্ত্রাসের ফলেই।
এবার ভাবুন ভারতকে হিন্দুশূন্য করার জন্য প্রণয় সন্ত্রাস চালাতে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা কোথা থেকে আসছে।
কেন ভারতে প্রণয় সন্ত্রাস উর্ধ্বমুখী ?
সকলেই জানেন যে,সমাজদেহে পচন ধরে সমাজেরই অভ্যন্তরীণ নানা কারণে।তেমনই ভারতে প্রণয় সন্ত্রাসের বাড়বাড়ন্ত ভারতেরই অভ্যন্তরীণ কারণের সাথে সংযুক্ত।বিদেশী-বিধর্মী অ-সনাতনীদের মদত রয়েইছে।তদুপরি ভারতের আইনি ব্যবস্থাও সমান ভাবে দায়ী।স্বাধীনতা প্রাপ্তীর পর দীর্ঘকাল ভারত শাসন করেছে অ-সনাতনী ও অ-ভারতীয় মনোভাবাপন্ন শাসক দল ও শাসকগোষ্ঠী।যাঁরা মোটেই রাষ্ট্রবাদী ছিলেন না।তাঁরা ভারতকে ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে একটা বিশ্রী রকমের কাপুরুষ বানিয়ে রেখেছে।সংবিধানগত ভাবে ধর্ম নিরপেক্ষ বানিয়েছে ঠিকই,কিন্তু সরকারি ব্যবস্থাপনায় আবার মাদ্রাসা শিক্ষার সংস্থান রাখা হয়েছে! কিন্তু হিন্দু ধর্ম সংক্রান্ত শিক্ষা রাখা হয় নি।স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময় ধরে ভারতের কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী কোনো-না-কোনো মুসলিম থেকেছেন।ফলে যা হবার তাই হয়েছে!এরই ফাঁক গলে তৈরি হচ্ছে ভারত বিরোধী মনোভাব।হিন্দু বিনাশকারী কৌশল,জঙ্গি তৈরির কারখানায় পরিণত হয়েছে কিছু কিছু মাদ্রাসা।এ-বিষয়ে একাধিক অভিযোগ সামনে আসে মাঝে মাঝেই।অনেকেরই হয়ত মনে আছে পশ্চিমবঙ্গে বাম জমানার শেষের দিকে ঘটে যাওয়া এক নারকীয় ঘটনার কথা।নদীয়ার আইশমালির একটি নির্ণীয়মান মাদ্রাসা থেকে হিন্দু বরযাত্রী বোঝাই একটি বাসের উপর হামলা চালানো হয়েছিল।মারধোর,ছিনতাই,মহিলাদের শ্লীলতাহানি কোনো অপকর্ম করতেই বাদ দেয়নি হামলাকারীরা।তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন সব বেআইনি মাদ্রাসাগুলি বন্ধ করে দেওয়া হবে।কার্যত কিছুই হয় নি।মাঝে থেকে সেই মাদ্রাসাটি বর্তমানে মহিরূহে পরিণত হয়েছে।সরকার প্রোষিত শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যেই তৈরি হচ্ছে প্রণয় সন্ত্রাসী-জঙ্গি।ভারতকে ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে যারাই নপুংসক করে রাখুক না কেন,কোনো ভুল আইন দীর্ঘদিন যাবৎ চলে আসলেও সেটা সত্য হতে পারে না।ভারতীয়ত্ব বিহীন সরকারি মনোভাবের জন্যই প্রণয় সন্ত্রাস বিস্তার ও প্রসার লাভ করেছে।কাশ্মীরকে যে আইন বলে মূল ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছিল,তা যদি এক লহমায় বাতিল করা যায়,তবে ভারতকে ধর্ম নিরপেক্ষ-র পরিবর্তে হিন্দু রাষ্ট্র করা কঠিন কিছু নয়।যেখানে সংবিধান রচনাকালেই ভারত ধর্ম নিরপেক্ষ ছিল না।বর্তমান রাষ্ট্রবাদী ভারত সরকারের কাছে আপামর হিন্দুরা দাবী করছে অবিলম্বে সংবিধান সংশোধন করে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করা হোক।
প্রণয় সন্ত্রাস থেকে উত্তরণ কীভাবে সম্ভব ?
যে-কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন আন্তরিক আগ্রহ ও ইতিবাচক প্রচেষ্টা।প্রণয় সন্ত্রাস বিস্তার লাভের মূল রাস্তাগুলি প্রথমেই সমূলে উৎপাটন করা।অতীতের ভুল থেকে যদি আমরা শিক্ষা লাভ করে থাকি,তাহলে আমাদের আশু প্রয়োজন মানি-মেন্টাল এবং শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধন।বিদেশী অর্থ আসার সবকটি পথ একযোগে কঠোর ভাবে বন্ধ করতে হবে।যে-আইনি ব্যবস্থা এত কিছু দেখার পরও নীরব দর্শকের ভূমিকায় থেকেছে সেটা পাল্টাতে হবে।প্রয়োজন কঠোরতম আইন প্রণয়ন।সেই আইনের আরও কঠোরতম ভাবে প্রয়োগ করা।যাতে প্রণয় সন্ত্রাসের কথা চিন্তা করলেও সন্ত্রাসী ভয়েই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবে।
সরকারি খরচে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা মাদ্রাসা চালানো যাবে না।হিন্দুদের প্রদেয় করে হিন্দুদের নিধনকারীদের হিন্দু নিধনের শিক্ষা দেওয়া যাবে না।যে-আইন ধর্ম নিরপেক্ষতার মুখোশ পরে হিন্দু নিপীড়ন,হিন্দুদের হত্যার জন্য মদত দেয়,ভারতকে হিন্দু শূন্য করতে চায়,সে-আইন স্রোতসিনী গঙ্গায় বিসর্জন দিতে হবে।
বিদ্যালয়,মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে ভারতীয় ঐতির্য-আদর্শ-গৌরবগাথা-শৌর্যবির্যের কথা পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।প্রকৃত ভারতাত্মা-ভারতপ্রেমী ব্যক্তিদের যোগ্যতা অনুসারে শিক্ষক-শিক্ষিকা পদে নিয়োগ দিতে হবে।যাঁরা কোমলমতী পড়ুয়াদের সনাতনী ভারতের গৌরবগাথা শোনাতে ও বোঝাতে পারবেন।এই ভাবে ছোটবেলা থেকেই ভারতীয় সন্তানরা সংস্কারিত মন নিয়ে বড়ো হয়ে উঠবে।
প্রণয় সন্ত্রাসের কুফল,বিভৎসতা নিয়ে হিন্দু অভিভাবকদেরও সচেতন ও সজাগ থাকতে হবে।প্রতিদিন সন্তানের প্রতি স্নেহমিশ্রিত দৃষ্টি রাখুন।কর্ম ব্যস্ততায় প্রতিদিন সম্ভব না-হলেও সপ্তাহে অন্তত একদিন তার সাথে বন্ধুর মতন মিশুন।কিন্তু লক্ষ্য রাখুন প্রতিদিন।সন্তানের কথার মধ্যে বিধর্মী বা অ-সনাতনী কোনো শব্দের অনুপ্রবেশ ঘটছে কিনা খেয়াল রাখুন।বিভাষার টানে কথা বলছে কিনা,শব্দের নাকে উচ্চারণ,দ্রূত উচ্চারণ,অস্বাভাবিক আচরণ করছে কিনা ইত্যাদি সব কিছুর প্রতিই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে।মোট কথা সন্তানের মধ্যে স্বাভাবিক আচরণের বাইরে কিছু দেখলেই সচেতন হোন।
সেই সাথে সম্ভব হলে হিন্দু বীরত্বগাথা সন্তানদের শোনান।রামায়ন-মহাভারতের গল্প করুন তাদের সঙ্গে।পারলে মহাকাব্যগুলি কিনে দিতেও পারেন।তাদের বলুন প্রতিদিন দুই পাতা হলেও পাঠ করে পিতা-মাতাকে শোনাতে।রামায়ন-মহাভারতের নারীদের কাহিনি সন্তানদের সামনে তুলে ধরুন।সীতা রাজকন্যা,রাজার পুত্রবধূ ও রাজার স্ত্রী হয়েও সারাজীবন দুঃখ সয়ে গিয়েছেন।কিম্বা সাবিত্রী স্বামীর স্বল্পায়ু জেনেও সত্যবানকে ছেড়ে যান নি।আবার দ্রৌপদী বীরজননী হয়েও কোনো বীর সন্তানকেই তিনি বুকে আগলে রাখতে পারেন নি–এই সকল আদর্শ নারীদের জীবনগাথা সব হিন্দু পিতা-মাতারাই সন্তানকে শোনান।দেখবেন তারাও ধীরে ধীরে নিজেদের গৌরবগাথা-ঐতির্য বুঝতে পারবে।অনুভব করবে।আর বিপথে যাবে না তারা।
প্রণয় সন্ত্রাস শুধুমাত্র মুসলমানরাই ঘটাচ্ছে তা কিন্তু নয়।খ্রিস্ট-বিশ্বাসীরাও ভারতকে হিন্দু শূন্য করার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে।তাদের প্রচেষ্টাও থেমে নেই।সুতরাং সন্তানদের কাছে ইসলামের রক্তাক্ত অত্যাচারের কাহিনি,খ্রিস্টানের সেবার আড়ালে হিন্দুদের ধর্মান্তরীতের কাহিনিও শোনান।
অবশেষে বলা যায় যে,হিন্দু সন্তানদের চেষ্টা করতে হবে ছদ্মবেশীদের এড়িয়ে যাবার।সোস্যাল মিডিয়ায় ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’ পাঠানো বা ‘অ্যাকসেপ্ট’ করার আগে দেখে নিতে হবে তাদের প্রোফাইল।তাদের পোস্টগুলি। চেনাজানা কোনো ‘মিউচুয়াল ফ্রেন্ড’ আছে কিনা দেখে নিতে হবে।অচেনা কোনো অ-হিন্দুর সাথে সোস্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্ব না-করাই মঙ্গলের।
মনে রাখতে হবে যে,ছদ্মবেশী বন্ধুর চেয়ে প্রত্যক্ষ শত্রুর সাথে পথ চলা অনেক নিরাপদ।
সুজিত চক্রবর্তী